id
stringlengths 1
15
| text
stringlengths 1
126k
| __index_level_0__
int64 0
10k
⌀ |
---|---|---|
194eeabe88 | দাম্পত্য কলহ মেটাতে এসে শিকল দিয়ে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে পুলিশ নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বুলারআটি গ্রামে।নিহত ব্যক্তির নাম হায়াত আলী (৪০)। তিনি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের শাহাদাত সরদারের ছেলে। তাঁর ভাই জাকাত আলী ও বেল্লাল হোসেনের ভাষ্যমতে, হায়াত আলী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বুলারআটি গ্রামের অজিয়ার সরদারের মেয়ে রনজিনা খাতুনকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। কয়েক দিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ দেখা দেয়। রনজিনার ভাই শহিদুল ইসলাম গত রোববার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল হামিদকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ডাকেন। ইউপি সদস্য হায়াত আলীকে চেয়ারের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন চালান। একপর্যায়ে তাঁর মৃত্যু হয়।সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় অজিয়ার সরদারের বাড়ি থেকে পায়ে শিকল বাঁধা, চেয়ারে বসা ও গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করে। আলীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হামিদ দাবি করেন, হায়াত আলীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে। তাঁর ধারণা, হায়াত আত্মহত্যা করেছেন। নিহত ব্যক্তির বাবা আবদুল হামিদ, শহীদুল ইসলাম ও আবুল কাশেম নামের তিনজনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় হত্যার অভিযোগ দিয়েছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজাহান খান জানান, সোমবার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হায়াতের বাবার দেওয়া অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে। | null |
36c9836574 | নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় মারা গেলেন ৫২ জন শ্রমিক। সাম্প্রতিক অগ্নিদুর্ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, দাহ্য পদার্থ ও রাসায়নিকের কারণে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। আবার দুর্ঘটনার পর বেরিয়ে আসছে অবহেলা ও অনিয়মের চিত্র। এই পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সক্ষমতা, বিস্ফোরক পরিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়দায়িত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেনসাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম।
প্রথম আলো: নারায়ণগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুন নেভাতে এত সময় কেন লাগল? কারখানার ভেতরের ব্যবস্থাপনা, নাকি ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতার ঘাটতি?
শাহিদউল্লাহ: ফায়ার সার্ভিস দ্রুততম সময়েই কাজ শুরু করেছিল। আগুন নেভানোর দুটো ধাপ—নিয়ন্ত্রণ ও নেভানো। নিয়ন্ত্রণ যত আগে করা যায়, প্রাণহানি তত কমানো সম্ভব। আগুন নেভাতে কত সময় লাগবে, তা অনেকটা নির্ভর করে ভেতরে কী পরিমাণ দাহ্য পদার্থ আছে, তার ওপর। যেমন পাটের গুদামে আগুন লাগলে তা কয়েক দিন ধরে জ্বলতে থাকে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ঘটনাস্থলে যদি দাহ্য পদার্থ বেশি থাকে, তাহলে বাইরের দিকে আগুন নিভে গেলেও ভেতরে-ভেতরে থেকে যায়। সেখান থেকে আবার আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাটের গুদামে আগুন লাগলে প্রয়োজনে পাশের ভবনের দেয়াল ভেঙে পাটগুলো সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হয়। হাসেম ফুডসের ঘটনাতেও দেখুন, এক তলার গুদামে প্রচুর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, কাগজ বা মোড়কজাতকরণের উপকরণ মজুত ছিল। এমন হতে পারে যে ফায়ার সার্ভিস মনে করেছে আগুন নিভে গেছে, আসলে ভেতরে-ভেতরে জ্বলছে। এমন কয়েকবার হতে পারে। সব মিলিয়ে পুরোপুরি নেভাতে সময় লেগেছে। তবে নিয়ন্ত্রণ কিন্তু আগেই হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষের করণীয় কিছু আছে কি?
শাহিদউল্লাহ: রাজধানীর বাইরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অনেক সময় নির্ভর করে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের দূরত্বের ওপর। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এ সময়ের মধ্যে কী হবে? এর উত্তর হলো, কারখানা কর্তৃপক্ষের নিজেদেরই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেটা শুধু মানবিক নয়, আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। আইনে বলা আছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কারখানায় থাকতে হবে। যখনই কোনো কারখানায় কর্মচারীর সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হবে, বাধ্যতামূলকভাবে তাদের সেফটি (নিরাপত্তা) কমিটি থাকতে হবে। শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির আকার ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। এ বিষয়গুলো শ্রম আইনে খুব ভালোভাবে উল্লেখ করা আছে। সেফটি কমিটির সদস্যদের অর্ধেক হবেন কারখানা মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, বাকি অর্ধেক শ্রমিকপক্ষে। কমিটির কাজ হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আগুন নেভানো ও উদ্ধারের জন্য কারখানার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৬ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আগুন নেভানোর কর্মী, ৬ জন উদ্ধারকর্মী এবং ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দাতা হিসেবে তৈরি করতে হবে। প্রতিটি কারখানায় অগ্নি নির্বাপণকর্মীদের দায়িত্ব হলো প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করা। কারখানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো কারখানার ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা। ঝুঁকির ওপর নির্ভর করবে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুতি কী হতে পারে।
হাসেম ফুডসের কারখানায় দাহ্য পদার্থ ছিল। সাম্প্রতিক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দাহ্য ও অতিদাহ্য রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কি এসব রাসায়নিকের আগুন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে?
শাহিদউল্লাহ: হাসেম ফুডস একটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদনকারী কারখানা। এই কারখানায় প্রচুর দাহ্য তরল ছিল। ভোজ্যতেল ও ডালডা সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়েছে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ধরনের ফোম প্রয়োজন, যা ফায়ার সার্ভিসের কাছে আছে। ২০১০ সালে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের সময় তা ছিল না। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের এখন বিশেষ অগ্নিনির্বাপণ যানও আছে। তবে সীমাবদ্ধতা হলো, এই যান সব জায়গায় পাঠানো সম্ভব হয় না। কারণ, রাস্তা সরু থাকে। আগুন লাগলে আগে দেখতে হয় সেখানে কোন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে, তা বুঝে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও অগ্নিনির্বাপণ যান পাঠানো হয়।
বেশির ভাগ শিল্পকারখানা ঢাকা মহানগরের বাইরে অবস্থিত। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং আধুনিক ও উন্নত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলোর অধিকাংশ থাকে রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে।
শাহিদউল্লাহ: কয়েক বছর আগে আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার পর ঢাকা থেকে সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছিল। তখন থেকেই ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছিল। কথা হচ্ছে, আমরা রাজধানীকে বেশি সুরক্ষা দেব, না গাজীপুরের একটি কারখানাকে? দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে রাজধানী অগ্রাধিকার পাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অগ্নিনির্বাপণ বিশেষ যান জেলা শহরগুলোর মধ্যে কোথাও কোথাও দেওয়া হচ্ছে। তবে সেটা নির্ভর করছে, সেখানে কতগুলো শিল্পকারখানা আছে, তার ওপর। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অগ্নিনির্বাপণের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা আছে। মানে হলো, পরিকল্পিত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেই অব্যবস্থাপনার সুযোগ বেশি তৈরি হয়।
অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেই অব্যবস্থাপনার সুযোগ বেশি তৈরি হয়।
আইনে বলা আছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কারখানায় থাকতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে প্রয়োজন অনেক বেশি।
অর্থ দিয়ে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না করা না যায়, তা তদারকির দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের।
ঢাকার বাইরে প্রচুর বড় শিল্পকারখানা তৈরি হচ্ছে। সেগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা কী?
শাহিদউল্লাহ: যত্রতত্র শিল্পকারখানা যাতে গড়ে না ওঠে, সে জন্য সরকার চেষ্টা করে। কিন্তু বাস্তবে আসলে সবকিছু করা সম্ভব হয় না। এ নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণহানির ঘটনা বাড়ে। দেখতে হবে, কারখানা ও ভবনের অনুমতি কারা দিচ্ছে। স্বীকার করতে হবে, ফায়ার সার্ভিসের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে প্রয়োজন অনেক বেশি। সম্পদের অপ্রতুলতাও একটা বাধা।
দাহ্য রাসায়নিক আমদানির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেখা গেছে, অবৈধভাবে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। পরিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে কী বলবেন?
শাহিদউল্লাহ: যখন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তখন তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। কোথায় কতটা মজুত আছে, সেটা তদারকি করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের আগুনের ঘটনায় তো স্পষ্ট যে দাহ্য পদার্থ মজুতের ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা ছিল। এই পরিদপ্তর কোনোভাবেই তাদের দায় এড়াতে পারে না।
হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের আধুনিক সরঞ্জাম ও উপকরণ ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে, নাকি শুধু পানি দিয়েই নেভানোর চেষ্টা হয়েছে?
শাহিদউল্লাহ: নারায়ণগঞ্জে বিশেষ ধরনের ফোম ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, ঠিক বলতে পারব না। তবে পানির অভাব হয়নি। এটার কৃতিত্ব অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির নয়। পাশেই একটা জলাধার ছিল। সেখানে সাতটি পাম্প ব্যবহার করে পানি সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এখন বেশির ভাগ কারখানা হচ্ছে গ্রাম এলাকায়। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। এতে কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে?
শাহিদউল্লাহ: রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর তাদের ভবন নির্মাণের অনুমতির বিষয়টি যাচাই করতে গিয়ে আমরা হতবাক হয়েছিলাম। তারা অনুমোদন নিয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, এখন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভবনের পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে সেখানে শিল্পকারখানা বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। এটা যে কত বড় হঠকারিতা, তা বলে বোঝানো যাবে না। ইউনিয়ন পরিষদে কোনো স্থপতি বা প্রকৌশলী আছেন? তাহলে কিসের ভিত্তিতে পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে? তাদের কি অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা আছে? এখানে স্থানীয় সরকার ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আরেক দ্বন্দ্ব রয়েছে। রাজউক ও সিটি করপোরেশন—দুটি সংস্থারই পরিকল্পনা পাস করানোর ক্ষমতা আছে। বিষয়টি বহুবার আলোচনায় এলেও সমাধান হয়নি।
শ্রমিকের পেশাগত ঝুঁকির বিষয়টি দেখার দায়িত্ব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। তারা কি কোনো ভূমিকা রাখছে?
শাহিদউল্লাহ: শুধু দায়িত্বই নয়, এই অধিদপ্তর ফায়ার সার্ভিসকেও নির্দেশনা দিতে পারে। ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালায় কী কী বিষয় দেখতে হবে তার ‘চেক লিস্ট’ দেওয়া আছে। তারা কেমন দায়িত্ব পালন করছে, সেটা তো একের পর এক দুর্ঘটনার ধরনগুলো থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
আগুনের ঘটনায় মৃত্যুর পর দেখা যায়, শ্রমিকেরা বের হতে না পারায় মৃত্যু বেশি হয়। অনেক সময় অভিযোগ ওঠে গেট বন্ধ থাকার। এ বিষয়ে কী বলবেন?
শাহিদউল্লাহ: তাজরীন গার্মেন্টসে আগুনের ঘটনার পর জানা গিয়েছিল যে কলাপসিবল গেটে তালা ছিল। এটা অপরাধ। এখনো যদি কারখানার গেটে তালা মেরে রাখা হয়, তার দায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কোনোভাবে এড়াতে পারে না। এটা দেখার দায়িত্ব এই অধিদপ্তরের। তাজরীনের ঘটনার পর বিষয়টি নিশ্চিত করতে কর্মসূচি চালানো হয়েছে। তদন্তে যদি প্রমাণ হয় হাসেম ফুডসের গেটও তালাবদ্ধ ছিল, তার দায় মালিকপক্ষকে নিতে হবে। এমনকি যদি সেফটি কমিটি না থেকে থাকে, তাহলেও জবাব দিতে হবে। আমাদের আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই।
ন্যাশনাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেলথ অ্যান্ড সেফটি কাউন্সিল তাদের ভূমিকা কতটা পালন করেছে?
শাহিদউল্লাহ: সরকার, মালিক সমিতি আর শ্রমিক—এই তিন পক্ষের সমন্বয়ে এই কাউন্সিল গঠিত। গত এক বছর এই কাউন্সিলের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে প্রতি তিন মাস পরপর বৈঠক হওয়ার কথা। এক বছর আগেও নিয়মিত বৈঠক হতো। তবে এর মধ্যে একটা কাজ হয়েছে, শিল্প কারখানার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি-২০১৩ তৈরি করেছে এই কাউন্সিল। তবে এ নিয়ে কোনো কর্মপরিকল্পনা হয়নি। এটাই বড় দুর্বলতা।
এখানে শ্রমিকদের ভূমিকা কতখানি?
শাহিদউল্লাহ: কাউন্সিলের সদস্যদের তিন ভাগের এক ভাগই শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি। তাঁরা বিভিন্ন কারণে আন্দোলন করেন। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য কখনো তাঁদের দাবি দেখিনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কলাপসিবল গেটে তালা লাগানোর বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন করতে দেখিনি।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কারখানার মালিকপক্ষ প্রভাবশালী। সে ক্ষেত্রে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে তদন্ত করা ও প্রতিবেদন প্রকাশের উপায় কী?
শাহিদউল্লাহ: ক্ষমতাবান হতে পারেন আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে। তাঁরা অর্থ দিয়ে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না করতে পারেন, সেটা তদারকির দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের। প্রশাসন পুরো ব্যাপারটি নজরে রাখবে। স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয় কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সরাসরি দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে কোনোভাবেই প্রভাব খাটানো সম্ভব হবে না। দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। এটা অপ্রকাশিত থাকে বলে অনেক কিছুই আর সামনে আসে না।
প্রথম আলো: হতাহত শ্রমিকেরা ক্ষতিপূরণ ঠিকভাবে পান না। এ দায় কে নেবে?
শাহিদউল্লাহ:ক্ষতিপূরণের তালিকা করে তিন পক্ষ মিলে—সরকার, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠন। কোনো বিচ্যুতি হলে সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও জানতে চাইতে পারে। তাদের এ দায়িত্ব রয়েছে। এখানে গণমাধ্যমেরও বড় ভূমিকা আছে। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে শুরু করে সবকিছুই যদি তারা পর্যবেক্ষণে রাখে এবং প্রকাশ করে, তাহলে সংস্থা ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জবাবদিহির মধ্যে থাকবেন। | 2,509 |
6feaf6726d | মাতামুহুরি নদীর চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে মসজিদ, মন্দির, বিদ্যুতের খুঁটিসহ বহু স্থাপনা। আতঙ্কে দিন কাটছে দুই তীরে বসবাসকারী মানুষের।জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের সুরাজপুর, কাকারার প্রপার কাকারা, লোটনী ও মাঝেরফাঁড়ি; ফাঁসিয়াখালীর হাজিয়ান, ঘুনিয়া ও দিগর পানখালী; লক্ষ্যারচরের মণ্ডলপাড়া, জালিয়াপাড়া ও শিকলঘাট; কৈয়ারবিলের দিককুল ও খোঁজাখালী; সাহারবিলের বাটাখালী, বিএমচরের বেতুয়া বাজার, পূর্ব বড় ভেওলার আনিসপাড়া, কোনাখালীর মরংঘোনা, পুরইত্যাখালী ও কইন্যারকুম; চিরিঙ্গার সওদাগর ঘোনা ও মাছঘাট এবং চকরিয়া পৌরসভার কাজিরপাড়া, আমানপাড়া, আবদুল বারীপাড়া, চরপাড়া, নামার চিরিঙ্গা ও কোচপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের দিন কাটছে আতঙ্কে।সরেজমিনে দেখা যায়, ফাঁসিয়াখালীর দিগর পানখালী এলাকায় মাতামুহুরি ভাঙন বেশি। চলতি বর্ষায় এখানকার তিনটি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশের ক্ষেত্রপাল মন্দিরের গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় মন্দিরটিও ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা চঞ্চলা বালা (৫২) বলেন, ‘নদীর কূল ঘেঁষে ৩০ শতক ফসলি জমি ছিল। মাতামুহুরি ওই জমি গিলে খেয়েছে। এখন বন্যায় বসতভিটার অর্ধেক নদীতে তলিয়ে গেছে। অবশিষ্ট অংশ রক্ষা করা যাবে কি না, সৃষ্টিকর্তাই জানেন।’দিগর পানখালী ক্ষেত্রপাল মন্দিরের কর্মকর্তা শিবু ধর বলেন, ‘মন্দিরটি শত বছরের পুরোনো। ভাঙতে ভাঙতে মাতামুহুরি নদী এখন মন্দিরের পাশেই চলে এসেছে। চলতি বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় মন্দিরের গোড়া থেকে মাটি সেও গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মন্দিরটি বিলীন হয়ে যাবে।’মাতামুহুরি নদীর ভাঙনে কৈয়ারবিলের দিককুল গ্রাম থেকে উচ্ছেদ হয়ে ইসলামনগরের পাহাড়ে বসবাস করছেন জাহান আলী (৩৬)। তিনি বলেন, ‘২০১২ সালের বন্যায় বসতঘর বিলীন হয়েছে নদীতে। পরে পরিবার পরিজন নিয়ে টং তৈরি করে পাহাড়ে বসবাস করছি।’ তাঁর মতো অনেকে বসতঘর হারিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর ও পাহাড়ি এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছে।সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, ‘লামা ও আলীকদমের পাহাড়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও অপরিকল্পিতভাবে বারুদের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর আহরণের কারণে উজান থেকে প্রতি বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামে। এ ঢলের সঙ্গে নেমে আসা পলি জমে নদীর একাধিক পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। নদীর নাব্যতা হারিয়ে ফেলার কারণে শুরু হয় নদী ভাঙন।’লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার বলেন, ‘মাতামুহুরির ভাঙনে বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৩ হাজার ভোল্টের একটি খুঁটি চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। বিদ্যুতের এই খুঁটিটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পড়লে উপজেলায় বিদ্যুতের সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন হবে।’বিএমচর ইউপির চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিএমচরের বেতুয়া বাজার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। বাজারের মসজিদটি যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যাবে।কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক জানান, মরংঘোনা এলাকার ৩০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। দুই বর্ষায় অন্তত ২০ বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে।এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম বলেন, ‘মাতামুহুরি নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতি বর্ষায় মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। গত ১০ বছরে অন্তত ২০ হাজার মানুষ নদীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি পানিসম্পদ মন্ত্রীকে মাতামুহুরি নদীর ভাঙন এলাকা ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। তিনি দ্রুত কয়েকটি প্রকল্পের আওতায় তীর সংরক্ষণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’জানতে চাইলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, ‘কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনার ৩০০ মিটার ওই বেড়িবাঁধসহ কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন ফোল্ডারের অধীন ৩৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’ | null |
1906a75d52 | গেমসের অষ্টম দিনে বাংলাদেশকে শ্যুটিংই যা সাফল্য দিয়েছে। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল থেকে দুটি পদক জিতেছে বাংলাদেশ। শোভন চৌধুরী ব্যক্তিগত রুপা জয়ের পাশাপাশি আবদুল্লাহ হেল বাকি ও অঞ্জন সিংহকে নিয়ে জিতিয়েছেন দলগত রুপাও। ছেলেদের ২৫ মিটার স্ট্যান্ডার্ড পিস্তলে শেখ শাহাদাত আহমেদ নবম হয়ে বাছাইয়ে বাদ পড়েন। এই ইভেন্টে ১১তম ও ১২তম হয়েছেন মোকসেদুর রহমান ও মহেন্দ্র কুমার সিংহ।দিনের শেষ ভাগে এসে ব্রোঞ্জ জিতেছে হকি দল। কাল ভেতাপুরার মওলানা তায়েবুল্লাহ স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। গোল করেছেন আশরাফুল, মিমো, কৃষ্ণ ও খোরশেদ। হ্যান্ডবল পুরুষ দল ১৭-৪০ গোলে হেরে গেছে ভারতের কাছে। কাবাডিতে ব্যর্থতা পিছু ছাড়ছে না। পুরুষ দল কাল পাকিস্তানের কাছে হেরে গেছে ২৩-১৬ পয়েন্টে। | null |
534b47675a | গোলাম মুরশিদ, লেখক, অধ্যাপক, গবেষক। অধ্যাপনা করেছেন কৃষি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেছেন। বিবিসির সঙ্গে ছিলেন ১৯ বছর। বর্তমানে বাংলা একাডেমীতে যৌথভাবে করছেন বাংলা বিবর্তনমূলক অভিধান -এর কাজ। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই সহ পেয়েছেন নানা পুরস্কার।ইতিহাসের বইয়ে বেশি আগ্রহবর্তমানে পড়ছি ডা. নুরুন নবীর লেখা বুলেটস অব ৭১ বইটি। প্রচলিত ইতিহাসের বইগুলো থেকে এ বইটির পার্থক্য হচ্ছে, লেখক এখানে শুনে কোনো গল্প লেখেননি। তিনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁর নিজের ঘটনা আর অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন এবং দ্বিতীয়ত বইটি পণ্ডিতি ইংরেজিতে লেখা নয়। এ ছাড়া পড়েছি সুধীর চক্রবর্তীর সম্পাদনা করা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা একটি বই, যার রিভিউ বের হয়েছে দেশ পত্রিকায়।বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে আগ্রহী আমার বিষয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য। প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে আশার ছলনে ভুলি, হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতি, বাংলা গদ্য নিয়ে লেখা দুটি বইকালান্তরে বাংলা গদ্য ও আঠারো শতকের গদ্য। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখেছি মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর, যখন পলাতক, স্বাধীনতাসংগ্রামের সাংস্কৃতিক পটভূমি। আমি বিচিত্র বিষয়ে লিখতে আগ্রহী।নারীবাদ নিয়ে লিখেছি। প্রথম সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্ইটির নাম রিলাকটেন্ট ডেবিউট্যান্ট। এখানে আমি দেখিয়েছি নারীরা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রাসসুন্দরী থেকে রোকেয়া, নারী প্রগতির একশ বছর, নারী ধর্ম ইত্যাদি। এগুলো লিখতে গিয়ে গবেষণা করতে হয়েছে, মেয়েদের সম্পর্কে বই পড়তে হয়েছে। কারণ, একটা জিনিস লিখতে গেলে তার প্রস্তুতিতে অনেক কিছু পড়তে হয়।গান মনের ব্যাপার প্রধানত রবীন্দ্রসংগীত শুনি। কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, দেবব্রত বিশ্বাস, হেমন্ত থেকে শুরু করে শুনতে ভালো লাগে আধুনিক শিল্পী, যাঁদের গানের মধ্যে নতুনত্ব আছে। এ ছাড়া পল্লিগীতি, বাউল, কীর্তন, ভাওয়াইয়া গান শুনি। বিবিসির জন্য নজরুলের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটা অনুষ্ঠান করেছিলাম। তখন আড়াই শ ঘণ্টা নজরুলগীতি শুনেছি। সেই যে তখন থেকে নজরুলের গানের প্রতি ভালো লাগাটা, তা এখনো রয়ে গেছে।গানসম্পর্কিত ব্ই ভালো লাগে। বাংলা গান নিয়ে লিখেছি অনেক। গান নিয়ে পড়াশোনা করি।সত্যজিৎ বড় মাপের শিল্পী তারেক মাসুদের মাটির ময়নার পর শেষ দেখেছি হুমায়ূন আহমেদের চন্দ্রকথা। খুব পছন্দ করি সত্যজিৎ রায়ের ছবি। তিনি যখন নষ্টনীড় তৈরি করেছেন, তখন সিনেমাটা আর নষ্টনীড় রাখেননি, পরিণত করেছেন চারুলতাতে। এ ছাড়া অপর্ণা সেনের মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার এবং মীরা নায়ারের মুনসুন ওয়েডিং দেখে ভালো লেগেছে।সাক্ষাৎকার গ্রহণ: রুহিনা ফেরদৌস | null |
2ee58eafa0 | প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা: বিশেষ প্রস্তুতি-৩৩বই বহির্ভূত প্যাসেজ অংশ-২
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ ইংরেজি বিষয় থেকে পাঠ্যবই বহির্ভূত প্যাসেজ ও প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।1. Choose the right answer (Competency based).d. When did Tanin go to the zoo?i. on holiday ii. during summeriii. during winter iv. during autumne. What made them scared?i. some animals ii. camels iii. snakes iv. crocodilesf. Tanin’s uncle forbade them to go near the tigers. Because they are —(i) calm (ii) nocturnal (iii) ferocious (iv) sickg. Where was the ape?(i) in a house (ii) in a cave (iii) in a forest (iv) in a zooh. Where were the birds?(i) in the cage (ii) in the jungle (iii) in the tree (iv) in the foresti. What is the plural form of deer?(i) deers (ii) deer (iii) deerses (iv) dersesj. What is the past form of ‘give’?(i) gave (ii) given (iii) geve (iv) gives
Answer to the question no-1:(a) - (iii) school boy (b) - (iii) in a zoo(c) - (i) big (d) - (i) on holiday(e) - (i) some animals (f) - (iii) ferocious(g) - (iv) in a zoo (h) - (i) in the cage(i) - (ii) deer (j) - (i) gave2. Fill in the blanks with the words from the list below. There are more words.looked—letter—later—mongoose—noise—about—round—mole—mule—well—Mirpur—went(a) Mr. Masud took Tanin as — as some of his friends to the zoo.(b) The Royal Bengal Tiger — at them.(c) Tanin asked — the animal as he was unsure about it.(d) They went — the zoo for a long time.(e) Birds were making a lot of —.(f) Tanin’s uncle took him and his friends to the — Zoo.(g) The name of the animal started with the — ‘M’.(h) He knows that a — lives underground.(i) ‘That’s a —, said his uncle.(j) They — round the zoo for a long time.
Answer to the question no-2:(a) well, (b) looked, (c) about, (d) round, (e) noise,(f) Mirpur, (g) letter, (h) mole, (i) mongoose, (j) went3. Answer the questions.(a) Why did Tanin’s uncle tell them not to go near the cages?(b) What was the ape doing?(c) Who were making a lot of noise in the zoo?(d) Why were they become tired?(e) What was the Royal Bengal Tiger doing in the cage?(f) When did Tanin’s school have a holiday?(g) Which animal did they see after the Royal Bengal Tiger?
Answer to the question no-3:(a) He told them not to go near the cages as some animals might hurt them.(b) It was jumping from bar to bar in the cage.(c) The birds were making a lot of noise.(d) They became tired as they went round the zoo for a long time.(e) It was walking.(f) As it was winter, Tanin’s school had a holiday.(g) After the Royal Bengal Tiger they saw an ape.
শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা | null |
49a3de9263 | ‘বাংলাদেশে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যার ইতিহাস জানার পর দেশটির মানুষদের প্রতি আমার সহানুভূতি অনেকগুণ বেড়ে গেছে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাঁদের যেতে হয়েছে, সে জন্য অবশ্যই দেশটি শান্তি, ঐক্য ও উন্নতির দাবিদার।’ সম্প্রতি এভাবেই বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের নাতনি অভিনেত্রী রাইমা সেন।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ ছবির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের অভিনেত্রী রাইমা সেন।ছবিতে তিনি একজন সাংবাদিকের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চরিত্রটির নাম ফিদা। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।১৯৭১ সালে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের যেতে হয়েছিল ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ ছবিতে সেই চিত্র তুলে ধরেছেন নির্মাতা মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত।
এ ছবিতে যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার এক নারীর চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে রাইমা বলেন, ‘ওই সময়ে বাংলাদেশের মানুষদের যে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল, তার একটি চিত্র আমরা তুলে ধরতে চেয়েছি এই ছবিতে। এখন পর্যন্ত বড় পর্দায় অনেক ধরনের চরিত্রেই আমি অভিনয় করেছি। কিন্তু ফিদা চরিত্রটি সেগুলো থেকে একেবারেই আলাদা। চরিত্রটির মধ্য দিয়ে নারীশক্তিকে খুব ভালোভাবে তুলে ধরার সুযোগ আমি পেয়েছি। নিঃসন্দেহে আমার অভিনীত সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র এটি।’রাইমা আরও বলেন, ‘একজন পেশাদার অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমার ব্যক্তিগত জীবনে হয়তো চরিত্রটি খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু ছবির শুটিংয়ের সময় বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অদ্ভুত এক ধরনের মমতা অনুভব করেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ছবিটি দেখার পর দর্শকদের মধ্যেও একই ধরনের অনুভূতির জন্ম হবে।’ফিদা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় অনেক সাহায্য করেছেন বলেও জানিয়েছেন রাইমা। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘মৃত্যুঞ্জয় স্বপ্নচারী একজন মানুষ। ছবি নির্মাণের জন্য নির্মাতার এ গুণটি থাকা খুব জরুরি। ছবিতে অভিনয়ের আগে প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীকে নিজ নিজ চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছেন মৃত্যুঞ্জয়। ছবিতে গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার জন্য তিনি বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চালিয়েছিলেন। তিনি খুব ভালোভাবে আমাদের চরিত্র বুঝিয়ে দেওয়ায় চরিত্রকে বাস্তবসম্মতভাবে ফুটিয়ে তুলতে আমাদের মোটেও বেগ পেতে হয়নি। আমি কেবল পরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করেছি।’
বৈচিত্র্যময় নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা জানাতে গিয়ে রাইমা বলেন, ‘সব রকম ছবিতেই আমি অভিনয় করতে চাই। এমনকি পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে ‘‘গ্ল্যামার গার্ল’’রূপে আবির্ভূত হতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি চাই, ভক্তরা আমাকে বৈচিত্র্যময় নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখুক। ভিন্নধর্মী নানা চরিত্রে অভিনয় করে তাঁদের প্রশংসা কুড়াতে চাই আমি। আমার মতে, একজন অভিনয়শিল্পীর অভিনয়ের ক্ষেত্রে গিরগিটির মতো রং পাল্টানোর ক্ষমতা থাকা উচিত।’এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ ছবিতেই পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে আদর্শ ভারতীয় নারী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী মুনমুন সেনের মেয়ে রাইমা সেন। তবে ব্যক্তিগত জীবনে সংক্ষিপ্ত কালো রঙের পোশাক পরতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে জানিয়েছেন রাইমা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে ধরনের পোশাক পরে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, তেমন পোশাকই পরার চেষ্টা করি আমি। পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবারই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। আমারও আছে। সংক্ষিপ্ত কালো রঙের পোশাক পরতেই আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি।’বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত হয়েছে বলিউডের ছবি ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’। শুরুতে এর নাম ‘দ্য বাস্টার্ড চাইল্ড’ রাখা হলেও সেন্সর জটিলতার কারণে পরে নাম পাল্টে ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ রাখেন নির্মাতা মৃত্যুঞ্জয়। ১৯৭১ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভয়াবহ গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এ ছাড়া যুদ্ধ চলাকালে বহু নারী ধর্ষণের শিকার হন, যাঁরা অসংখ্য যুদ্ধ-শিশুর জন্ম দেন। ছবিতে এ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইমা সেন, তিলোত্তমা সোম, পবন মালহোত্রা, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, ভিক্টর ব্যানার্জি, প্রয়াত ফারুখ শেখ প্রমুখ।‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ ছবি সম্পর্কে মৃত্যুঞ্জয়ের ভাষ্য, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা নিয়ে প্রচুর ছবি নির্মিত হয়েছে হলিউডে। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব একটা আলোচনা হয়নি। ১৯৭১ সালে গণহত্যার পাশাপাশি ধর্ষণ ও ধর্মকে যে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল, তা-ই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমার ছবিতে। আমার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশে। এ ছবি বাংলাদেশের জন্য আমার পক্ষ থেকে একটা ছোট্ট উপহার।’১৯৯৯ সালে বলিউডের ‘গডমাদার’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রাইমার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেত্রী শাবানা আজমি। পরবর্তী সময়ে হিন্দি, তেলেগু, মালয়লাম এবং বাংলা ভাষায় নির্মিত বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী রাইমা। সামনে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তাঁর অভিনীত বাংলা ছবি ‘কলকাতা কলিং’। ছবিটিতে রাইমা ছাড়াও অভিনয় করেছেন তাঁর ছোট বোন বলিউডের অভিনেত্রী রিয়া সেন এবং মা মুনমুন সেন। | null |
ID_3086 | রোনালদো
রোনালদো (; জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৬) ব্রাজিলের ফুটবল তারকা। তিনি একজন খ্যাতিমান স্ট্রাইকার। তার পুরো নাম - "রোনাল্দো লুইস নাজারিও ডি লিমা"। সচরাচর তিনি রোনাল্দো নামে পরিচিত। ব্রাজিলীয় ফুটবলার হিসেবে করিন্থিয়াসের পক্ষ হয়ে ২০১১ সালে খেলে অবসর গ্রহণ করেন। ‘’৯০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০০০-এর দশকের প্রথমার্ধে বিশ্বের অন্যতম দক্ষ গোলদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তিনি মাত্র ২১ বৎসর বয়সে ১৯৯৭ সালে ইউরোপিয়ান ফুটবলার হিসেবে ফিফা বালোঁ দ’অর এবং ২৬ বৎসর বয়সে ২০০২ সালে পুণরায় এই খেতাব অর্জন করেন। উপরন্তু, তিনি দু’জন ব্যক্তির মধ্যে একজন হিসেবে ফিফা’র বর্ষসেরা খেলোয়াড় হিসেবে তিনবার মনোনিত হন (অন্যজন হলেন ফরাসী ফুটবলার জিনেদিন জিদান)। ২০০৭ সালে রোনাল্দো ফরাসী ফুটবলে সর্বকালের সেরা একাদশের একজন হিসেবে স্থান পান এবং পেলে’র উত্তরসূরী হিসেবে ফিফা’র ১০০জন সেরা খেলোয়াড়ের একজন হিসেবে মনোনিত হন। ২০১০ সালে তিনি গোল.কম-এর অনলাইন ভোটের ৪৩.৬৩% ভোট পেয়ে ’প্লেয়ার অব দ্য ডিকেড’সহ সেন্টার ফরোয়ার্ডের ‘টিম অব দ্য ডিকেড’ সম্মাননা পান। ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০১০ তারিখে রোনাল্ডো ঘোষণা করেন যে দু’বছর চু্ক্তির বর্ধিতাংশ হিসেবে করিন্থিয়াসের খেলোয়াড় হিসেবে ২০১১ মৌসুমে ফুটবল জগৎ থেকে অবসর নিবেন। তিনি বিশ্বব্যাপী ফুটবল বোদ্ধা ও সমর্থকদের কাছে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে চিহ্নিত।
রোনাল্ডো ব্রাজিলের পক্ষে ৯৭টি আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে ৬২টি গোল করেন। তিনি ১৯৯৪ ও ২০০২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল জয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ২০০৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলে রোনাল্ডো ১৫তম গোল করে জার্মানীর গার্ড মুলারের ১৪ গোলের রেকর্ড ভঙ্গ করে বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।
ক্লাব পর্যায়ে.
১৯৯৩: ক্রুজিরো.
১৯৯৩ সালে রোনাল্দো ক্রুজিরো দলে যোগদান করে ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়েন ও দলটিকে সফলতম দলের পর্যায়ে নিয়ে যান। কোপা ডো ব্রাজিল চ্যাম্পিয়নশীপে ১৪ খেলায় ১২ গোল করে ১মবারের মতো দলটিকে শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত করান। স্মরণযোগ্য যে, শৈশবে তার প্রিয় দল হিসেবে ফ্লেমিঙ্গোতে যেতে চাইলে ব্রাজিলীয় বিশ্বকাপের অন্যতম প্রতিভা জারজিনহো রোনাল্দো’র প্রতিভা দেখে বিস্মিত হন এবং ক্রোজিরোতে চলে যেতে সাহায্য করেন।
১৯৯৪-১৯৯৬: পিএসভি আইণ্ডহোভেন.
১৭ বছরে বয়সী রোনাল্ডোকে ’৯৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে একটি খেলায়ও অংশ নিতে হয়নি। এর পর রোনাল্ডো পিএসভি আইণ্ডহোভেনে যোগদান করেন। ব্রাজিলীয় তারকা ফুটবলার রোমারিও’র পরামর্শে ইউরোপের ক্যারিয়ার গড়তেই মূলতঃ তিনি পিএসভি-তে যোগ দেন। ১৯৮৮-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত রোমারিও দলটিতে স্ট্রাইকার হিসেবে ছিলেন। রোনাল্দো ১ম মৌসুমে হল্যান্ডে লীগ পর্যায়ে ৩০ গোল করেন। ২য় মৌসুমে হাঁটুর আঘাতে জর্জরিত হলে বেশীরভাগ সময়ই দলের বাইরে ছিলেন। কিন্তু তিনি প্রতিটি খেলাতেই গড়ে একটির মতো গোল করেন অর্থাত ১৩ খেলায় ১২ বার বিপক্ষের গোলপোস্টে বল ঢোকান। পিএসভি’তে থাকাকালীন ১৯৯৫ সালে এরিডিভাইস সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এবং ১৯৯৬ সালে দলকে ডাচ কাপ জেতান।
১৯৯৬-১৯৯৭: বার্সিলোনা.
পিএসভি’তে থাকাকালীন অবস্থায় ইন্টার মিলান এবং বার্সিলোনা দলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। ততকালীন রেকর্ড হিসেবে ১৭ মিলিয়ন ডলারের ট্রান্সফার ফি প্রদান করে বার্সিলোনা‘র দলভূক্ত হন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে সকল স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রোনাল্দো ৪৯ খেলায় ৪৭ গোল করে সকলকে বিস্মিত করেন এবং বার্সা-কে ইউইএফএ কাপ উইনার কাপ, কোপা ডেল রে এবং সুপারকোপা ডি ইস্পানা জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন; বিশেষ করে ইউইএফএ কাপ উইনার কাপের ফাইনালে তুরুপের গোল করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৯৭ সালে ৩৭ খেলায় ৩৪ গোল করে লা লিগা’য় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।
২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত লা লিগা’য় রোনাল্দোর ৩০ গোল অক্ষুণ্ন ছিল। সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে বিশ বছর বয়সে ১৯৯৬ সালে রোনাল্দো ফিফা কর্তৃক বছরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান। এছাড়াও তিনি ব্যলুন ডি’অরের রানার-আপ হন।
১৯৯৭-২০০২: ইন্টার মিলান.
বার্সায় থাকাকালীন পুণরায় রোনাল্দো’র চুক্তিনামা নিয়ে সমস্যা হয়। রোনাল্দো অসন্তুষ্ট চিত্তে মৌসুমটি শেষ করেন এবং পরবর্তী বছরের জন্য ইন্টার মিলান কর্তৃপক্ষ ততকালীন বিশ্বরেকর্ডীয় ১৯ মিলিয়ন পাউণ্ডের বিনিময়ে কিনে নেয়। রোনাল্দো পুণরায় সর্বোতভাবে ক্লাবটিকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং এ সময়ে ইউইএফএ কাপের ফাইনালে ৩য় গোলটি করে বিজয়ী হতে সাহায্য করেন।
রোনাল্দো প্রতশ মৌসুমে ইতালীয় স্টাইলে খেলতে থাকেন এবং লীগের গোলদাতাদের মধ্যে ২য় হন। তিনি পুর্ণাঙ্গ ফরোয়ার্ড হিসেবে উন্নতির চেষ্টা চালান। তিনি প্রথম পছন্দ হিসেবে পেনাল্টি আদায়সহ ফ্রিকিকের মাধ্যমে গোলদানে সক্ষমতা অর্জন করেন এবং শেষ মৌসুমে দলনেতার ভূমিকায় আসীন হন। ইন্টারে থাকাকালীন ডার্বি ডেলা ম্যাডোনিনায় প্রবল প্রতিপক্ষ এসি মিলানের বিরুদ্ধে অনেক গোল করেন। ১৯৯৭ সালে ২য় বারের মতো ফিফা কর্তৃক বছরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান ও ব্যলন ডি’অর অর্জন করেন। পরের বছর অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের পর ফিফা ঘোষিত ২য় বারের মতো বছরের সেরা খেলোয়াড় হন এবং ৩য় বারের মতো সেরা ইউরোপিয়ান ফুটবলারের সম্মান পান। এই অর্জনগুলো তার ক্যারিয়ারসহ পরিস্কারভাবে এবং ব্যাপকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে সবাই মেনে নেয়।
নভেম্বর ২১, ১৯৯৯ সালে সিরি এ ম্যাচে লিসি’র বিরুদ্ধে খেলা চলাকালীন রোনাল্দো হাঁটুতে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন ও মাঠে গড়াগড়ি খান। ডাক্তারী পরীক্ষায় দেখা যায় তিনি হাঁটুতে ফাঁটল ধরেছে এবং অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পরে। এপ্রিল ১২, ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো মাঠে ফিরে আসেন। কিন্তু লাজি’ও বিরুদ্ধে কোপা ইটালিয়া প্রতিযোগিতার ১ম পর্বের ফাইনালে তিনি মাত্র ৭ মিনিট খেলে পুণরায় ২য় বারের মতো হাঁটুতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। দুই দুইবার অপারেশন এবং কয়েকমাস বিশ্রামে থেকে ২০০২ সালের বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরেন ও ব্রাজিলকে ৫ম বারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে সহায়তা করেন। পরে ২০০২ সালে রোনাল্দো ৩য় বারের মতো বছরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান এবং ইন্টার থেকে রিয়াল মাদ্রিদে চলে যান। ইতালীয় সংবাদপত্রে রোনাল্দো তার অন্যতম পরিচিত ডাক নাম হিসেবে ইল ফিনোমেনো নামকে পরিচিত ঘটান। টাইমস অনলাইন কর্তৃক ইন্টারের সর্বকালের সেরা ২০ জনের একজন হিসেবে মনোনীত হন এবং একমাত্র শারীরিক আঘাতই তাকে উচ্চতম আসনে উঠতে বাঁধা দেয়। তিনি নেরাজুরিতে ৯৯ খেলায় ৫৯ গোল করেন।
২০০২-২০০৭: রিয়েল মাদ্রিদ.
রোনাল্দো ৩৯ মিলিয়ন পাউণ্ডের বিনিময়ে রিয়েল মাদ্রিদের সাথে চুক্তিনামায় স্বাক্ষরের পর তার জার্সি নম্বর প্রথম দিনেই সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে। অক্টোবর, ২০০২ পর্যন্ত আঘাতের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন কিন্তু তার সমর্থকেরা তার নাম ধরে উজ্জ্বীবিত করার প্রাণান্ত চেষ্টা করে। রিয়েল মাদ্রিদের পক্ষে অভিষেকেই দু’টি গোল করেন। তিনি সান্টিয়াগো বারনেবিউ থেকে অভিবাদন গ্রহণ করেন। একই অভিবাদন গ্রহণ করেন এথলেটিক বিলবো’র বিরুদ্ধে চূড়ান্ত খেলায় গোল করে ১ম মৌসুমেই ২৩ গোল করে লা লিগা চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা লাভে সহায়তা করেন। রিয়েলে থাকাকালীন ২০০২ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ এবং ২০০৩ সালে স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে অবদান রাখেন। চ্যাম্পিয়নস লীগের ২য় পর্যায়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন ও ম্যান.ইউ-কে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় করেন। রিয়েল ২০০৩-০৪ মৌসুমে রোনাল্দো’র আঘাতের পূর্ব পর্যন্ত জয়ের ধারায় আসে ও অপ্রতিদন্দ্বী হয়ে উঠেছিল এবং কোপা ডেল রে ফাইনালে হেরে যায়, চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় ও লীগে ছন্দপতনের অধ্যায় শুরু হয়। এই মৌসুমে তিনি ২৪ গোল করে লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এবং দল ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হারলেও পিচিচি এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। রিয়েল মাদ্রিদ আর্সেনালের কাছে হেরে শেষ ষোলতে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয় ও তৃতীয়বারের মতো ট্রফিবিহীন অবস্থায় দিন কাটায়। রিয়েল মাদ্রিদে থাকাকালীন তাদের বৃহত প্রতিপক্ষ হিসেবে এটলিকো মাদ্রিদ ও বার্সোলোনার মতো দলগুলোর বিরুদ্ধে রোনাল্ডো গোল করেছিলেন। রুদ ভ্যান নিস্টেলরুইকে ২০০৬ সালে সাথে পেয়ে রোনাল্দো ইনজুরী ও ওজন বৃদ্ধির বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে দলের ম্যানেজার ফ্যাবিও ক্যাপিলো’র সহায়তায় আরো আগ্রাসী হয়ে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে তোলেন।
২০০৭-২০০৮: এসি মিলান.
১৮ জানুয়ারী, ২০০৭ তারিখে জানা যায়, রোনাল্দো এসি মিলানের সাথে ৭.৫ মিলিয়ন পাউণ্ডের বিনিময়ে দল বদল করেছেন। রোনাল্দো চুক্তির বাকী সময়ের অর্থ প্রদান করে তবেই রিয়েল মাদ্রিদ ত্যাগ করতে পারবেন। কিন্তু এসি মিলান ঐ পরিমাণ অর্থ প্রদানে প্রস্তুত ছিল না। বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৫ তারিখে রোনাল্দো মাদ্রিদ থেকে মিলানে চলে যান এসি মিলানের পক্ষে রোমা’র বিরুদ্ধে খেলার জন্য। ক্লাবের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, রোনাল্দো চিকিতসার জন্য মিলানে গিয়েছিলেন এবং রিয়েল মাদ্রিদের কর্মকর্তাদের সাথে এসি মিলানের একটি মিটিং সোমবারে অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ জানুয়ারি মিলানেলো ট্রেনিং কমপ্লেক্সে রোনাল্দো ক্লাবের ডাক্তারদের উপস্থিতিতে মেডিক্যাল টেস্ট অনুষ্ঠিত হয় ও সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন এবং দলে ৯৯নং জার্সিধারী খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭ তারিখে অনুষ্ঠিত অভিষেক ম্যাচে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন এবং ২-১ গোলে লিভোরনো দলের বিরুদ্ধে জয়ী হন। ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭ তারিখে সিয়েনায় অনুষ্ঠিত পরের খেলায় রোনাল্দো দু’টি গোল করেন এবং পরে ৩য় গোল করে ৪-৩ গোল করে শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় দলকে জয়ী করে শুভ সূচনা করেন। প্রথম মৌসুমে তিনি ১৪ খেলায় ৭ গোল করেন।
এসি মিলানে অবস্থান করায় মিলান ডার্বিতে রোনাল্দো গুটিকয়েক খেলোয়াড় হিসেবে ইন্টার মিলান ও এসি মিলান উভয় দলের পক্ষে অংশ নিয়ে দু’দলেই গোল করেন (ইন্টার মিলানে ৯৮-৯৯ মৌসুম এবং এসি মিলানে ২০০৬-০৭ মৌসুমে)। এই বিরল সৌভাগ্যে অন্যজন হলেন - লাতান ইব্রাহিমোভিক। এছাড়াও, রোনাল্দো গুটিকয়েক খেলোয়াড়ের একজন হিসাবে প্রবল প্রতিপক্ষ রিয়েল মাদ্রিদ ও বার্সোলোনার মতো দলে খেলে মাতিয়ে তোলেন। অধিকন্তু, রোনাল্দো কখনোই সরাসরি প্রতিপক্ষের দলগুলোর সাথে স্থানান্তরিত হননি। শারীরিক অসুস্থতা ও ওজন সমস্যায় পড়ে রোনাল্দো মাত্র ৩০০ মিনিটের বেশি সময় এই মৌসুমে খেলেন। তিনি সান সিরোয় অনুষ্ঠিত নেপোলীর বিরুদ্ধে ৫-২ গোলে জয়ী দলে একমাত্র গোল করেন ও গোলটি তাকে স্মরণীয় করে রাখে। এই প্রথম এসি মিলানে অনেক আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতে কাকা, আলেকজান্দ্রো পাতো ও রোনাল্দো’র মতো ত্রয়ী স্ট্রাইকার নামায় যা কা-পা-রো নামে তাদেরকে একত্রে ডাকা হতো। এসি মিলানের পক্ষে ২০ খেলায় ৯ গোল করেন রোনাল্দো।
এতগুলো সাফল্য স্বত্ত্বেও রোনাল্দো তার ক্লাব ক্যারিয়ারে ইউইএফএ চ্যাম্পিয়নস্ লীগে জয়ী হতে পারেননি। ২০০৬-০৭ মৌসুমে এসি মিলান শিরোপাধারী হলেও মাদ্রিদের বিরুদ্ধে খেলায় অনির্ধারিত কারণে অংশ নেননি। সম্ভবতঃ তিনি ২০০৩ সালে রিয়েল মাদ্রিদকে সেমি-ফাইনালে উঠালেও জুভেন্টাসের কারণে হেরে যান বিধায় অংশ নেননি।
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০০৮ তারিখে রোনাল্দো কয়েকবার হাঁটুর আঘাতের কারণে স্টেচারে করে মাঠের বাইরে যান ও হাসপাতালে যেতে বাধ্য হন। ঐ খেলায় এসি মিলান লিভোরনোর সাথে ১-১ গোল করে ড্র করতে বাধ্য হয়। এসি মিলান ম্যাচ শেষে জানায় রোনাল্দো তার বাম পায়ের হাঁটুতে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ডান পায়ে ১৯৯৮ ও ২০০০ সালে আঘাতের পর এটি ৩য় বারের মতো ডান পায়ে আঘাতে ঘটনা ঘটলো রোনাল্দোর জীবনে। ঐ মৌসুম শেষে চুক্তি নবায়ণ না হওয়ায় তিনি মিলান থেকে ছাড়া পান।
২০০৯-২০১১: করিন্থিয়াস.
রোনাল্দো হাঁটুতে অস্ত্রোপাচার শেষে ফ্ল্যামিংগোতে যোগদানের আগ্রহ দেখালে ক্লাবের পরিচালনা পরিষদ জানায়, তিনি যে কোন সময় যোগদান করতে পারেন ও তার জন্য জন্য ক্লাবের দরজা খোলা। কিন্তু, ৯ ডিসেম্বর তিনি ফ্ল্যামিংগোর লীগ প্রতিপক্ষ করিন্থিয়াসের সাথে ১ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই ঘোষণাটি ব্রাজিলের প্রচার মাধ্যমে খুবই প্রচারণা পায় যে তার ভালবাসা ফ্ল্যামিংগোর চেয়ে করিন্থিয়াসেই বেশি যদিও রোনাল্দো ঘোষণা করেছিলেন তিনি ফ্ল্যামিংগো সমর্থক এবং কখনো প্রতিপক্ষে যোগ দেবেন না।
৪ মার্চ, ২০০৯: এস্টাডো জুসিলিনো কুবিটসেকে অনুষ্ঠিত কোপা ডো ব্রাজিল কাপে ১ম ম্যাচ খেলেন জর্গ হেনরিকের পরিবর্তে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে ইতুম্বিয়ারার বিরুদ্ধে। করিন্থিয়াসের পক্ষে ক্যাম্পিওনাটো পাওলিস্টা কাপে পালমেইরাসের বিরুদ্ধে ১ম গোল করেন ৮ মার্চ, ২০০৯ তারিখে। তিনি ক্যাম্পিওনাটো পাওলিস্টা কাপে ১৪ খেলার মধ্যে ১০ গোল করে করিন্থিয়াসকে জয়ী হতে সাহায্য করেন।
রোনাল্দো ইন্টারনাসিওনালকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে করিন্থিয়াসকে ৩য় বারের মতো (ক্যারিয়ারে ২য়) ব্রাজিল কাপ জয়ে সাহায্য করেন। এছাড়াও কোপা লিবেরাটাডোরস ২০১০ জয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত গোয়িয়াসের বিপক্ষে খেলে পুণরায় মাঠে ফিরে আসেন। ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ তারিখে তিনি সাও পাওলোর বিপক্ষে গোল করে ১-১ ড্র করতে সাহায্য করেন।
তিনি ব্রাজিলীয় সিরি এ ২০০৯ লীগে ২০ খেলায় ১২ গোল করেন।
ফেব্রুয়ারী ২০১০ সালে রোনাল্দো চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেন। এতে করে তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত খেলবেন ও এরপরই তিনি ক্রীড়াঙ্গন থেকে অবসর নিবেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলাম্বিয়ান দল ডিপোর্টেস টোলিমা'র কাছে পরাজিত হযে করিন্থিয়াস ২০১১ সালের কোপা লিবারট্যাডোরসে খেলার যোগ্যতা হারায়। এর পরপরই তিনি ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে.
১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের পক্ষে রেকাইফে অনুষ্ঠিত আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচের মাধ্যমে রোনাল্দোর আন্তর্জাতিক খেলায় অভিষেক হয়। ঐ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপে ১৭ বছর বয়সী রোনাল্দো কোন ম্যাচ খেলেননি। তিনি রোনাল্দিনহো (পর্তুগীজ শব্দ লিটিল রোনাল্দো) নামে পরিচিত ছিলেন কেননা তার বড় ও দলীয় সঙ্গী হিসেবে রোনাল্দো রডরিগুয়েজ ডি জিসাস টুর্ণামেন্টে রোনাল্দো নামে এবং ডাক নাম হিসেবে রোনাল্দাও (বড় রোনাল্দো) অংশ নেন। ফলে তাদের চিহ্নিত করণে যথাক্রমে লিটিল ও বিগ রোনাল্দো হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। এছাড়াও ব্রাজিলীয় খেলোয়াড় হিসেবে রোনাল্দো ডি আসিস মোরিয়েরা নামে একজন খেলোয়াড় ছিলেন, তিনি রোনাল্দিনহো নামে চিহ্নিত ও রোনাল্দিনহো গাওচো হিসেবে ১৯৯৯ সালে ব্রাজিলের প্রধান জাতীয় দলের সদস্য ছিলেন।
১৯৯৬ সালে আটলান্টায় আয়োজিত অলিম্পিক গেমসে রোনাল্দো তার শার্টে রোনাল্দিনহো নামে মাঠে নামেন দু’বছরের বড় রোনাল্দো গুইয়ারোর জন্য। অলিম্পিকে ব্রাজিল ব্রোঞ্জ মেডেল জয়ী হয়।
১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালের ফিফার বছরের সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদার অধিকারী রোনাল্দো ১৯৯৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপে ৪ গোল করে তিনটি সম্মাননা লাভ করেন। ফাইনালের আগে তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ না হলেও কোচ মারিও জাগালোকে প্রভাবান্বিত করে খেলেন। কিন্তু ফ্রান্সের গোলরক্ষক ফাবিয়েন বার্থেজের সাথে পুণরায় সংঘর্ষে পড়েন ও আঘাতপ্রাপ্ত হন। খেলায় ব্রাজিল স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ৩-০ গোলে হেরে যায়। ব্রার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল নিওরোলজি বিভাগের অধ্যাপক আর্দ্রিয়ান উইলিয়ামসের মতে, “রোনাল্দো অস্ত্রোপাচারের পর স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেননি এবং ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তিনি তার সেরা দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেন না - যদিও তিনি তা পারেননি।”
২০০২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে রোনাল্দো পুণরায় তার দক্ষতা দেখিয়ে রেকর্ডসংখ্যক ৫ম বারের মতো ব্রাজিলকে জয়ী করান এবং তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ৮ গোল করে গোল্ডেন সু জয়ী হন ও গোল্ডেন বলের পুরস্কারে রানার-আপ হয়ে টুর্ণামেন্টের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় মনোনীত হন। তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোলবিহীন অবস্থায় থাকলেও টুর্ণামেন্টের প্রতিটি প্রতিপক্ষ দলের বিপক্ষে গোল করেন। ফাইনাল খেলায় জার্মানীর বিরুদ্ধে তার একাদশ ও দ্বাদশ গোল করার মাধ্যমে বিশ্বকাপে পেলের ১২ গোলের সমকক্ষ হন।
২ জুন ২০০৪: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পেনাল্টির মাধ্যমে অপ্রত্যাশিতভাবে হ্যাট্রিক করে ব্রাজিলকে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ খেলায় উত্তীর্ণ ঘটান।
২০০৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল তাদের গ্রুপের প্রথম দু’টি খেলায় ক্রোয়েশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ী হয় যাতে রোনাল্দো অতিরিক্ত ওজনধারী ও গতিহীন ছিলেন। এরপরও কোচ কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা অতিরিক্ত সময়ে তাকে খেলান ও ৩য় খেলায় জাপানের বিপক্ষে দু’টি গোল করে ২০তম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপে গোল করার বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হন এবং বিশ্বকাপে গার্ড মুলারের রেকর্ডসংখ্যক ১৪ গোলের সমকক্ষ হন (রোনাল্দো ফ্রান্স ৯৮, কোরিয়া / জাপান ২০০২ এবং জার্মানী ২০০৬) এবং শেষ ১৬ দলের একটি দল ঘানার বিপক্ষে ১৫তম গোল করে মুলারের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। মৃদুভাষী রোনাল্দো ২০০৬ বিশ্বকাপে তার ৩য় গোল করে জার্গেন ক্লিনস্ম্যানের পর ২য় খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিটি বিশ্বকাপে কমপক্ষে ৩ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। যদিও কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ১-০ গোলে হেরে ব্রাজিল বিদায় নেয়।
ব্যক্তিগত জীবন.
১৯৯৭ সালে রোনাল্দো ব্রাজিলীয় মডেল ও অভিনেত্রী সুসানা ওয়ার্নারের সাথে ব্রাজিলীয় টেলিনোভেলা মালহাকাওয়ে তিনটি পর্বে একত্রে অভিনয় করে একে-অপরের সাথে পরিচিত হন। কিন্তু বিয়ে না করেই দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক বজায় রাখেন ও ১৯৯৯ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত মিলানে একত্রে বাস করেন। এপ্রিল, ১৯৯৯ সালে রোনাল্দো ব্রাজিলীয় প্রমিলা ফুটবলার মিলেনে ডোমিনগুয়েজকে বিয়ে করেন ও তাদের প্রথম সন্তান রোনাল্দ জন্ম নেয়। ২০০৫ সালে রোনাল্দো ব্রাজিলীয় মডেল এবং এমটিভি ভিজে দানিয়েলা সিকারেলির সাথে সম্পর্ক গড়েন। চাটিও ডি চানটিলিতে অনুষ্ঠিত বিয়েটি মাত্র ৩ মাসে টেকে। অনুষ্ঠানে ৭ লক্ষ ইউরো ব্যয় হয় বলে জানা যায়। এছাড়াও, রোনাল্দো ব্রাজিলীয় সুপার মডেল রাইকা অলিভিরার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন যা ডিসেম্বর, ২০০৬-এ শেষ হয়ে যায়।
| null |
1ae8c13ee7 | আবেদন ফরম সংগ্রহ, বিবরণী ফরমসহ এবং প্রয়োজনীয় ফি জমাদানের তথ্যসিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২০১০ সালের জেএসসি পরীক্ষার আবেদন ফরম সংগ্রহ, ফিসের হার, বিবরণী ফরমসহ এবং প্রয়োজনীয় ফি জমাদানের তারিখ ও পরীক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যাবলি নিচে দেওয়া হলো।পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা: কেবলমাত্র ওই শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০১০ সালের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। পরীক্ষার ফি: (প্রতি পরীক্ষার্থীর জন্য) প্রতি উত্তরপত্র ফি ১৫, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সনদপত্র ফি ১৫, বিলম্ব ফিসহ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ৫০ টাকা। ব্যাংক ড্রাফট এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র গ্রহণ ও জমাদানসংক্রান্ত তথ্য:(ক) আবেদন ফরম ও বিবরণী ফরমসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র বোর্ড থেকে গ্রহণের তারিখ:# হবিগঞ্জ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ১২-০৭-২০১০।# মৌলভীবাজার জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ১৩-০৭-২০১০।# সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ১৪-০৭-২০১০।# সিলেট জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ১৫-০৭-২০১০।(খ) ব্যাংক ড্রাফট ক্রয়: # বিলম্ব ফি ব্যতীত ব্যাংক ড্রাফট ক্রয়ের শেষ তারিখ: ১৮-০৭-২০১০।# বিলম্ব ফিসহ ব্যাংক ড্রাফট ক্রয়ের শেষ তারিখ: ২৫-০৭-২০১০।(গ) বিলম্ব ফি ব্যতীত ব্যাংক ড্রাফট, আবেদন ফরম ও বিবরণী ফরমসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র বোর্ডে জমাদানের তারিখ:# হবিগঞ্জ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ২০-০৭-২০১০।# মৌলভীবাজার জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ২১-০৭-২০১০।# সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ২১-০৭-২০১০।# সিলেট জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: ২২-০৭-২০১০।(ঘ) বিলম্ব ফিসহ ব্যাংক ড্রাফট, আবেদন ফরম ও বিবরণী ফরমসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র বোর্ডে জমাদানের তারিখ (সকল জেলা): ২৭-০৭-২০১০। | null |
qzm2vfsokt | ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পরই একজন পদত্যাগ করেছেন। কমিটিতে প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ বছর পর অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ১৭ সদস্যের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরই পদত্যাগ করেন মো. সাফায়েত হোসেন ভূঁইয়া। তাঁকে নতুন কমিটিতে দপ্তর সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছিল।
পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাফায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিগত একাধিক নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরোধিতা করে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষোভ থেকে তিনি পদত্যাগের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সাফায়েত হোসেন ভূঁইয়া গতকালই তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পদত্যাগের বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। লিখিত পদত্যাগপত্র আজ শনিবার জেলা আওয়ামী লীগে কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেবেন। পরে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে আপলোড করা পদত্যাগ বিবৃতির একটি কপি এ প্রতিনিধির কাছে পাঠিয়ে দেন।
সাফায়েত হোসেন ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘১৯ বছর পর অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে যে নেতার নামগন্ধ ছিল না। যাঁর নামে কোনো স্লোগান উচ্চারিত হয়নি। যিনি কোনো পোস্টার-ব্যানার লাগিয়ে প্রচারণা করেননি। এমন একজন নেতাকে নতুন কমিটিতে বড় পদ দেওয়া হয়েছে। অথচ আমি ছাত্রজীবনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। যুবলীগের শীর্ষস্থানীয় পদে থেকে সাংগঠনিক রাজনীতি করেছি। দলের প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি। অথচ ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটিতে আমাকে দেওয়া হয়েছে ১৪ নম্বর ক্রমের দপ্তর সম্পাদক পদ। এটি তো মাঠ পর্যায়ের একজন নেতার সরাসরি অপমান। দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাদের কমিটিতে যদি বড় পদ দেওয়া হতে পারে, তাহলে আদর্শে অটল নেতাকে কী মূল্যায়ন করা হলো।’
সাফায়েত হোসেন আরও বলেন, এ পরিস্থিতিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের আরও বেশি সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই নতুন কমিটির দপ্তর সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে লিখে দেওয়া ১৭ সদস্যবিশিষ্ট ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবদুছ ছাত্তার সভাপতি ও মো. ছাফির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। | null |
5ce852a1db | প্রস্তাবটা ছিল পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের। সে অনুযায়ী সাফ ফুটবলের প্রস্তুতির জন্য আগামী ১১ আগস্ট ঢাকায় খেলতে আসছে পাকিস্তান ফুটবল দল। কাল বাফুফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে এটি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ম্যাচ দুটি হবে ১৩ ও ১৬ আগস্ট। আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবে ফিফার স্বীকৃতি মিলবে কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত নয় বাফুফে। তবে এ জন্য এএফসিতে আবেদন করা হবে। সাফের প্রস্তুতির জন্য দুটি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দলের এ সপ্তাহেই থাইল্যান্ডে সফরে যাওয়ার কথা ছিল। এখন যাওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ঠিক হয়েছে ২৭ জুলাই। | null |
29b33a5fd7 | ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি উচ্চ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে দেশটির প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট চালর্স দ্য গলকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ কারণে ওই লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, তিনি প্রায় দুই ঘণ্টায় ১৬০ ফুটের বৈদ্যুতিক খুঁটিটি বেয়ে ওঠেন। চার লাখ ভোল্টের লাইন থেকে মাত্র ১০ মিটার দূরে তিনি বসে ছিলেন। ওই লাইন দিয়ে স্পেনে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হয়।ফ্রান্সের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আরটিই এক বিবৃতিতে জানায়, ‘নিরাপত্তার জন্য ওই লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এ কারণে ওই এলাকায় বা স্পেনে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিঘ্ন ঘটেনি।’আজ সকালে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা ও পুলিশের সঙ্গে তাঁর সমঝোতায় তিনি নেমে আসেন। তাঁর এমন কাণ্ডের উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা যায়নি। তবে, তিনি একজন রাজনৈতিক কর্মী বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।তিনি ব্যানারে দেশটির যুদ্ধকালীন নেতা ও ১৯৭০ সালে মারা যাওয়া প্রেসিডেন্ট চালর্স দ্য গলকে আসন্ন ২০১৭ সালের নির্বাচনে আবারও প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে আহ্বান জানান। এমন কাণ্ডে তাঁকে আইনগত ব্যবস্থার মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছে আরটিই। | null |
2614b95033 | রাজধানীর আজিমপুরে গতকাল মঙ্গলবার দিনদুপুরে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা একটি গাড়ির ভেতর গুলিবিদ্ধ হন, গাড়িটির সামনের কাচে থাকা স্টিকারে ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’ লেখা লোগো ছিল। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন মনির হোসেন (৩৭) ও মোশাররফ হোসেন (৪২)। র্যাব তাঁদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
র্যাব বলেছে, আহত ব্যক্তিরা ছিনতাইকারী। তবে আহত দুজনের দাবি, তাঁরা ছিনতাইকারী নন।
র্যাবের ভাষ্য, র্যাব-১০ জানতে পারে যে ছয়-সাতজন দুর্বৃত্ত একটি মাইক্রোবাস ও দুটি কার নিয়ে আজিমপুরে এতিমখানা মোড়ে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে একটি মাইক্রোবাস ও একটি কার পালিয়ে যায়। এতিমখানা মোড়ের কাছে দক্ষিণ দিকে রাখা অপর কারটি নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালানোর চেষ্টা করে। তখন র্যাবের সদস্যরা কারটি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। কারের ভেতর থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে কারে থাকা দুই ছিনতাইকারী আহত হন। র্যাব আহত দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে জানতে পারে, তাঁদের নাম মনির ও মোশাররফ। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। মনিরের বাঁ ঊরুতে ও শরীরের পশ্চাৎভাগে এবং মোশাররফের ডান ঊরুতে গুলি লেগেছে।
রাতে র্যাব-১০-এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাইক্রোবাস ও কার ধাওয়া করার সময় দুটি মোটরসাইকেলে থাকা কনস্টেবল বিপ্লব ও মেহেদী আহত হন।
ঘটনাস্থলের কাছের এক চা-দোকানিপ্রথম আলোকে বলেন, ‘রিকশার টায়ার ফাটার মতো শব্দ পাইয়া চাইয়্যা দেহি র্যাব একটি কারের নিচের দিকে গুলি করতেছে। র্যাব চার-পাঁচটার মতো গুলি করে।’ ওই চায়ের দোকানে বসা এক ছাত্র বলেন, তিনি র্যাবকে গুলি ছুড়তে দেখেছেন।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, সিলভার রঙের কারটি থেকে গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তিকে বের করছে র্যাব। এ সময় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে র্যাব-১০-এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকীপ্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের সদস্য। তাঁরা চকবাজার ও আজিমপুর এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করেন। দুপুরে তিনটি গাড়িতে করে তাঁরা বড় ধরনের ছিনতাই ও ডাকাতি করার জন্য আজিমপুরে অবস্থান নিয়েছিলেন। র্যাবের গোয়েন্দাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ছিনতাইয়ের নেতৃত্বে থাকা দলটি একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পেছনে থাকা দলটি র্যাবের অভিযানের মুখে পড়ে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। র্যাব ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত কারটিতে (ঢাকা মেট্রো গ ১৯-৫০৫৭) তল্লাশি চালিয়ে ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি দুটি পিস্তল, দুটি গুলি ও চালকের লাইসেন্স উদ্ধার করে। গাড়িটি আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা পুলিশ ও ডিবি পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করে আসছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া মনির হোসেনপ্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি কারটির চালক। আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তি সারা দিনের জন্য কারটি তিন হাজার টাকায় ভাড়া নেন। ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি এতিমখানার কাছে গাড়িটি থামাতে বলেন। তিনি সপরিবার খিলগাঁওয়ের ভূঁইয়াপাড়ায় থাকেন।
আহত অপরজন মোশাররফ হোসেন দাবি করেন, তিনি ক্যান্টনমেন্ট বাজারের মাছ ব্যবসায়ী। কিছুদিন আগে জলিলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। একটি মামলার বাদী হিসেবে তিনি আদালতে গিয়েছিলেন। জলিল বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাকায় আজিমপুরে যান। বেড়ানোর জায়গা সম্পর্কে জলিল তাঁকে কিছু বলেননি।
এর আগে ১৩ জুলাই সন্ধ্যায় আজিমপুর চৌরাস্তা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের কাছে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আলমগীর হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত ও আবদুল বারেক (৪৫) নামের আরেকজন আহত হন। র্যাব বলেছে, হতাহত ওই দুই ব্যক্তি ছিনতাইকারী। | null |
270dbb27c6 | ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় এক নারী পোশাকশ্রমিক এবং সখীপুরে এক কলেজছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দুই স্থানে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।গত বুধবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই নারী পোশাককর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নান্দাইল উপজেলার ফরিদাকান্দা গ্রাম থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।ওই নারী পোশাকশ্রমিক বলেন, তাঁর বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলায়। গত রমজানে ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়ি আসার পথে বাসে কটিয়াদির পং মশুয়া এলাকার আশিক হাসান ওরফে শুভর (২৩) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর তাঁদের দুজনের মধ্যে মুঠোফোনে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই পরিচয়ের সূত্র ধরে আশিক গত শুক্রবার তাঁকে মুঠোফোনে ডেকে আনেন। পরে আশিক তাঁকে নান্দাইলের ফরিদাকান্দা গ্রামের এক অটোরিকশা চালকের বাড়িতে চার দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেন।ওই এলাকার গ্রাম পুলিশ মো. হারিছ উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসীর মুখে নারী নির্যাতনের অভিযোগ শুনে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁদের দুজনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও নান্দাইল থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ওই নারীর বাবা নান্দাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু হানিফ বলেন, আশিককে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী ও সখীপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নের গড়বাড়ি গ্রামের কলেজছাত্র আল আমিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত বুধবার ওই ছাত্র তাঁকে ফুসলিয়ে বনে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় ওই মেয়েটি বাদী হয়ে গতকাল আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে ওই কলেজছাত্রের বাবার দাবি, তাঁর ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। ছেলেকে ফাঁসাতে ওই মেয়েটি নাটক করেছেন।সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুল হক বলেন, আদৌ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা প্রমাণের জন্য মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আল আমিনকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। | null |
2e91d02954 | রাজধানীর অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চকবাজার, মৌলভীবাজার ও বেগম বাজারের প্রায় সব সড়ক খানাখন্দে ভরা। ফলে পণ্যবাহী যান উল্টে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সঙ্গে তীব্র যানজট তো আছেই।স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চকবাজার, মৌলভীবাজার ও বেগম বাজারের ভাঙাচোরা সড়কে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই যানজট লেগে থাকে। ফলে ক্রেতাসহ সবাইকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই এলাকাগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২৮ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত।সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীবাজার, চকবাজার ও বেগম বাজারের অধিকাংশ সড়কের প্রশস্ততা ১০ থেকে ১৫ ফুট। এই সড়কগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় খানাখন্দে ভরে আছে। সড়কে উড়ছে ধুলাবালি। চকবাজারের চারপাশে রাখা মালামাল পরিবহনের ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি। এতে প্রায় অর্ধেক সড়ক দখল হয়ে আছে। সড়কে লেগে আছে যানজট। নির্বিকার হয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ। এ ছাড়া বেগম বাজার ও মৌলভীবাজারের প্রায় প্রতিটি সড়কে রয়েছে তীব্র যানজট। এসব এলাকায় যাতায়াতের প্রধান যানবাহন রিকশা। এলাকার সড়কগুলোতে দুটি রিকশা পাশাপাশি চলাই কঠিন। এই তিনটি এলাকায় প্রায় ২০ হাজার দোকান রয়েছে।মালামাল ভ্যানে নিয়ে মৌলভীবাজার-সংলগ্ন ওয়াটার ওয়ার্কস সড়কে যানজটে আটকে ছিলেন শরীয়তপুরের হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, ‘ভাবছিলাম, মালামাল কিনে দ্রুত বাড়ি চলে যাব। কিন্তু মৌলভীবাজার থেকে এ পর্যন্ত আসতে সময় লাগছে প্রায় ৪৫ মিনিট। অথচ হেঁটে এলে সময় লাগত তিন-চার মিনিট। এখন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যেতে কত সময় লাগে, জানি না।’চকবাজারের রহমান ট্রেডার্সের মালিক রহমান মিয়া বলেন, বিকল্প স্থান না থাকায় সড়কেই ভ্যান রাখতে হয়। তবে মালামাল ওঠাতে বা নামাতে বেশি সময় নেওয়া হয় না।বেগম বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এসব এলাকায় বৃষ্টি হলেই বাণিজ্যিক কার্যক্রম থমকে যায়। ভাঙাচোরা সড়কে কাদা-পানির মাখামাখির কারণে হেঁটে চলা দায়। ঠেলাগাড়ি, ভ্যান ও মালামাল বহনকারী পিকআপে যানজটের সৃষ্টি হয়।মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন সকাল আটটার পর থেকে এসব এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়, চলে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত। এর মধ্যে সারাক্ষণই যানজট থাকে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাইকারি ক্রেতাদের পণ্য কিনতেই দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হয়। ফলে ক্রেতাদের মধ্যে এই এলাকায় আসতে অনীহা তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক ভাঙাচোরা থাকায় প্রায়ই এসব এলাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা। গত বছর ভ্যান উল্টে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করছেন অনেক শ্রমিক।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, পুরান ঢাকার এসব এলাকার অধিকাংশ সড়ক গড়ে ১৫ ফুট। ফলে ব্যবসায়ীরা সড়কে ঠেলাগাড়ি বা ভ্যান রাখলেই যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকির শিকার হতে হয়।মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ওই তিনটি বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করে সরকার। অথচ এই এলাকার রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। তিনি চকবাজার, বেগম বাজার, মৌলভীবাজারসহ আশপাশের বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ডিএসসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের তিনটি স্থানে সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে। সড়কে যানজট কমাতে কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া রাত ১১টার আগে মৌলভীবাজারে ট্রাক প্রবেশে নিষেধ করা হয়েছে।’ | null |
a9y3dwy61h | সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় বরের অপেক্ষায় কনে সেজে বসেছিল কিশোরী। কনের বাড়িতেও চলছিল বিয়ের সব আয়োজন। এরই মধ্যে স্থানীয় কোনো এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করে বাল্যবিবাহের বিষয়টি জানান। পরে জগন্নাথপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করেছে। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে বরযাত্রীর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন কনেপক্ষের লোকজন। এমন সময় জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলক দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেয়।জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলক দাস বলেন, ৯৯৯ থেকে আসা ফোনে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে বিয়েটি বন্ধ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দুই পরিবারের সদস্যদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জানানো হয়। পরে উভয় পরিবারের অভিভাবকদের বাল্যবিবাহ না দেওয়ার জন্য মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর পৌরসভার কাউন্সিলর সুহেল মিয়া বলেন, ছেলে ও মেয়ে উভয়ের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র ও অসচেতন। বাল্যবিবাহের বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তা বন্ধ করা হয়েছে। | null |
e370aa799e | আগামী জাতীয় নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় লাভ করে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।আজ রোববার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে এক সভায় সাঈদ খোকন এ মন্তব্য করেন। ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা সফল করার জন্য ওই যৌথ সভার আয়োজন করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।সাঈদ খোকন বলেন, ‘চলতি বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭ মার্চ জনসভায় নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এই বক্তব্য পাড়া মহল্লার সব মানুষের নিকট আপনারা পৌঁছে দেবেন। জনগণকে সংগঠিত করবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই ভবিষ্যতে আমরা সরকার গঠন করব। এতে দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির বাস্তব রূপ লাভ করবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।’মেয়র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেসকো কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটা আমাদের জন্য গৌরবের, অহংকারের। এই স্বীকৃতির ফলে যত দিন এই পৃথিবীতে মানব সভ্যতা থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ টিকে থাকবে।’
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও ডিএসসিসি ৪২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু আহমেদ মন্নফী প্রমুখ বক্তব্য দেন। | null |
58bd9e8f58 | প্রাণ চাটনি স্মার্টফোন ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর প্রাণ-আরএফএল সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৩০ জন বিজয়ীকে একটি করে স্যামসাং গ্যালাক্সি জে-৫ সেট পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের ক্যাটাগরি ম্যানেজার তোষণ পাল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ড ম্যানেজার সিফাত আহমেদ। এর আগে এ ক্যাম্পেইনের আওতায় ৪৩ জন বিজয়ীকে স্মার্টফোন দেওয়া হয়। ‘প্রাণ চাটনি খাও সারা দিন, স্মার্টফোন জেতো প্রতিদিন’ স্লোগান নিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর এ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। বিজ্ঞপ্তি। | null |
zsxmchrw23 | জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী আবারও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। আজ রোববার তাঁর পুনর্নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ স্মারক জারি করে।
এর আগে জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী ২০১৯ সালে প্রথমবার সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। অর্থাৎ তিনি টানা দ্বিতীয়বার একই পদে নিয়োগ পেলেন। এর আগে তিনি ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। | 3,699 |
310e98e253 | বড় জয় দিয়েই এশিয়ান গেমস ক্রিকেট শুরু করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ ইনচনের ইয়েনহুই ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তারা নেপালকে হারিয়েছে ৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশের করা ১০৭ রানের জবাবে নেপালি মেয়েরা অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ২৬ রানেই।বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে দারুণ বল করেছেন অধিনায়ক সালমা খাতুন। তিনি ৩ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১ রানের বিনিময়ে। সালমার পাশাপাশি রুমানাও ছিলেন দারুণ সফল। মাত্র ৪ রানের বিনিময়ে তাঁর ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট। এছাড়াও জাহানারা ১৩ রানে ২টি আর ফাহিমা মাত্র ২ রানে ২ উইকেট নিয়ে শেষ করে দেন নেপালের ইনিংস।নেপালি ব্যাটারদের কেউই দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছতে পারেননি। সর্বোচ্চ ১০ রান এসেছে অতিরিক্ত থেকে।এর আগে, সকালে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ। আয়েশা রহমানের অপরাজিত ফিফটিতে বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১০৭ রান। ৬০ বলে ২টি চারের সাহায্যে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন আয়েশা। লতা মণ্ডলের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।নেপালের সীতা রানা ২৪ রানে ২টি এবং সারিতা মাগার ১৯ রানে নেন ২ উইকেট। | null |
5e8b5cfc91 | আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েটে লটারির ভুল টিকিটেই ২০ লাখ ডলার জিতে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি লটারির টিকিট কেনার সময় দোকান থেকে তাঁকে চাহিদার চিকি না দিয়ে ভুল টিকিট দেওয়া হয়েছিল। আর এতেই তিনি বাজিমাত করে দিয়েছেন।
মিশিগান লটারি জানিয়েছে, লটারিজয়ী ব্যক্তি গাড়ির চাকায় বাতাস ভরার জন্য ইস্ট পয়েন্ট সিটির একটি গ্যাস স্টেশনে থামেন। এয়ার মেশিনের বিলের জন্য তাঁর ভাংতি অর্থের প্রয়োজন ছিল। ভাংতি টাকার সঙ্গে তিনি ১০ ডলার মূল্যের লাকি সেভেন স্ক্র্যাচঅফ টিকিটও চেয়েছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই লটারিজয়ী ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি স্ত্রীর গাড়ির টায়ারে বাতাস ভরার জন্য দোকানে থেমেছিলাম। তাঁর কিছু ভাংতি অর্থের প্রয়োজন ছিল। তিনি দোকানে গিয়ে ১০ ডলারের লাকি সেভেনের টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু দোকানের কর্মী তাঁকে ভুল করে ২০ ডলার মূল্যের টিকিট দিয়েছিলেন। ভুল টিকিট দিয়েছেন এটা বোঝার পর দোকানের কর্মী সেটি ফেরত নিয়ে ১০ ডলার মূল্যের টিকিট দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি ২০ ডলার মূল্যের টিকিটটি রেখে দিয়েছিলেন।
১৪ জুলাই এক বিবৃতিতে লটারিজয়ী ৫৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি বলেন, পরে ওই দোকানে ২০ ডলার দিয়েই টিকিটটি তিনি নিজের কাছে রেখে দেন। পরে লটারির ফলাফলে ২০ লাখ ডলার জয়ী হন। লটারিতে জিতে নেওয়া এই অর্থ দিয়ে তিনি একটি বাড়ি কিনবেন এবং বাকি অর্থ সংরক্ষণ করবেন বলে জানা গেছে। | null |
64330d8a60 | ৮০ বছরের বয়স্ক শরীরটা যেন দুদণ্ড শান্তিতেও থাকতে দিচ্ছে না পেলেকে! বাড়ির চেয়ে হাসপাতালেই ইদানীং বেশি দিন কাটাতে হচ্ছে ব্রাজিল কিংবদন্তিকে।
এই তো, গত মঙ্গলবারই আইসিইউ থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু তিন দিনও হয়নি, আজ কিছুক্ষণ আগে আবার আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে পেলেকে!
আজ শুক্রবার অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে তাঁর শরীর কিছুটা খারাপ হওয়ায় পেলেকে আইসিইউতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে ‘ফুটবলের রাজা’কে।
তবে ইএসপিএন ব্রাজিল জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত স্থিতিশীলই আছে পেলের শারীরিক অবস্থা। তাঁর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে রাখতেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পেলেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
পেলের কাছের মানুষ বা আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালের কেউই এখনো অবশ্য কোনো বিবৃতি দিয়ে কিছু জানায়নি। ব্রাজিলের স্থানীয় সময় শুক্রবারের মধ্যে কোনো বিবৃতি আসার সম্ভাবনা কম বলেই জানাচ্ছে ইএসপিএন ব্রাজিল।
গত ৩১ আগস্ট থেকেই হাসপাতাল-বাড়ি করে দিন কাটছে পেলের। ব্রাজিলের জার্সিতে ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি আগস্টের শেষ দিকে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সেখানে চেকআপে তাঁর কোলন টিউমার ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত, ৪ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচার করা হয়।
টিউমার পর্যালোচনা করে কী বোঝা গেছে, সেটি অবশ্য কখনো জনসমক্ষে জানানো হয়নি।
অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউতেই ছিলেন পেলে। গত মঙ্গলবার ছাড়া পান। বাসায় ফেরার পর অবশ্য পেলে সেদিন নিজের শারীরিক অবস্থা বোঝাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মজা করে লিখেছিলেন, ‘প্রতিদিনই আরও আনন্দে কাটাচ্ছি। এখনো ৯০ মিনিটের পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় খেলার মতো ফিট আছি।’ শেষে লিখেছিলেন, ‘আবার দেখা হবে আমাদের।’
সেই প্রার্থনাতেই আজ আবার নিশ্চিত বসে গেছেন লাখো ব্রাজিলিয়ান। দেশ, সমর্থন নির্বিশেষে শতকোটি ফুটবলপ্রেমীও কি বসেননি! | null |
k4n9bljtw8 | বাংলাদেশে কার সমর্থক বেশি? ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা?
ঢাকা আবাহনীর নতুন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ব্রুনো মাতোসের প্রশ্ন। কঠিন এক প্রশ্ন! আসলেই তো, ব্রাজিলের সমর্থন বেশি না আর্জেন্টিনার, এমন কোনো হিসাব যে নেই। তবে বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনা নিয়ে প্রবল উন্মাদনা ব্রাজিলকে যে কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে, এটা একটু সাহসী হয়ে বলে ফেলা যায়। লিওনেল মেসির ভক্ত যে বরাবরই বেশি। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে তাদের সমর্থন বাড়াটা স্বাভাবিক। ব্রাজিল যে বিশ্বকাপ পায় না ২১ বছর পেরিয়ে গেছে।
ব্রুনো অবশ্য এত সব হিসাব মেলাতে নারাজ। বাংলাদেশে খেলতে আসবেন নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে নেটে এ দেশ, এ দেশের মানুষ আর ফুটবল নিয়ে জানা ও বোঝার চেষ্টা করছেন। তাঁর ধারণা, বাংলাদেশে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সমর্থন প্রায় সমান। গুগলে সার্চ দিয়ে বাংলাদেশে যে পরিমাণ ব্রাজিলের পতাকা ওড়ার ছবি দেখেছেন, তাতে তিনি রীতিমতো বিস্মিত। মুগ্ধ তো বটেই, ‘বাংলাদেশে এত ব্রাজিলের পতাকা ওড়ে!’
এ মাসেই হতে যাওয়া এএফসি কাপের জন্য আবাহনী দুই ব্রাজিলিয়ানকে নিয়ে এসেছে। ব্রুনো মাতোস ও জোনাথন রেইস। ব্রুনোর চেয়ে কথাবার্তা একটু কম বলেন জোনাথন। ইংরেজিতে সমস্যা দুই ব্রাজিলিয়ানেরই। জোনাথনের ইংরেজি একটু বেশি দুর্বল। তা–ও ব্রুনোর পাশাপাশি তিনি জানালেন বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের ব্রাজিল–প্রেম তাঁকেও অবাক করেছে। তিনি এখন মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্লাব আবাহনী লিমিটেডের জার্সি গায়ে নিজেকে উজাড় করে দিতে।
এএফসি কাপে ১৬ আগস্ট মালদ্বীপের ক্লাব ইগলসের বিপক্ষে সিলেটে ম্যাচ আবাহনীর। প্রাথমিক রাউন্ডের সেই বাধা টপকাতে পারলে ২২ আগস্ট এএফসি কাপের প্লে–অফ। প্রতিপক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা ভারতের মোহনবাগান ক্লাবের। আবাহনীর কোচ মারিও লেমোসের লক্ষ্য গ্রুপ পর্যায়ে ওঠা। মৌসুম শেষে কদিন আগেই ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকার ফুটবলার দানিয়েল কলিনদ্রেস চলে গেছেন। আরেক ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল আগুস্তো চোটে ভুগছেন। বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছিল আবাহনী। ডিফেন্ডার ইউসেফ ও ফরোয়ার্ড এমেকা ওগবাহ ছিলেন, তাঁদের পাশাপাশি শেখ জামাল থেকে ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, মোহামেডান থেকে মিডফিল্ডার মুজাফফরভ ও ফর্টিস থেকে ডেনিলোকে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলা দুজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ওজুকু ডেভিড ও মোস্তফাকে লোনে নেওয়া হয়েছে। ব্রুনো আর জোনাথনকে নিয়ে এ মুহূর্তে আবাহনীতে আছেন বেশ কয়েকজন বিদেশি ফুটবলার। লেমোস জানালেন, ‘সব বিদেশিকে দেখব আমরা। তাঁদের থেকে ছয়জনকে নেওয়া হবে। এএফসি কাপে যেহেতু ছয় বিদেশি খেলানো যাবে, তাই আমাদের হাতে যথেষ্ট বিকল্প আছে।’
ব্রুনো আর জোনাথনকে পছন্দ করে নিয়ে এসেছেন পর্তুগিজ কোচ লেমোসই। প্রথমজনের বয়স ৩৩, পরের জনের ৩৪। আজ ধানমন্ডিতে আবাহনী ক্লাবে বসে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে ‘ইংরেজি না জানা’ দুই ব্রাজিলিয়ানের কথপোকথনে ‘দোভাষী’ তিনিই। পর্তুগিজ থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করে লেমোস বললেন, ‘থাইল্যান্ডে ওদের সঙ্গে পরিচয় আমার, দুজনই বেশ উঁচুমানের খেলোয়াড়। এএফসি কাপের জন্যই ওদের নিয়ে আসা হয়েছে। আশা করছি, ওদের কাছ থেকে ভালো কিছুই পাব।’
ব্রুনোর প্রোফাইল তুলনামূলক সমৃদ্ধ জোনাথনের চেয়ে। খেলেছেন সার্বিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের সর্বোচ্চ পর্যায়ের লিগে। খেলেছেন সৌদি আরবেও। তবে সেটি প্রো–লিগে নয়, দ্বিতীয় স্তরে। ইন্দোনেশিয়ার পারসিজা জাকার্তা, মালয়েশিয়ার সেলেঙ্গর, ভিয়েতনামের ভিয়েতেল এফসি, ইরানের সালত নাফত ও সার্বিয়ার এফসি নভিবাজরের হয়ে খেলে এশিয়ান ফুটবল নিয়ে ধারণাটা বেশ ভালোই তাঁর। এএফসি কাপের প্রাথমিক রাউন্ডে মালদ্বীপের ইগলসের বিপক্ষে তাই যথেষ্ট আশাবাদী ব্রুনো, ‘আবাহনী আমাদের ভরসা করে নিয়ে এসেছে। মালদ্বীপের দলটির বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিতে চাই। আবাহনীকে পরের রাউন্ডে তুলতে চাই।’
জোনাথন খেলে এসেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান আইপার্কে। তবে থাইল্যান্ডে খেলেছেন বেশ কয়েকটি ক্লাবে—বিজি পাথুম ইউনাইটেড, মুয়াংকান ইউনাইটেড, সুপহানবুরি এফসি, নংবুয়া এফসি, ট্রাট এফসি—থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞতা তাঁর বেশ ভালো। সাইপ্রাসের এরমিস আরাদিপু নামের একটি ক্লাবেও এক মৌসুম খেলেছেন জোনাথন। বাংলাদেশের আবাহনীর হয়েও ভালো একটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চান, ‘এখানকার আবহাওয়া থাইল্যান্ডের মতোই। এখন এএফসি কাপের ম্যাচটির দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের প্রস্তুতি ভালোই হচ্ছে কোচ লেমোসের অধীনে। আবাহনী ক্লাবের পরিবেশ ও কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা যথেষ্ট ভালো। এখন ক্লাবকে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে তুলতে অবদান রাখতে চাই।’
আবাহনীর দুই ব্রাজিলিয়ানই ফুটবলার হিসেবে বেড়ে উঠেছেন দুই বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান ক্লাবে—ব্রুনো পালেমেইরাসে, জোনাথন করিন্থিয়ানসের একাডেমিতে। দুজনই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। রোনালদিনিও প্রিয়, তবে রোনালদোর মতো নয়। হালের নেইমার প্রিয় ব্রুনোর, জোনাথনের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর তুলনায় দুজনের কাছেই এগিয়ে মেসি। করিন্থিয়ানসের একাডেমিতে একবার রোনালদোর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন জোনাথন, কথা বলার সুযোগ হয়নি। অনেক দিন ধরে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ব্যর্থতা পোড়ায় দুজনকে। নিজেরাই বলেন, ‘সেই কবে বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল। এরপর কতগুলো বিশ্বকাপ হয়ে গেল। একটা শিরোপা খুবই দরকার। আশা করি, সেটি ২০২৬ সালেই আসবে।’
এ মুহূর্তে তাঁদের বড় দায়িত্ব আবাহনীকে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নেওয়া, যেটি বেশ কঠিন কাজ। | null |
4f0cca6a16 | অলিম্পিক দিবস উপলক্ষে এবার তিন দিনের কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। কাল শেষ দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে শোভাযাত্রা হয়েছে। ঢাকার শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। ছিলেন বিওএর সভাপতি সেনাবাহিনী প্রধান মোহাম্মদ আব্দুল মুবীন, মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এবার রক্তদান, বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবাসহ আরও কিছু নতুন কর্মসূচি পালন করেছে বিওএ। | null |
ID_45925 | ক্যাম্প ডেভিড
ক্যাম্প ডেভিড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিদের বিশ্রাম স্থান হিসেবে পরিচিত। ১৯৫৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত এটি শাংগ্রি-লা নামে পরিচিতি ছিল। ওয়াশিংটন ডিসি’র ৬২ মাইল (১০০ কিমি) উত্তর-উত্তর-পশ্চিমাংশের মেরিল্যান্ডের থারমন্টের কাছে ক্যাটোকটিন মাউন্টেইন পার্কে অবস্থিত। আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্থানটি নেভাল সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি থারমন্ট নামে পরিচিত। মূলতঃ এটি একটি সামরিক স্থাপনা যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সদস্যগণ দায়িত্ব পালন করেন। পর্বতসঙ্কুল এলাকায় ২০০ একর (৮১ হেক্টর) এলাকা নিয়ে ক্যাম্প ডেভিড গড়ে উঠেছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বেস্টনি বিদ্যমান থাকায় সাধারণ জনগণের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ।
আরব-ইসরায়েলি সংঘাতের প্রেক্ষিতে ১৯৭৮ সালে মিশরের রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী মেনাখেম বেগিন এখানেই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন যা ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি নামে পরিচিতি পায়।
| null |
69ed346dc2 | টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার প্রতিবাদে গ্রামবাসী মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার কুড়ালিয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এই মিছিল ও সমাবেশ হয়।মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর কবীর জানান, সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এ সময় ওই ছাত্র ছাত্রীটির মুঠোফোনের নম্বর চায়। ছাত্রীটি তার নিজের নম্বর না দিয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের নম্বর দেয়। পরে ওই নম্বরে ফোন করলে তা ওই শিক্ষকের স্ত্রী ধরেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে ছাত্রটিকে শাস্তি দেওয়া হয় বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এ কারণে এলাকায় কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়।পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, কয়েক দিন আগে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ওই ছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এ ঘটনায় কুড়ালিয়াপাড়া বাজারে ৯ অক্টোবর ওই ছাত্রের বাবা উপজেলার দেওড়া গ্রামের আবুল কালাম এলাকার ব্যবসায়ী মনির হোসেনের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিয়াকত হোসেনকে দায়ী করেন এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র সরকারকে গালাগাল করেন।এ ঘটনার প্রতিবাদে আবুল কালাম ও মনির হোসেনের বিরুদ্ধে গত রোববার স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ক্লাস বন্ধ রেখে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন। এ ছাড়া গতকাল সোমবার মনির হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন শ্যামল চন্দ্র সরকার।এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক লিয়াকত হোসেন ও শ্যামল চন্দ্র সরকারের অপসারণ দাবি করে গতকাল সোমবার সকালে এলাকাবাসী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মিছিল ও সমাবেশ করেন। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক ছাত্র নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে জানান, বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। | null |
25ekvpnwrm | প্রথম রোল-প্লেয়িং ভিডিও গেম হিসেবে ফাইনাল ফ্যান্টাসির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৭ফাইনাল ফ্যান্টাসি গেমের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিতগেমার গেমের একটি চরিত্র হয়ে গেম খেলবেন। এই হচ্ছে রোল-প্লেয়িং গেম। প্রথম রোল-প্লেয়িং ভিডিও গেম হিসেবে ফাইনাল ফ্যান্টাসির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। হিরোনোবু সাকাগুচির তৈরি এই গেম প্রকাশ করে স্কয়ার এনিক্স (সাবেক স্কয়ার)। এখন পর্যন্ত মূল ১৬টি পর্ব প্রকাশিত হয়েছে ফাইনাল ফ্যান্টাসির। প্রতিটি পর্বই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সর্বশেষ গত ২২ জুন প্রকাশিত হয়েছে ফাইনাল ফ্যান্টাসি ১৬।
১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৭পার্লের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেন ল্যারি ওয়ালসব কাজের জন্য উচ্চস্তরের প্রোগ্রামিং ভাষা পার্লের প্রথম সংস্করণ প্রকাশের ঘোষণা দেন ল্যারি ওয়াল। পার্লের আনুষ্ঠানিক কোনো পূর্ণরূপ নেই। অনেক পূর্ণরূপের একটা হলো ‘প্র্যাকটিক্যাল এক্সট্র্যাকশন অ্যান্ড রিপোর্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ১’। ওয়াল নিজেও একটি পূর্ণরূপ দিয়েছিলেন যেটি পার্লের ম্যানুয়ালে লেখা আছে। সেটি হলো প্যাথলজিক্যালি একলেকটিক রাবিশ লিসটার। শুরুতে ইংরেজিতে Pearl বানান থাকলেও পরে a বাদ দেওয়া হয়। এখন পার্লের ইংরেজি বানান perl.
সাধারণ কাজের ইউনিক্স স্ক্রিপ্টিং ভাষা হিসেবে ল্যারি ওয়াল পার্ল তৈরি করেন ১৯৮৭ সালে। এর পর থেকে এতে অনেক পরিবর্তন, পরিমার্জন হয়েছে। ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পার্লের ষষ্ঠ সংস্করণ চালু ছিল। এরপর এর নাম বদলে রাখা হয় রাকু। তবে পার্ল ও রাকু দুটি ভাষারই আলাদা আলাদা উন্নয়ন চলছে। উটের ছবিকে পার্লের লোগো হিসেবে ব্যবহার করে ও’রেইলি মিডিয়া। আর রসুনকে পার্লের লোগো হিসেবে ব্যবহার করে দ্য পার্ল ফাউন্ডেশন।
১৮ ডিসেম্বর ১৯৯১আইবিএম ও সিমেন্স এজি ৬৪ মেগাবাইট ডির্যামের নমুনা দেখায়ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন ও সিমেন্স এজি ৬৪ মেগাবাইটের ডির্যাম (ডাইনামিক র্যানডম অ্যাকসেস মেমোরি) তৈরির ঘোষণা দেয়। এই ডির্যাম তৈরি হয়েছে মুরের সূত্র ধরে। মুরের সূত্রে বলা হয়েছে, প্রতি ১৮ মাস অন্তর একটি সিলিকনে দ্বিগুণসংখ্যক ট্রানজিস্টর ধারণ করানো যাবে। | null |
21598f153a | গুলশান এক্সচেঞ্জের আওতাধীন প্রায় এক হাজার ৪০০ টেলিফোন নম্বর ৯৮২ গ্রুপের নম্বর দিয়ে পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গ্রাহককে তাঁদের নতুন নম্বর জানিয়ে দেওয়া হবে।গতকাল সোমবার বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে (বিটিসিএল) এ পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে।বিটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, এ কাজ আগামী ২২ আগস্ট থেকে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে এ কাজ শেষ করা হলে গ্রাহকের টেলিকম সার্ভিস উন্নততর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।এ ছাড়া গ্রাহকের আবেদনসাপেক্ষে তাঁর টেলিফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগও দেওয়া হবে।বনানী সুপার মার্কেটের চালু সকল টেলিফোন, কামাল আতার্তুক এভিনিউয়ের বিল্ডিং ৮ থেকে ৪২, সড়ক নং ১৭-এর বাড়ি নং ৫ থেকে ৩৫ এবং বা/এ-এর টেলিফোনগুলো, ব্লক সি-এর আংশিক, মহাখালী দক্ষিণ পাড়া ও আইসিডিডিআরবি এলাকার টেলিফোন সংযোগগুলোর নম্বর পরিবর্তনের আওতায় আনা হয়েছে।যেকোনো তথ্যের জন্য মহাখালী ও আইসিডিডিআরবির জন্য ৯৮৮০০৫৩, ৮৮৯১৩০০ এবং অন্য এলাকার জন্য ৯৮৪১৯৭৭, ৯৮৬১২৯৯, ৯৮২০০০০ ও ০১৫৫২৩১০৭৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। | null |
13a965fdc6 | ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় গতকাল সকালে এমএলএম কোম্পানি ইউনিপে টু ইউর দুই কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন গ্রাহকেরা। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সালিস বৈঠকে তাঁদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে লিখিত স্বীকারোক্তি নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। মো. মিজানুর রহমান ও ইকবাল হোসেন নামের ওই দুই কর্মকর্তা পরশুরাম এলাকায় ৮৪ নম্বর এজেন্টের প্রধান বলে জানা গেছে। গ্রাহকেরা জানান, মিজান ও ইকবাল লোভনীয় ফাঁদ পেতে উপজেলার প্রায় এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু ১০ জানুয়ারির পর ইউনিপে টু ইউর সব ধরনের লেনদেন বন্ধ হয়ে গেলে এ দুজন আত্মগোপন করেন। গত শুক্রবার উপজেলার প্রায় ৩০০ গ্রাহক মিলে একটি সভা করে অর্থ আদায়ের জন্য আক্কাস মিয়াকে আহ্বায়ক করে ৬১ সদস্যের কমিটি করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শতাধিক গ্রাহক গতকাল সকালে মোটরসাইকেলে করে মিজানের মির্জানগর ইউনিয়নের উত্তর কাউতলী গ্রামের বাড়ি ঘেরাও করে তাঁকে ধরে মারধর করেন।খবর পেয়ে পরশুরাম থানা পুলিশের একটি টহল দল মিজানের বাড়িতে যায়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা সদরে নিয়ে আসে। ইতিমধ্যে তাঁকে আটকের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁকে থানায় উপজেলা সদরে নেওয়ার পথে সড়কে প্রায় ৩০০-৪০০ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক মারধরের চেষ্টা করেন। এর মধ্যে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা কোলাপাড়া গ্রাম থেকে ইকবালকে ধরে আনেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার ও কয়েকজন কাউন্সিলরের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ সড়কে ইসলামি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে এক সালিস বৈঠক হয়। এতে কোম্পানি টাকা না দিলেও তাঁরা এক মাসের মধ্যে গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করবেন বলে ছয়টি স্ট্যাম্পে সই দেন। মিজান জানান, ফেনীতে ইউনিপে টু ইউর হয়ে তিনিসহ মোট আটজন প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। ইকবালসহ তিনি পরশুরাম থেকে গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় চার কোটি টাকা আদায় করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন জানান, মিজান ও ইকবাল লিখিত দিয়েছেন, কোম্পানি টাকা না দিলেও গ্রাহকের টাকা তাঁরা পরিশোধ করবেন। | null |
w1op7ayywu | ব্যবহারকারীরা বিষয় উল্লেখ করলেই সে বিষয়ে পুরো ই-মেইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিখে দেবে আউটলুক। এ জন্য শিগগিরই নিজেদের ই-মেইল অ্যাপটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সুবিধার নতুন টুল যুক্ত করতে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। টুলটি চালু হলে ব্যবহারকারীদের লেখা ই-মেইলের বানান বা ভাষাগত কোনো ভুল থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক করে দেবে আউটলুক। এর ফলে দ্রুত নির্ভুলভাবে ই-মেইল পাঠানোর সুযোগ পাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুলটি ই-মেইল লিখে দেওয়া ছাড়াও অন্যদের পাঠানো ই-মেইলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংক্ষেপে জানাতে পারে। ফলে অন্যদের পাঠানো আকারে বড় ই-মেইল না খুলেই সেখানে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। টুলটি ব্যবহার করে চাইলে অন্যদের পাঠানো ই-মেইলের ফিরতি বার্তাও পাঠানো যাবে। আগামী নভেম্বর থেকে মাইক্রোসফট ৩৬৫ ব্যবহারকারীদের জন্য টুলটি উন্মুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ব্যবহারকারী এ সুবিধা পাবেন।
আউটলুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সুবিধার টুলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইল লিখে দিলেও সেগুলো সম্পাদনা করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। অর্থাৎ খসড়া ই-মেইলে থাকা শব্দ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি চাইলে নতুন তথ্যও যুক্ত করা যাবে। ফলে ই-মেইলে তথ্য ভুল বা বাদ পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, গত মার্চ থেকেই আউটলুকসহ নিজেদের বিভিন্ন প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল চালুর জন্য কাজ করছে মাইক্রোসফট। এরই ধারাবাহিকতায় মাসখানেক ধরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আউটলুক ব্যবহারকারীদের ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সুবিধার টুলটির কার্যকারিতা পরখ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র:সিএনএন | 3,874 |
4280c117be | হলদে রঙের পোশাক আর চুলে ফুলের ছোঁয়া—বসন্তের প্রথম দিনটিতে রঙিন এই সাজে যেন ধরা দেয় প্রকৃতি
ফাগুনের পরশে যে উঠি শিহরিয়া,
ফুলেরে কাছে চাহি আপন করিয়া।
ফাল্গুন আর ফুল। একই সুতায় গাঁথা দুটি শব্দ। সপ্তাহ পেরোলেই শুরু হয়ে যাবে ঋতুরাজ। বারান্দার ছোট্ট গাছেও ফাল্গুনের পরশ অনুভব করা যাচ্ছে। সজীব পাতায় প্রাণের স্পন্দন, কোনোটাতে আবার একটি–দুটি করে ফুলেরও আগমন। রাজধানীর সড়কে রাধাচূড়ার উপস্থিতিটাও প্রতিবেদনটি লেখার ফাঁকেই চোখে পড়ল।
ফুল ভালোবাসেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। উৎসব–আনন্দে ফুলকে বুঝি আরও আপন করে নেওয়া হয়। উৎসব যদি হয় বসন্তকে ঘিরে, তবে তো কথাই নেই। বাঙালি নারী শাড়িতে অনন্য, আর বসন্ত উৎসবে ফুলের ব্যবহারে তাঁর সাজ পায় পূর্ণতা।
গলায়, হাতে, কানে গয়না হিসেবে পছন্দমতো যেকোনো ফুলই ব্যবহার করতে পারেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফুলের ‘হেডব্যান্ড’। এটি পরতে পারেন এবারও। চাইলে একধরনের ফুল দিয়েই পূর্ণ করতে পারেন আপনার সাজ। আবার মানানসই একাধিক ফুলের সমন্বয়ও করতে পারেন। যে সাজে আপনি নিজে স্বচ্ছন্দ, সে সাজেই আপনি সুন্দর। এমনটাই জানা গেল সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র পারসোনার পরিচালক নুজহাত খানের কাছ থেকে। পোশাকের বেলাতেও ঠিক তাই। শাড়ি যেমন বাঙালি উৎসবের জন্য যথার্থ, তেমনি কুর্তা, স্কার্ট, সারারা, এমনকি জিনস-টপসের মতো যেকোনো পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গেও ফুলের সাজ মানানসই, যদি আপনি তাতে স্বচ্ছন্দ হন।
খুঁতের ডিজাইনার ঊর্মিলা শুক্লা জানালেন, শাড়িতে বসন্তের হলুদভিত্তিক রঙের পাশাপাশি কচি পাতার হালকা সবুজ রং ও টিয়া রংও এনেছেন তাঁরা। হালকা নকশা রয়েছে তাঁতের সুতি শাড়িতে। হালকা ধাঁচের নকশার পোশাকের সঙ্গে ফুলের গয়না পরলে ফুলের মাধুর্যটা ফুটে ওঠে। তবে কেউ খানিকটা ভিন্নতা আনতে চাইলে একটু ভারী নকশার শাড়ির সঙ্গে ফুল দিয়ে হালকাভাবেও সাজতে পারেন।
জারা’স বিউটি লাউঞ্জ অ্যান্ড ফিটনেস সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, ‘বসন্ত মানেই রঙের ছড়াছড়ি। বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী সাজে খোঁপায় গাঁদা ফুল, সঙ্গে লাল টিপ কপালে। রঙিন ফুলের সাজে বসন্তের আমেজ। চুল খোলা রাখলেও এক পাশে ফুল দেওয়া হয়। চুলের জন্য বড় আকারের ফুল বেছে নিলে একটা ফুলই থাক, অন্য গয়নাও একটু হালকাই হোক। ফুল ছোট আকারের হলে অবশ্য একাধিক ফুল নেওয়া যায়। মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা কিংবা ক্যালেন্ডুলা ফুলেল মিশেল হতে পারে। মেকআপ করার সময় সেদিনকার আবহাওয়ার দিকে একটু খেয়াল রাখা ভালো।’
ফুলের ফাল্গুনে কতই না ফুল। সতেজ, রঙিন সব ফুল। একটু লম্বা সময় পর্যন্ত সতেজ থাকে গোলাপ, গাঁদা, কাঠগোলাপ, গ্লাডিওলাস, বেবি’স ব্রেথ, জিপসি, প্যান্সি, হাইড্রেনজিয়া, বেলি, চায়না বেলি, ক্রিসেন্থিমাম, জারবেরা, অর্কিড, ডালিয়া, ডেইজি, বেগুনি ফুল। আবার দেখতে চমৎকার হলেও বাগানবিলাস বা কৃষ্ণচূড়ার মতো ফুল খুব বেশিক্ষণ তাজা থাকে না। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে যেমন ফুলের রং বেছে নেওয়া যায়, তেমনি রঙের বৈপরীত্যও আনা যেতে পারে। হয়তো আপনি বাসন্তী শাড়ি পরছেন, এর সঙ্গে নিলেন বাহারি রঙের ফুল। চাইলে কিন্তু ওই শাড়ির সঙ্গেই মেরুন বা সাদা বা একেবারে বাসন্তী রঙের ফুলও বেছে নিতে পারেন। তবে সাজে ফুলকেই প্রাধান্য দিতে চাইলে (অর্থাৎ ফুলকে প্রাধান্য দিতে চাইলে) পোশাক ও ফুলের রঙে বৈপরীত্য আনতে পারেন কিংবা নানা রঙের ফুল কাজে লাগাতে পারেন। এমন আরও নানা পরামর্শ দিলেন নুজহাত খান—
মেকআপ একটু হালকা হলেই ভালো। সাজে ন্যুড রং, বাদামি, লাল, মেরুন, গেরুয়া, কালো রং ব্যবহার করা যেতে পারে। বড়জোর একটু সবুজের ছোঁয়া আনা যেতে পারে।
সাজে ফুলকে প্রাধান্য দিতে চাইলে পোশাক বা অন্যান্য গয়নায় জাঁকজমকপূর্ণ ভাব এড়িয়ে চলুন
চুলের বেণিতে ফুল জড়ানো যেতে পারে নানাভাবে। বেণিতে জড়াতে পারেন ফুলের মালা কিংবা আটকে নিতে পারেন নানা আকারের ফুল। বেণি সাজাতে পারেন ফুল দিয়ে।
খোঁপায় যেমন ফুলের মালা জড়ানো যায়, তেমনি খোঁপার এক পাশ (কিংবা দুপাশ) থেকে ফুলের মালা একটু ঝুলিয়েও দেওয়া যায়।
সাজে ভিন্নধারা আনতে তাজা ফুলের পাপড়ি বা ছোট ফুল আটকে নিতে পারেন কপালের এক পাশে। ফুল আটকে নিতে চোখের কৃত্রিম পাপড়ি আটকানোর আঠা (আইল্যাশ গ্লু) বা ত্বকের উপযোগী অন্য আঠার সাহায্য নিতে পারেন।
যে ফুল দিয়ে যেভাবেই সাজুন না কেন, ব্যবহারের আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন, যাতে কোনো ময়লা বা পোকামাকড় না থাকে।
সকালে যাঁরা কর্মক্ষেত্রে দৌড়াবেন, তাঁদের অনেকেই হয়তো ফুল দিয়ে সাজবেন না। বিকেল, সন্ধ্যা কিংবা রাতের আগে হয়তো নিজের দিকে তাকানোর ফুরসতও মিলবে না তাঁদের। চুলে গুঁজে নিতে পারেন একটি ফুল। না হয় সঙ্গের ব্যাগেই জড়িয়ে নিলেন গাঁদা ফুলের একটা মালা। রইল বসন্ত আপনার ব্যাগে আর পোশাকে থাকল হলুদ রঙের ছোঁয়া। | 2,294 |
476b25dd45 | চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে ১৪৬টি স্বর্ণবার এবং ৯৮টি স্বর্ণের গয়না জব্দ করেছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। আটক স্বর্ণবার ও গয়নার ওজন ১৭ কেজি ৪০০ গ্রাম। এ ঘটনায় মীর শাহনেওয়াজ নামে ওই যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে মাসকট-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি বিমান চট্টগ্রামে অবতরণ করে। এ সময় বিমানের যাত্রী মীর শাহনেওয়াজ অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। সন্দেহজনক আচরণের খবর পেয়ে শুল্ক কর্মকর্তারা মীর শাহনেওয়াজকে বিমান থেকে নামিয়ে তল্লাশি করে এসব স্বর্ণবার জব্দ করেন। জব্দ করা প্রতিটি স্বর্ণবারের ওজন ১০ তোলা। এ হিসাবে এক হাজার ৪৬০ তোলা বা ১৭ কেজি ওজনের স্বর্ণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৪৭টি আংটি, ২৯টি কানের দুল. ১৪টি লকেট এবং আটটি স্বর্ণের চুরিও জব্দ করা হয়। এসব গয়নার ওজন প্রায় ৪০০ গ্রাম। উদ্ধার করা স্বর্ণের মূল্য আট কোটি ১৫ লাখ টাকা। বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সুশান্ত পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রীর ব্যাগে টেপ মোড়ানো অবস্থায় এসব স্বর্ণের বার লুকানো ছিল। আটক যাত্রীকে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। জব্দ করা স্বর্ণবার কাস্টম হাউসের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ’স্বর্ণসহ যাত্রী আটকের ঘটনায় কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউর রহমান বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অন্যদিকে জব্দ স্বর্ণ পরীক্ষা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আটক মীর শাহনেওয়াজের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর খরণদ্বীপে। আটকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শফি ও বরকত নামের দুই ব্যক্তি তাঁকে এই স্বর্ণের বারগুলো দেন। ঢাকায় যাওয়ার পর তাদের লোকজন এসব স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। নিয়মিত মাসকট থেকে বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করলেও প্রথমবার তিনি স্বর্ণের চালান বহন করছিলেন বলে দাবি করেন শাহনেওয়াজ। | null |
m27t0wj9wf | গত ১৭ নভেম্বর রাজধানীর পল্লবীতে মরদেহ পাওয়া তানভীর (২৪) খুন হয়েছিলেন মাদক ব্যবসায়ীদের হাতেই। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, তানভীর নিজেও একসময় মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু পরে সেখান থেকে সরে আসেন। এরপর মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভিন্ন সময় তথ্য দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
১৬ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে বের হন তানভীর। রাতে তিনি বাসায় ফেরেননি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন সকালে পল্লবীর সিটি করপোরেশনের বহুতল ভবনের নিচে তানভীরের মরদেহ পাওয়া যায়। ওই মার্কেট নির্মাণের পর থেকে খালি পড়ে আছে।
এ ঘটনায় তানভীরের পরিবার হত্যা মামলা করে। তানভীর পরিবারের সঙ্গে পল্লবীতে থাকতেন।
পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মাদকের বিষয়ে র্যাব ও পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তানভীরকে ডেকে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে চারতলা থেকে ফেলে দেন মাদক ব্যবসায়ীরা।
পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, নিচে পড়ে থাকা তানভীরের দুই পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। মাথার বাঁ পাশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল।
এখন পর্যন্ত এ হত্যা মামলায় তিন বিহারি যুবককে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন জুয়েল (২৪), কাল্লু ওরফে জাহিদ (২৩) ও রহিদ ওরফে বাহুবলী (২০)। তাঁদের মধ্যে জুয়েল সম্প্রতি ঢাকার আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে তিনজনই আদালতে নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেছেন। তাঁদের ছাড়াও বাবুল নামের একজন পলাতক।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও জুয়েলের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পল্লবী থানা-পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুয়েল ইয়াবা সেবন করেন ও ব্যবসা করেন। ১৭ নভেম্বর রাত তিনটার দিকে তিনি পল্লবীতে সিটি করপোরেশনের মার্কেটের চারতলায় গিয়ে দেখেন, তানভীরকে আসামি রহিদ ও কাল্লু গেঞ্জি ধরে টেনে ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আর বাবুল পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছেন। একপর্যায়ে রহিদ তানভীরকে চারতলার মেঝেতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে রাখেন। বাবুল তানভীরকে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পেটাতে থাকেন আর কাল্লু এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একপর্যায়ে তানভীর অচেতন হয়ে পড়েন। তখন আসামিদের মধ্যে দুজন তানভীরের দুই হাত ও বাবুল দুই পা ধরে তাঁকে চারতলার লিফটের ফাঁকা জায়গা থেকে নিচে ফেলে দেন। এরপর সবাই যার যার মতো দেয়াল টপকে চলে যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ক্রিকেটের স্টাম্প–সদৃশ ভাঙা কাঠের লাঠি জব্দ করেছে।
পুলিশের তথ্য বলছে, মাদক কারবারি জুয়েলের বিরুদ্ধে ছয়টি মাদকের মামলা রয়েছে। অপর আসামি রহিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। পল্লবী এলাকায় তিনি নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। অপর আসামি কাল্লুর বিরুদ্ধেও মাদকের একটি মামলা রয়েছে।
নিহত তানভীরের ভাই ইমরান বলেছেন, ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি। | null |
9dc5ef9d60 | যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে ব্রিটিশ সেনাদের পুরোপুরি সরিয়ে নিতে চান। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। গত শুক্রবার কানাডার টরন্টোয় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। জি-৮ ও জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে ডেভিড ক্যামেরন সেখানে রয়েছেন।আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে এটাই যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম পরিষ্কার আভাস। ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে সব সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘আমি তো তা-ই চাই, এতে কোনো ভুল হবে না। আরও পাঁচ বছর সেখানে আমরা থাকতে চাই না। সেখানে আমরা এর মধ্যে নয় বছর কাটিয়েছি।’ ক্যামেরন বলেন, ‘আমরা কাজে নেমে পড়তে চাই, যাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসে। আমরা চাই, পুরোপুরি না হলেও কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক, যাতে আফগানরা নিজেরাই দেশ চালাতে পারে। এতে ব্রিটিশ সেনারা দেশে ফিরে যেতে পারবে।’ তবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সেনা প্রত্যাহারে কঠোরভাবে সময়সীমা অনুসরণে তিনি ইচ্ছুক নন। এর আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডেভিড ক্যামেরন আভাস দেন, ২০১৫ সালের মধ্যে তিনি ব্রিটিশ সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে।ক্যামেরন ও তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়াম ফক্স এরই মধ্যে এটি পরিষ্কার করেছেন যে আফগানিস্তানে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ধীর অগ্রগতিতে তাঁরা অধৈর্য হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে, স্থানীয় নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণে তেমন অগ্রগতি নেই। তারা এখনও এককভাবে নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে সক্ষম হননি। দ্য গার্ডিয়ান ও রয়টার্স। | null |
43a78df4b1 | বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনা অনুসন্ধানে কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোক্তার হোসেনসহ ছয় কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক জুলফিকার আলী আজ বুধবার তাঁদের তলব করে নোটিশ পাঠান।অন্য পাঁচজন হলেন, জয়নাল আবেদীন, মাসুদ আহমেদ খান, গোলাম সারোয়ার, হাফিজ উদ্দিন ও জোবায়ের মঞ্জুর।৭ ডিসেম্বর তাঁদের সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।দুদক সূত্রে জানা যায়, ওয়াহিদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী ২০০৫ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন। পরে তিনি চিকিৎসার নামে সিঙ্গাপুর পালিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে কৃষি ব্যাংক থেকে তাঁর নেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় শ কোটি টাকা। | null |
1422ade908 | ২০১১ সালের জুনে অনুষ্ঠিত কেমব্রিজ ‘ও’ লেভেল, আইজিসিএসই, এএস এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আজ শনিবার সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে এর আয়োজন করে যৌথভাবে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এক্সামিনেশন্স (সিআইই) ও ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিল।এবার ৪৯ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়, তার মধ্যে ১৩ জন কোনো একক বিষয়ে সারা বিশ্বে এবং ২৮ জন বাংলাদেশে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন পেয়েছে।বাংলাদেশে ততটা প্রচলিত নয়—এমন বিষয়ে কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের ‘হাই অ্যাচিভমেন্ট’ পুরস্কার দেওয়া হয়। তা ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সমষ্টিগতভাবে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জনকারী শিক্ষার্থীরাও পুরস্কার লাভ করেন।সিআইইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক অ্যান্ড্রু সর্টওয়েল, বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর রোজমেরি আরনট, সিআইইয়ের স্কুল উন্নয়ন ব্যবস্থাপক সুজি চৌধুরীসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি। | null |
5d014c3036 | ক্রাঞ্চ টাইম, মানে গেমের শেষের টান টান উত্তেজনা। যখন আসল খেলাটা খেলতে হবে, যখনগেমএকদম ঠিক জায়গায় থাকে।তো, শেষ সময়ে আপনাকে বার্ডিকে সাহায্য করতে হবে এবং বার্ডির বন্ধুদের সঙ্গে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। থাকবে বল, পাখি, খরগোশ, পাহাড়, কঙ্কাল, ইয়া বড় বড় ড্রাগন। গেমের গ্রাফিকস ও শব্দ এমন রোমাঞ্চিত করবে যে আপনি একেকটা লেভেল শেষ না করে উঠতেই চাইবেন না।ডব্লিউএফ ডেভেলপমেন্টের বানানো চমৎকার এই গেমটিতে আপনাকে বার্ডি হয়ে দৌড়াতে হবে, লাফাতে হবে, এমনকি উড়তেও হবে। বেঁধে দেওয়া সময়ে লেভেল শেষ করতে হবে। যত বেশি কয়েন জমাবেন, তত বেশি বন্ধুদের বাঁচাতে পারবেন। সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই সময়কে থামাতে ঘড়িও সংগ্রহ করতে হবে
বার্ডির হয়ে।
আরও আছে জেমস। এই রত্ন সংগ্রহ করতে গিয়ে পর্বতের সঙ্গেবাড়ি খেয়ে আহত হওয়া যাবে না। আছে ফাদার টাইম, যা রত্নের মধ্যে লুকানো আছে। আপনার শুধু অজানা সময়ের বেড়াজাল ভেঙে খুঁজে নিয়ে জমিয়ে রাখতে হবে। তাহলে বার্ডিরবন্ধুদের চ্যালেঞ্জ লুফে নিয়ে সব বাধাবিপত্তি পার করার জন্য আপনি তৈরি তো?
নামানোর ঠিকানা:
অ্যান্ড্রয়েড: http://bit.ly/M21CrunchTimeAndroid | null |
16daa9db2d | রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জামাত খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদা দাবির মামলায় নগরের নিজ বাসা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকার প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার দিবাগত রাতে বোয়ালিয়া থানায় এই মামলা করেন।মামলার এজাহারে বলা হয়, জামাত খান দীর্ঘদিন ধরে তাঁর (বাদী) কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনে রাস্তার ওপর তাঁকে পেয়ে গালাগাল করেন ও মেরে ফেলার হুমকি দেন (জামাত খান)। এর প্রতিবাদ করেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁর নামে নোংরা ভাষায় লেখা পোস্টার গত ১ জানুয়ারি নগরের বিভিন্ন স্থানে সেঁটে দেন জামাত খান। ২ জানুয়ারি তিনি নগরের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁর কাছে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় তিন-চারজন লোকসহ জামাত খান তাঁকে রেস্তোরাঁর পেছনে ডাকেন। তিনি সেখানে গেলে আসামি পকেট থেকে অস্ত্র বের করে বলেন, কালকের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দিলে মেরে ফেলা হবে। এ সময় দুই ব্যবসায়ী এগিয়ে এলে আসামি ও তাঁর লোকজন মোটরসাইকেলযোগে চলে যান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) সকালে থানার ২০ জন পুলিশ সদস্য গিয়ে নগরের ষষ্ঠীতলার বাসা থেকে জামাত খানকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁকে রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। হাকিম আমিরুল ইসলাম তিন দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়ে জামাত খানকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর বোয়ালিয়া থানায় জামাত খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজশাহীর বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা নিয়ে আমি আন্দোলন করছি। | null |
xks8n0n4sy | সাংবাদিক সেতারা মূসা মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন। সেতারা মূসার মেয়ে সাংবাদিক পারভীন সুলতানা ঝুমা মায়ের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।
সেতারা মূসা ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান অবজারভারের সম্পাদক প্রয়াত আবদুস সালামের মেয়ে এবং প্রয়াত সাংবাদিক এবি এম মূসার স্ত্রী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তিন মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সেতারা মূসার জন্ম ১৯৪০ সালে তাঁর নানার বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর করেন। দৈনিক পূর্বদেশ, দৈনিক জনতা, দৈনিক আওয়াজসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন সেতারা মূসা। রেড ক্রিসেন্ট, পরিবার পরিকল্পনা সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
আজ বাদ এশা মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের মসজিদে সেতারা মূসার জানাজা হবে। আগামীকাল বুধবার ফেনীর কুতুবপুর গ্রামে স্বামী এবি এম মূসার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে। | null |
qqdpxku5g2 | প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এ স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এর জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কাশিমপুর কারাগারে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আমিনুল ইসলাম।
সিআইডি পরিচয়ে সাভারের বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে রমনা থানার পুলিশ। অন্যদিকে শামসুজ্জামানের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি শুরু হয় বেলা দুইটার দিকে। তখন হাজতখানা থেকে শামসুজ্জামানকে আদালতে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাঁকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
গত বুধবার ভোর চারটার দিকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শামসুজ্জামানের। তুলে নেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা হয়। এ মামলার বাদী যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া। যদিও মামলার বিষয়টি জানা যায় বুধবার দুপুরের দিকে। তবে গতকাল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা নতুন আরেকটি মামলায়। এই মামলা হয় তাঁকে তুলে নেওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর গত বুধবার মধ্যরাতে।
রমনা থানার যে মামলায় শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, সেই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)।
২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ারের সময় ‘গ্রাফিক কার্ডে’ ছবির অমিলকে কেন্দ্র করে দেশের ভাবমূর্তি ও অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ এনে মামলা দুটি করা হয়। যদিও ফেসবুকের ওই পোস্টে অসংগতি দ্রুতই নজরে পড়ে এবং তা সরিয়ে নিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা প্রথম আলোর সমালোচনা করে আসছেন। একই সঙ্গে দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করছে।
প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদ, নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (নোয়াব) বিভিন্ন মানবাধিকার, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। | null |
c5b4f30d1d | গ্রাহাম থর্প ‘গুরুতর অসুস্থ’!
ইংল্যান্ডের সাবেক তারকা ও বর্তমানে আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ থর্প গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। থর্পের ঠিক কী হয়েছে, সেটি জানা যায়নি। পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন (পিসিএ) থর্পের অসুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পিসিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘গ্রাহাম থর্প গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমাদের সমবেদনা তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রতি। তবে তিনি কী ধরনের রোগে আক্রান্ত, সে বিষয় নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।’
ইংল্যান্ডের সাবেক এই ক্রিকেটার ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন। অ্যাশেজে ৪-০ ব্যবধানে হারের পর ইংলিশ ক্রিকেটে যে পালাবদল চলছে, তাঁর অংশ হিসেবে চাকরি হারিয়েছেন থর্প। এর পরপরই তিনি আফগানিস্তানের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। গত মার্চ থেকে তিনি আফগানিস্তানের কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। এর আগে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলসের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন স্টিভ স্মিথ–ডেভিড ওয়ার্নারদের মতো ক্রিকেটারদের ‘গুরু’ হিসেবে।
সারের সাবেক এই ক্রিকেটার নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ড দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানই ছিলেন। খেলেছেন ১০০ টেস্ট। সেখানে ৪৪.৬৬ গড়ে তাঁর রান ৬ হাজার ৭৪৪। আছে ১৬টি শতরান। থর্প ওয়ানডে খেলেছেন ৮২টি। ১৯৯৬ ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপে তিনি ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। | 7,898 |
301727fa97 | দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণার মাঠে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ, স্বজনপ্রীতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে অন্যায় সুবিধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন তিনি।
দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল। তিনি জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদ পারভেজের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর শিকদার, জেলা সহসভাপতি মীর তহিদুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সুধীর চন্দ্র শীল, মনতোয়াজ আহমেদ প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে মেয়র প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টা পর্যন্ত শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সড়ক দখল করে মঞ্চ তৈরি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সভা করা হয়েছে। সভাসহ পুরো শহর এলাকায় কমপক্ষে ৩০টি মাইক ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশি পাহারায় সমাবেশ করা হয়েছে এবং জরুরি সেবাদানকারী দমকল বাহিনীর গাড়ি ব্যবহার করে সেখানে রাস্তায় পানি ছিটানো হয়েছে। সভা চলাকালে শহরজুড়ে যানজটে নাগরিক দুর্ভোগ, ভোগান্তি এবং চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে; যা আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুঠোফোনে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
প্রশাসন নির্বাচনী প্রচারণায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, এমন অভিযোগ করে আহমেদ শফি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত আটটায় শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকায় লাঙ্গল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হ্যান্ডমাইক কেড়ে নেন। অথচ তখনো শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা চলছিল।
আহমেদ শফি বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের জনপ্রিয়তা ও বিজয় নিশ্চিত বুঝে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভোট গ্রহণ এবং ফলাফল প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনারের কাছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। অন্যথায় এর সব দায়ভার স্থানীয় ও প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনারকে বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ করেননি। রাত আটটার পরে মাইক বাজানো নির্বাচনী প্রচারণার বিধির লঙ্ঘন। সে ক্ষেত্রেই কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট হয়তো মাইক বাজানো নিষেধ করেছেন। পক্ষপাতমূলক আচরণের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন তার নিজস্ব গতিতে চলে। পক্ষপাতের কোনো সুযোগ নেই। এর আগেও অন্য একজন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা তৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাশেদ পারভেজের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত কাস্তে প্রতীকের প্রার্থী মেহেরুল ইসলামও। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদ পারভেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য জানিয়েছিলেন। আজ শুক্রবার সেই নোটিশের জবাবে রাশেদ পারভেজ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার শহরের মডার্ন মোড়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা কোনো নির্বাচনী সভা ছিল না। মূলত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। | 1,118 |
44f14648c6 | কোটিপতি ব্রিটিশ প্রেমিক অ্যান্ডু বুশকে হত্যা করার দায়ে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে স্লোভাকিয়ার সুন্দরী মডেল মারিয়া কুকুকোভার (২৬)। গতকাল মঙ্গলবার স্পেনে সেভিলার একটি আদালতের বিচারক আর্নেস্তো মানজানো এই রায় দেন।
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সাবেক প্রেমিক বুশের বাড়িতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করায় আরও ছয় মাসের সাজা দিয়েছেন আদালত। ক্ষতিপূরণ হিসেবে বুশের মেয়ে এলি মাসন-বুশকে ১ লাখ ৬০ হাজার ইউরো ও তাঁর বোন র্যাচেলকে ৪০ হাজার ইউরো দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল বুশকে তিনটি গুলি করে মারেন কুকুকোভা। বুশ এ সময় নতুন প্রেমিকা রাশিয়ার মারিয়া করোতায়েভার সঙ্গে বাইরে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। প্রথম গুলিটি বুশের বাহুতে লাগে। দ্বিতীয় গুলিটি বুশের মাথার বাঁ পাশে লাগে। তৃতীয় গুলিতে বুশের মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায়। আর এ ঘটনার চার দিন পর মারিয়া স্পেন থেকে পালিয়ে স্লোভাকিয়ায় চলে যান। এক মাস পর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।আদালতে রায় ঘোষণার সময় এই সুন্দরী কান্নায় ভেঙে পড়েন। | null |
y7n1hlhqyo | বিশ্বকাপ মানেই নানামুখী রোমাঞ্চ ও উত্তেজনা। বিশেষ করে নকআউট পর্বে গিয়ে এই রোমাঞ্চ অন্য মাত্রা পায়। কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতেও দেখা মিলেছে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের। দুটি ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে টাইব্রেকে। যেখানে নায়ক হয়েছেন দুই গোলকিপার।
জাপানের বিপক্ষে পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক হয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার দমিনিক লিভাকোভিচ, আর স্পেনের বিপক্ষে ইতিহাস গড়েছেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু। টাইব্রেকারের গোল খেয়ে খলনায়ক না হলেও, গোল বাঁচিয়ে নায়ক হওয়ার দারুণ সুযোগ থাকে। তেমনই কিছু পেনাল্টি ঠেকানোর রোমাঞ্চকর গল্প জেনে নিন:
হারাল্ড শুমাকার বনাম ফ্রান্স (১৯৮২)
১৯৮২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে জার্মানিকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেন হারাল্ড শুমাকার। তবে সেদিন শুমাকারের দলকে বাঁচানোর সুযোগই পাওয়ার কথা ছিল না। সেদিন ফরাসি ডিফেন্ডার প্যাট্রিক ব্যাটিসটনকে মারাত্মকভাবে ফাউল করেন শুমাকার। নিশ্চিত লাল কার্ড দেখার মতো অপরাধ হলেও, রেফারি সেটি পাত্তা দেননি। এরপর অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। যেখানে শুমাকার ম্যাক্সিমে বোসিস এবং দিদিয়ের সিক্সের পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক হয়ে দেশকে ফাইনালে নিয় যান। ফাইনালে অবশ্য ইতালির কাছে ৩–১ গোলে হেরে যায় পশ্চিম জার্মানি।
জেনস লেম্যান বনাম আর্জেন্টিনা (২০০৬)
সেবার বিশ্বকাপে তাঁকে গোলকিপার করা নিয়ে ছিল বিতর্ক। তখনো খেলছিলেন জার্মানির ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালের খেলার নায়ক অলিভার কান। তবে কানের বদলে লেম্যানকে প্রথম গোলরক্ষক ঘোষণা করেন কোচ ইউর্গেন ক্লিন্সমান। যার প্রতিদান তিনি দিয়েছেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে। প্রতিটি স্পট কিকে সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে লেম্যান ঠেকিয়ে দেন রবার্তো আয়ালা ও এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসোর পেনাল্টি। পরে অবশ্য সেমিফাইনালেই থেমে যায় জার্মানির বিশ্বকাপ–যাত্রা।
রিকার্ডো বনাম ইংল্যান্ড (২০০৬)
২০০৪ সালের ইউরোতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে পর্তুগালের নায়ক হন রিকার্ডো। ইংলিশরা প্রতিশোধের উপলক্ষ পায় দুই বছর পর বিশ্বকাপে। তবে সেবারও রিকার্ডো–বাধা পেরোতে পারেনি ইংলিশরা। সেই ম্যাচে রিকার্ডো বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম গোলকিপার হিসেবে ঠেকিয়ে দেন তিনটি পেনাল্টি। যেখানে তিনি ঠেকান ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড, স্টিভেন জেরার্দ এবং জেমি ক্যারাঘারের শট।
টিম ক্রুল বনাম কোস্টারিকা (২০১৪)
২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে দারুণ এক চমক দেন নেদারল্যান্ডস কোচ লুইস ফন গাল। পেনাল্টি স্পেশালিস্ট গোলকিপার হিসেবে জেসপার ক্লাসেনের বদলে নামিয়ে দেন টিম ক্রুলকে। এই বাজি দারুণভাবে কাজে লেগে যায়। দুর্দান্ত নৈপুণ্যে পেনাল্টি ঠেকিয়ে ডাচদের সেমিফাইনালে ওঠার নায়ক হয়ে ওঠেন ক্রুল। বিশ্বকাপ ইতিহাসে অন্যতম এক চমকপ্রদ গল্প হয়ে আছে ক্রুলের বদলি নেমে পেনাল্টি ঠেকানোর ঘটনা।
দানিয়েল সুবাসিচ বনাম ডেনমার্ক (২০১৮)
২০০৬ সালে রিকার্ডোর তিন পেনাল্টি ঠেকানোর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটান ক্রোয়েশিয়ার সুবাসিচ। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে তিনিও একে একে তিন ড্যানিশ খেলোয়াড়ের শট ঠেকিয়ে দেন। ক্রোয়াট এই গোলকিপার সেদিন ঠেকান ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, লাসে শোনে ও নিকোলাই ইয়োর্গেনসেনের পেনাল্টি শট। সে বিশ্বকাপে রানার্সআপ হয়েছিল ক্রোয়েশিয়া।
ডোমিনিক লিভাকোভিচ বনাম জাপান (২০২২)
রিকার্ডো ও সুবাসিচের পর তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে তিনটি পেনাল্টি ঠেকানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন আরেক ক্রোয়াট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। এবারের কাতার বিশ্বকাপেই এই কীর্তি গড়েছেন দিনামো জাগরেভের এই গোলরক্ষক। দারুণ খেলে শেষ ষোলোয় ওঠা জাপানকে থামিয়েছেন লিভাকোভিচই।
ইয়াসিন বুনু বনাম স্পেন (২০২২)
মরক্কোর ইতিহাস গড়ার অন্যতম নায়ক ইয়াসিন বুনু। স্পেনের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে দারুণ গোলকিপিং করা বুনু পেনাল্টি শুটআউটেও ছিলেন অনবদ্য। পেনাল্টিতে এই সেভিয়া গোলরক্ষক ঠেকিয়েছেন কার্লোস সোলের ও সের্হিও বুসকেটসকে। তাঁর নৈপুণ্যে ২০১০ সালে ঘানার পর দ্বিতীয় আফ্রিকান দেশ হিসেবে মরক্কো উঠল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। | null |
33d1d94757 | মেক্সিকোর বিখ্যাত চিত্রকর ফ্রিদা কাহলোর আঁকা একটি ছবি রেকর্ড পরিমাণ দামে নিলামে বিক্রি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফ্রিদার আঁকা দুই নগ্ন নারীর একটি ছবি নিলামে প্রায় ৬২ কোটি ৫১ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ টাকায় (৮০ লাখ ডলার) বিক্রি হয়েছে বলে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিস জানিয়েছে।
আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৯৩৯ সালে ‘টু ন্যুডস ইন দ্য ফরেস্ট (দ্য আর্থ ইটসেলফ)’ শিরোনামে ফ্রিদা কাহলোর আঁকা ওই ছবিটির আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছিল ৮০ থেকে ১২০ লাখ ডলার। পরে নিলামে তা ৮০ লাখ ডলারেই বিক্রি হয়ে যায়। লাতিন আমেরিকার কোনো চিত্রকরের ছবির এটাই সর্বোচ্চ মূল্য। এর আগে ফ্রিদা কাহলোর কোনো ছবি এত চড়া দরে বিক্রি হয়নি। ২০০৬ সালে নিউইয়র্কের নিলামকারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান সুদেবিস নিলামে ফ্রিদার ‘রুটস’ শিরোনামের একটি ছবি ৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭২০ টাকায় (৫৬ লাখ ডলার) বিক্রি করেছিল। ১৯৯০ সালে ‘দিয়েগো ই ইয়ো’ শিরোনামের একটি ছবি নিলামে ১০ কোটি ৯৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৩০ টাকায় (১৪ লাখ ডলার) বিক্রির মাধ্যমে প্রথম ফ্রিদার ছবির মূল্য মিলিয়ন-ডলারের ঘরে ঢুকে পড়ে।২০১৭ সালে মেক্সিকো শহরে পালাসিও দে বেলাস আর্তেসে এক প্রদর্শনীতে ছবিটি দর্শনার্থীরা দেখতে পারবেন। | null |
2711f91b12 | অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) অব্যবহৃত জমি চীন, জাপান ও ভারতকে দেওয়া হবে বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ তাতে বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য,প্রথম আলোর বাণিজ্য পাতায় ২২ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ‘কেইপিজেডেরে অব্যবহৃত জমি পাবে চীন, জাপান ও ভারত’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সফররত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কোরীয় ইপিজেড থেকে জমি বের করে নিয়ে চীন, জাপান ও ভারতকে দেওয়া হবে। ১৯৯৬ সালে তাদের দুই হাজার ৫০০ একর জমি দেওয়া হয়। কিন্তু তারা ৫০০ একর জমিও ব্যবহার করতে পারেনি।’
এ প্রসঙ্গে এক সংবাদ সংযুক্তি প্রেরণ করেছে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছে, কেইপিজেডের উদ্যোক্তা হিসেবে ইয়াংওয়ান গ্রুপ নানা ধরনের প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও ইপিজেডটি সচল রেখেছে। সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় জমির হস্তান্তর দলিল ১৫ বছরেও কার্যকর হয়নি। তারপর অর্থমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য প্রদান কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে গভীরভাবে হতাশ করেছে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, ২০১২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী মহোদয় সচিবালয়ে তাঁর কার্যালয়ে কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে কেইপিজেডের সমস্যা দ্রুত সমাধানের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। | null |
kabk8zywws | মানুন আর না-ই মানুন, দিন শেষে ফুটবল একটা ব্যবসা। আর ব্যবসা মানেই টাকা উপার্জনের কাণ্ডকারখানা। ট্রান্সফার মার্কেটে এই খেলোয়াড় বিক্রির কাজটিতে কিছু ইউরোপিয়ান ক্লাবকে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ বলা চলে।
অল্প টাকায় খেলোয়াড় কিনে বছর দু-তিনেকে তাঁদের গড়ে তুলে কয়েকগুণ দামে বিক্রি করে দেওয়া—এ-ই হচ্ছে তাদের ব্যবসায়িক কৌশল। প্রতিবছর বিক্রি চলে, প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদীয়মান, প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে আনার কাজ চলে। বছর বছর তাই ক্লাবে নতুন মুখ আসে, পুরোনো মুখ যায়। এভাবে চাকা ঘোরে, ব্যবসা বাড়তে থাকে, স্ফিত হতে থাকে কোষাগার।
নেইমারের কথাই ধরা যাক। ২০১৩ সালে বার্সেলোনা তাঁকে সান্তোস থেকে কিনেছিল ৮৮ মিলিয়ন ইউরোয়, চার বছর পর পিএসজিতে যাওয়ার সময় দাম উঠে যায় ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে। দ্বিতীয় দফার এই বিক্রিতেও একটা লভ্যাংশ গেছে পেলে–পুষে যে ক্লাব তাঁকে বড় করেছে, সেই সান্তোসের কাছে।
তবে সব খেলোয়াড়কে নিয়ে এত বড় অঙ্কের ব্যবসা হয় না। লাভ হয় মূলত স্বল্প ওজনদার ফুটবলার বিক্রি করে। এই খেলোয়াড় বিক্রির ব্যবসায় সবচেয়ে ভালো করা ক্লাবগুলোর বেশির ভাগই ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের বাইরের।
গত এক যুগে খেলোয়াড় বিক্রি করে সবচেয়ে ভালো ব্যবসা করা ক্লাবগুলো নিয়ে এই তালিকা পাওয়া গেছে ট্রান্সফার মার্কেটের সৌজন্যে।
বেনফিকা
সর্বোচ্চ কেনা: দারউইন নুনিয়েজ (৩৪ মিলিয়ন ইউরোয় আলমেরিয়া থেকে)সর্বোচ্চ বিক্রি: দারউইন নুনিয়েজ (৭৫ মিলিয়ন ইউরোয় লিভারপুলের কাছে)
একবিংশ শতাব্দীতে সব মিলিয়ে রেকর্ড ৩৭টি শিরোপা জয়ের কীর্তি আছে বেনফিকার। তবে পর্তুগিজ ক্লাবটির সবচেয়ে বড় সাফল্য সম্ভবত খেলোয়াড় বিক্রির ব্যবসা। এই একটি ক্লাবই গত দুই দশকে এক বিলিয়ন ইউরোর বেশি আয় করেছে ফুটবলার বিক্রি করে।
দুইভাবে খেলোয়াড় জোগাড় করে বেনফিকা। একটি হচ্ছে ক্লাবের একাডেমি থেকে। বেশ কয়েকজন ইউরোপের প্রথম সারির যুব কোচ আছেন এই একাডেমিতে, কিশোরদের গড়ে তুলতে যাঁরা বড় ভূমিকা রাখেন। এই একাডেমি থেকে উঠে আসা জোয়াও ফেলিক্সকে আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে ১২৬ মিলিয়ন আর রুবেন দিয়াজকে ম্যান সিটির কাছে ৬৮ মিলিয়ন ইউরোতে বিক্রি করেছে তারা।
এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সম্ভাবনাময় এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড় বাছাই করে আনার জন্য শক্তিশালী একটা নেটওয়ার্কও আছে বেনফিকার। যার মাধ্যমে তারা আর্জেন্টিনা থেকে আনহেল দি মারিয়া ও পাবলো আইমার, ব্রাজিল থেকে দাভিদ লুইজের মতো ফুটবলারদের খুব কম ফিতে তুলে নিয়ে এসেছিল।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আরও অনেক ক্লাবই তো আছে ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে শীর্ষ পাঁচ লিগের দেশে। সেখানকার চেয়ে পর্তুগিজ ক্লাবে কেন বেশি আসে দক্ষিণ আমেরিকানরা? মূলত পর্তুগালের জলবায়ু, সংস্কৃতি আর ফুটবল স্টাইলের বাড়তি কিছু সুবিধা আছে। দক্ষিণ আমেরিকানদের আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে পর্তুগালে আসতে বেশি কিছু ভাবতে হয় না।
ব্রাজিলের তো ভাষাই পর্তুগিজ। আবার বিদেশি হিসেবে পর্তুগালে খেলার সুযোগ পাওয়াও সহজ। যে কারণে খেলার সুযোগ করে দিতে পারার সুবিধা নিয়ে কম টাকায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার তরুণদের দলে ভিড়িয়ে ফেলে বেনফিকা। ওই তরুণেরাও ধরে নেন, পর্তুগাল তাঁদের ক্যারিয়ারের জন্য ট্রানজিট পয়েন্ট।
ইউরোপের কিছু ছোট ছোট দেশ, যেমন সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া ও সুইডেনের প্রতিভাবান ফুটবলারদের গড়ে তোলায়ও সুনাম আছে বেনফিকার। যেমন স্লোভেনিয়ান গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাককে তারা চার মিলিয়ন ইউরোয় কিনেছিল এনকে অলিম্পিয়া থেকে, পরে আতলেতিকোয় বিক্রি করে দেয় ১৬ মিলিয়নে।
একাডেমির ভিক্টর লিন্ডেলফকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে বিক্রি করে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোয়। আর সর্বশেষ নুনিয়েজকে বিক্রি করে লাভ করে ৪১ মিলিয়ন ইউরো, যাঁকে আলমেরিয়া থেকে কেনা হয়েছিল মাত্র দুই বছর আগে।
পোর্তোসর্বোচ্চ কেনা: দাভিদ কারমো-ব্রাগা, অলিভিয়ের তোরেস-আতলেতিকো, জিয়ান্নেলি ইমবুলা-মার্শেই (২০ মিলিয়নে)সর্বোচ্চ বিক্রি: এদের মিলিতাও (৫০ মিলিয়ন ইউরোয় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে)
২০০০-০১ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত ১২টি শিরোপা জিতেছে পোর্তো, নিয়মিত খেলে চ্যাম্পিয়নস লিগেও। কিন্তু পর্তুগিজ এই ক্লাবেরও খেলোয়াড় কেনাবেচার ব্যবসায় দারুণ সাফল্য। এখন পর্যন্ত তারা ২০ মিলিয়নের বেশি দামে কোনো খেলোয়াড়ই কেনেনি, কিন্তু বিক্রি করেছে ৫০ মিলিয়ন ইউরোতেও।
নতুন মার্কেটে খেলোয়াড় বিক্রিতেও বেশ সাফল্যের উদাহরণ আছে তাদের। গত দুই দশকে পোর্তোর বড় ব্যবসার শুরু ২০০৪ সালে চেলসির কাছে রিকার্দো কারভালিও এবং পাওলো ফেরেইরাকে ৫০ মিলিয়ন ইউরোয় বিক্রির মাধ্যমে।
বেনফিকার মতো পোর্তোরও দক্ষিণ আমেরিকায় প্রতিভাবান ফুটবলার খোঁজায় শক্তিশালী একটা নেটওয়ার্ক আছে। যেমন রাদামেল ফ্যালকাওকে তারা সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন ইউরোয় কিনে এনেছিল রিভার প্লেট থেকে, পরে তাকে আতলেতিকোর কাছে বিক্রি করে সাড়ে ৩৪ মিলিয়ন ইউরো লাভে।
এ রকম আরও আছে ৭ মিলিয়নে সাও পাওলো থেকে আনা এদের মিলিতাও (এক বছরের মাথায় রিয়ালের কাছে ৪৩ মিলিয়ন লাভে বিক্রি), জুনিয়র এফসি থেকে ৭ মিলিয়নে আনা লুইস দিয়াজ (দুই বছর পর লিভারপুলের কাছে ৪০ মিলিয়ন লাভে বিক্রি)। নতুন মার্কেটেও ভালো বিক্রির রেকর্ড আছে পোর্তোর।
২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে হাল্ক ও ব্রুনো আলভেজকে বিক্রি করে ৬২ মিলিয়ন ইউরোয়, যা ওই সময় বেশ বড় অঙ্ক।নিজেদের একাডেমিতে গড়ে তোলা ভিতিনিয়া (পিএসজি), ফাবিও ভিয়েরা (আর্সেনাল) ও ফাবিও সিলভাদের (উলভস) বিক্রি করেও পেয়েছে ১১৬ মিলিয়ন ইউরো।
আয়াক্সসর্বোচ্চ কেনা: স্টিভেন বের্গভেইন, (৩১.৩ মিলিয়ন ইউরোয় টটেনহাম থেকে)সর্বোচ্চ বিক্রি: আন্তনি (৯৫ মিলিয়নে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে)
ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ একাডেমি হিসেবে দীর্ঘদিন পরিচিত ছিল আয়াক্সের একাডেমি। পর্তুগিজ ক্লাবগুলোর তুলনায় এখন আয়াক্সের খেলোয়াড় সরবরাহের হার কমলেও এখনো তা একেবারে কম নয়। চলতি মৌসুমেই ২০৭ মিলিয়ন ইউরোয় বিক্রি করেছে পাঁচজনকে (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে লিসান্দ্রো মার্তিনেজ ও আন্তনিকে, ডর্টমুন্ডে সেবাস্তিয়েন আলারকে, বায়ার্নে রায়ান গ্রাভেনবার্খকে এবং লিওঁতে নিকোলাস তাগলিয়াফিকোকে)।
এ ছাড়া এই ক্লাবের একাডেমি খেলোয়াড়দের মধ্যে পরে ভালো দামে বিকিকিনি হয়েছে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং (৮৬ মিলিয়নে বার্সেলোনায়), ম্যাথিয়াস ডি লিখট (৮৫ মিলিয়নে জুভেন্টাসে), ডনি ফন ডি বিক (৩৯ মিলিয়নে ইউনাইটডে। অন্য ক্লাব থেকে কাউকে এনেও ভালো ব্যবসা করার রেকর্ড আছে।
উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজকে সাড়ে ৭ মিলিয়ন ডলারে গ্রোনিংগেন থেকে কিনে চার বছর পর ১৫ মিলিয়ন লাভে বিক্রি করেছে লিভারপুলের কাছে। হাকিম জিয়েশকেএফসি টোয়েন্টে থেকে আনা হয়েছিল ১১ মিলিয়নে, পরে তাঁকে চেলসিতে বিক্রি করা হয় ৪৪ মিলিয়নে।
লিলসর্বোচ্চ কেনা: জোনাথন ডেভিড (২৭ মিলিয়ন ইউরোয় গেন্ট থেকে)সর্বোচ্চ বিক্রি: নিকোলাস পেপে (৮০ মিলিয়ন ইউরোয় আর্সেনালের কাছে)
ফরাসি লিগের এই ক্লাবকে বলা যায় প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার জোগানদাতা। খেলোয়াড় বিক্রি করা ক্লাবগুলোর মধ্যে গত এক দশকে ইংলিশ লিগকে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় দিয়েছে ২০২০-২১ মৌসুমে লিগ আঁ জেতা ক্লাবটি। যেমন নিউক্যাসলের কাছে ইয়োহান কাবায়ে ও ম্যাথু দিবুশি, অ্যাস্টন ভিলার কাছে ইদ্রিসা গেয়ে ও আনওয়ার এল গাজী।
টাকার অঙ্কে এখন পর্যন্ত লিলের সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা খেলোয়াড় হচ্ছে নিকোলাস পেপে। তবে লাভের দিক থেকে বড় ব্যবসা হয়েছে মূলত নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ভিক্টর ওসিমেনকে দিয়ে। শারলোয়া থেকে ২২.৪ মিলিয়ন ইউরোয় কিনে আনা এই নাইজেরিয়ানকে নাপোলির কাছে ৭৫ মিলিয়ন ইউরোয় বিক্রি করে লিল।
দুটি ট্রান্সফারই ২০১৯ সালে। তবে ওশিমেনের জন্য পুরো টাকা একসঙ্গে পেলেও পেপের টাকা পাবে তারা পাঁচ বছরের কিস্তিতে। এক মৌসুম আগে লিগ শিরোপা জেতার পর বাইরে খেলোয়াড় বিক্রি আরও গতি পেয়েছে। চলতি গ্রীষ্মে এরই মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ইউরো অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে ফেলেছে ক্লাবটি।
যা এসেছে নিউক্যাসলের কাছে সভেন বটমান (৩৭ মিলিয়নে), এভারটনের কাছে আমাদু ওনানা (৩৬ মিলিয়নে), পিএসজির কাছে রেনাতো সানচেজ (১৫ মিলিয়নে) এবং রোমার কাছে জেকি সেলিককে (৭ মিলিয়নে) বিক্রি করে। ফুটবলারদের পাশাপাশি সফল মৌসুমের প্রধান সারথি কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের ও স্পোর্টিং ডিরেক্টর লুইস কাম্পোসও ট্রান্সফার হয়েছেন এবার পিএসজিতে।
সালজবুর্গসর্বোচ্চ কেনা: লুকাস গুরনা-ডুয়াথ, (১৩ মিলিয়ন ইউরোতে সেঁত-এতিয়েন থেকে)সর্বোচ্চ বিক্রি: ব্রেন্ডন অ্যারনসন, (৩২.৯ মিলিয়ন ইউরোতে লিডসের কাছে)
শারীরিকভাবে শক্তিশালী, খেলার ধরন আক্রমণাত্মক, গতি ভালো, দম বড়—নির্দিষ্ট এই মানদণ্ডগুলো ধরে উদীয়মান ফুটবলারদের দলভুক্ত করে সালজবুর্গ। যার প্রমাণ অস্ট্রিয়ান এই ক্লাব দিয়েছে অ্যারনসন (লিডসের কাছে ৩২.৯ মিলিয়নে), আর্লিং হলান্ড (ডর্টমুন্ডের কাছে ২০ মিলিয়নে), করিম আদেয়েমি (ডর্টমুন্ডের কাছে ৩০ মিলিয়নে), প্যাটসন ডাকা (লেস্টার সিটির কাছে ৩০ মিলিয়নে), সাদিও মানে (সাউদাম্পটনের কাছে ২৩ মিলিয়নে) ও এনক মেপুকে (ব্রাইটনের কাছে ২৩ মিলিয়নে) বিক্রি করে।
কেবল বাইরের ক্লাবকেই নয়, সালজবুর্গ খেলোয়াড় সরবরাহ করে রেড বুল অধিভুক্ত লাইপজিগকেও। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মূল প্রতিষ্ঠান একই হওয়ায় লাভের পরিমাণ তেমন থাকে না। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সালজবুর্গের ২০ জনের বেশি খেলোয়াড়কে লাইপজিগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যার মধ্যে আছেন নাবি কেইতা (৩০ মিলিয়ন), দমিনিক সোবোসলাই (২২ মিলিয়ন), আমাদু হাইদারা (১৯ মিলিয়ন), দায়ত উপামেকানো (১৮.৫ মিলিয়ন), বেঞ্জামিন সিসকো (২৪ মিলিয়ন)। | null |
5e4f112445 | উনিশ শতকে আধুনিক শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে উপমহাদেশে তথা বাংলায় শ্রমিকশ্রেণির ভূমিকা শুধু অর্থনীতিতে নয়, রাজনীতিতেও গৌরবের। শ্রমিকশ্রেণির অংশগ্রহণ ছাড়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলন সফল করা শুধু মধ্যবিত্তের অংশগ্রহণে রাজনীতিবিদদের পক্ষে সম্ভব হতো না। পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শ্রমিকশ্রেণির ভূমিকা অবিস্মরণীয়। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে শ্রমিক ও ছাত্রদের ভূমিকাই ছিল প্রধান। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন শ্রমজীবী মানুষ এবং তাঁদের পরিবারের সন্তানেরাই বেশি। তাঁরা অকাতরে জীবন দিয়েছেন। কারণ, মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ছিল না, তা ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম। বাংলাদেশে স্বাধিকার সংগ্রাম ও স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শ্রমিকশ্রেণির ত্যাগের পরিমাণ যতটা, প্রাপ্তির পরিমাণ কি তাই? অন্তত মে দিবসে সেই প্রশ্নটা করতে পারি।
ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন ছিল শক্তিশালী। সেকালের শ্রমিকনেতা ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের আত্মত্যাগ এখনকার ভাগ্যবান নেতারা ভাবতেও পারবেন না। ১৯৫০ পর্যন্ত বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলন পরিচালনা করতেন কমিউনিস্ট ও বাম নেতারা। তবে ১৯৫৭ পর্যন্ত বামপন্থীদের দ্বারা পরিচালিত শ্রমিক সংগঠন প্রকাশ্যে ছিল না। আত্মগোপনকারী কমিউনিস্ট নেতারা শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের দাবিদাওয়া আদায়ে তাঁদের সংগঠিত করতেন। সে জন্য তাঁদের ওপর নেমে আসত সরকারি নিপীড়ন। কারাগারগুলো ভরে গিয়েছিল শ্রমিকনেতা ও বামপন্থী কর্মীদের দ্বারা।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর দক্ষিণপন্থী নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশন’। তার নেতৃত্বে ছিলেন ডা. আবদুল মোতালেব মালিক (একাত্তরে অধিকৃত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর) ও আলতাফ আলী। অবিভক্ত ভারতবর্ষে তাঁরা কলকাতায় শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৭ সালে বামপন্থীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান মজদুর ফেডারেশন’, যার প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মাওলানা ভাসানী এবং সভাপতি মোহাম্মদ তোয়াহা ও সাধারণ সম্পাদক স্টিমার শ্রমিকনেতা কাজী মহিউদ্দিন (বরিশাল)। কমিউনিস্ট নেতাদের অনেকেই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারির পর এর অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
পঞ্চাশের দশকে নিবেদিত ও অভিজ্ঞ হিন্দু শ্রমিকনেতাদের অনেকেই ভারতে চলে যান। নতুন নেতৃত্ব তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগে। ষাটের দশকে আইয়ুবের সময় গঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক পরিষদ’। ১৯৬৬ সালে গঠিত হয় বামপন্থী নেতাদের দ্বারা ‘পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশন’, যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মাওলানা ভাসানী। ষাটের দশকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠতে থাকায় শিল্পশ্রমিকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পূর্ব পাকিস্তান শিল্পোন্নয়ন করপোরেশনের অধীনে পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকল, কাগজ, ইস্পাত প্রভৃতি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ছিল কয়েক লাখ। শ্রমিকনেতারা তাঁদের সংগঠিত করেন।
১৯৭০ সাল নাগাদ শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বিপুল শক্তি অর্জন করে। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও একাত্তরের মার্চের অসহযোগ আন্দোলনের সময় শ্রমিকদের শক্তির প্রকাশ ঘটে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের ভূমিকা গৌরবের, যদিও সেই স্বীকৃতি তাঁরা পাননি। কলকাতায় গঠিত ‘বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’র অধিকাংশই ছিলেন শ্রমিকনেতা। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডা. সাইফ-উদ্ দাহার, ডা. মারুফ হোসেন, অমল সেন, আবুল বাশার, শান্তি ঘোষ, দেবেন সিকদার, কাজী জাফর আহমদ প্রমুখ।
স্বাধীনতার পরে সব শিল্পকারখানা রাষ্ট্রায়ত্ত হয়। অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিতে সেগুলোর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। আগের শ্রমিকনেতারাই শ্রমিকস্বার্থে আন্দোলন-সংগ্রাম করেন; কিন্তু শ্রমিকদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে না। মুদ্রাস্ফীতির কারণে তাঁদের জীবনযাত্রা নির্বাহে অবনতি ঘটে। ঐতিহ্যবাহী পাটকল, সুতাকল, কাপড় কল, চিনিকল প্রভৃতি বন্ধ হয়ে গেলেও আশির দশকে তৈরি পোশাকশিল্পের বিস্তার ঘটে। বাংলাদেশের শ্রম জগতে আসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তৈরি পোশাকশিল্পের আগে নারী শ্রমিক ছিল না। লাখ লাখ নারী আজ এই শিল্পে নিয়োজিত। এখনই প্রয়োজন ছিল নির্লোভ, সৎ ও নিবেদিত নেতৃত্বের।
স্বাধীনতার আগে ছিল রেল ও নৌপথের শ্রমিক। বর্তমানে পরিবহন খাতে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করেন এবং তাঁদের একটি বড় অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক। বহু শিশু-কিশোর পরিবহনে কাজ করছে সামান্য বেতনে অথবা পেটে-ভাতে। বাস-ট্রাক প্রভৃতি যানের মালিকদের সীমাহীন লোভ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাকে আজ বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে নানা প্রলোভনের মধ্যেও শ্রমিকনেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। গঠিত হয়েছিল ১৯টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। তারা একটি পাঁচ দফা দাবিনামা তৈরি করেছিল। ১৯৮৪ সালের ২১ মে ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি চুক্তি হয়েছিল। সেই পাঁচ দফার ১ নম্বর দফায় ছিল ১৩টি দাবি, ২ নম্বর দফায় ছিল ২০টি দাবি, ৩ নম্বর দফায় ছিল ১৯টি দাবি, ৪ নম্বর দফায় ছিল ১৮টি দাবি এবং ৫ নম্বর দফায় ছিল ৯টি দাবি।
নব্বইয়ে সামরিক একনায়কের পতন ঘটে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর দুই মেয়াদে বিএনপি এবং একবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। ওই তিন সরকার যে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সেই পাঁচ দফা দাবি পাঠ করেছে, তা মনে করার কারণ নেই। তবে ওই ১৫ বছরে সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে কিছু কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
গত ২৫ বছরে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে, বিদেশি ক্রেতাদের চাপে কারখানার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে, কর্মপরিবেশেও অনেকটা ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে, তা সত্ত্বেও শ্রমিকদের বহু সমস্যা রয়ে গেছে অমীমাংসিত। আমাদের মতো দেশে শ্রমিকের স্বার্থ সরকার ও মালিকেরা স্বেচ্ছায় দেখবেন, সেটা দুরাশা। দাবি আদায় করে নিতে হয়। তা করতে পারেন শ্রমিকনেতারা। সুবিধাবাদী নেতৃত্ব নিজেদের কল্যাণ করে নেন শ্রমিকদের ব্যবহার করে। কোনো দাবি আদায়ে রাস্তায় নামলে নিগৃহীত হন সাধারণ শ্রমিকেরা, যাঁদের একটি বড় অংশ নারী।
শ্রমিক নেতৃত্ব দুই ভাগে বিভক্ত। সরকারের সহযোগী ও শ্রমিকবান্ধব। সরকারের সহযোগীদের ক্ষমতা ও প্রভাব বেশি। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সঙ্গে বিদেশ সফর করার সুযোগ পান। দামি হোটেলে থাকেন। শ্রমিকবান্ধব নেতাদের মনে করা হয় তাঁরা মালিকবিরোধী ও সরকারবিরোধী। তাঁদের কথা মালিক ও সরকার শুনতে আগ্রহী নয়।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রমোশন পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছে। সে জন্য আমরা গর্বিত। সরকার আরও বেশি গর্বিত। কিন্তু এই পদোন্নতির পেছনে কার অবদান বেশি, তা কি সরকার ভেবে দেখেছে? বাংলাদেশকে উঁচুতে তুলে ধরেছে যে হাত, তা শ্রমিকের হাত। দেশটি মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল, কিন্তু তার শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান মানবেতর, তা এক বিরাট পরিহাস। এই মুহূর্তে খুলনায় পাটকলের শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন না পেয়ে আন্দোলন করছেন। আমরা গিয়ে স্বচক্ষে দেখেছি, তাঁদের অবস্থা শোচনীয়।
দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে হলে শ্রমিকশ্রেণির কথা ভাবতে হবে। যেসব নদী শিকস্তি কৃষক ও ভূমিহীন মানুষ-নারী ও পুরুষ একবার শহরে এসে কারখানায় কাজ নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশ আর গ্রামে ফিরে যেতে পারবেন না। কোনো কারণে তৈরি পোশাকশিল্প খাতে বিপর্যয় দেখা দিলে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদি তাঁরা চাকরি হারান, তাঁরা চাকরিপূর্ব জীবনের চেয়ে শোচনীয় অবস্থায় পড়বেন। বেঁচে থাকার তাগিদে পুরুষদের অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারেন। অল্পবয়স্ক নারীদের সন্তানসন্ততিকে বাঁচিয়ে রাখতে যেকোনো ধরনের কুপথ বেছে নেওয়া অস্বাভাবিক নয়।
অর্থাৎ, শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা ও ভালো জীবনের নিশ্চয়তা না দিলে শুধু অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে না, রাজনৈতিক অস্থিরতা তো বটেই সামাজিক সমস্যারও সৃষ্টি হবে। এখনই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়।
সৈয়দ আবুল মকসুদ: লেখক ও গবেষক | null |
6e7491bb9a | লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। দুপুরে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। বক্তারা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কমিটি বাতিল করা না হলে আন্দোলন চলবে। গত শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। | null |
e9bba3e2a7 | বগুড়ার ধুনটে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার উত্তর কান্তনগর বাঁশহাটা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের দাবি, স্বামী ও সতিন মিলে তাঁকে হত্যা করেছেন।নিহত গৃহবধূ হলেন এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামের আনজুয়ারা খাতুন (৩০)। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী ও সতিন পলাতক।গৃহবধূর চাচা রেজাউল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রায় ১৫ বছর আগে আনজুয়ারার সঙ্গে উত্তর কান্তনগর বাঁশহাটা গ্রামের দুলাল প্রামাণিকের (৩৫) বিয়ে হয়। আনজুয়ারা ছিলেন দুলালের তৃতীয় স্ত্রী। এ অবস্থায় প্রায় তিন মাস আগে দুলাল একই উপজেলার ঈশ্বরঘাট গ্রামের চায়না খাতুনকে (২২) বিয়ে করেন। এরপর থেকেই আনজুয়ারা ও দুলালের মধ্যে বিরোধ চলতে থাকে। এর জের ধরে মঙ্গলবার বিকেলে আনজুয়ারার তিন সন্তানকে কৌশলে নানাবাড়িতে রেখে আসেন দুলাল ও চায়না। এরপর বাড়ি ফিরে সন্ধ্যায় আনজুয়ারাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুজন পালিয়ে যান। পরে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতেই দুলালের বাড়িতে যান তাঁরা। পরে তাঁদের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার ধুনট থানা-পুলিশ আনজুয়ারার লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পঞ্চনন্দ সরকার বলেন, নিহত গৃহবধূর গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। | null |
453aacd14d | যাঁরা অন্তত দুটি ভাষা জানেন, তাঁদের বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতিধ্বংসের প্রবণতা একটিমাত্র ভাষাজ্ঞানসম্পন্ন মানুষের চেয়ে কম। সম্প্রতি ভারতের একদল বিজ্ঞানী এক গবেষণার পর এই তথ্য দিয়েছেন। স্মৃতিধ্বংস বা ডিমেনশিয়ার প্রবণতা নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয় ভারতের হায়দরাবাদে, যেখানে বেশির ভাগ লোক একের অধিক ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত। সেখানে তেলেগু, উর্দু, দক্ষিণী এবং ইংরেজি—এই ভাষাগুলো কম-বেশি সবাই জানে। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত দুই ধরনের মানুষের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, একাধিক ভাষায় দক্ষ মানুষদের স্মৃতিধ্বংসের প্রবণতা শুরু হচ্ছে গড়ে ৬৫ দশমিক ৬ বছর বয়সে, আর যাঁরা একটি মাত্র ভাষা জানেন, তাঁদের ৬১ দশমিক ১ বছর বয়সে। ভাষা ও নতুন শব্দ শিক্ষা এবং চর্চা মস্তিষ্কের ব্যায়াম ও শ্রম উৎপাদন করে, যা স্মৃতিধারণ ক্ষমতার জন্য ভালো।ইতিপূর্বে কানাডার অন্টারিওতে একই ধরনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে বহু ভাষাবিদের অ্যালজেইমারস রোগ হওয়ার প্রবণতা কম। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি নিউরোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। ইউএসএ টুডে। | null |
wicrql3llx | পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর বর্ধিত গৃহকর নিয়ে আপত্তি থাকলে নগরবাসীকে আবেদনে উৎসাহিত করতে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। পাশাপাশি আপিল শুনানি শেষে গৃহকর সহনীয় পর্যায়ে রাখার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র। গৃহকর নিয়ে করদাতারা যাতে অসন্তুষ্ট না হন, সে জন্য কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রচারণার জন্য বলা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৮তম সাধারণ সভায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এসব নির্দেশনা দেন। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় পুরোনো নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের আমলে করা পঞ্চবার্ষিক গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের ভিত্তিতে গৃহকর আদায়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। এ জন্য করদাতাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। তবে এই কর পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে নগরবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। তৎকালীন মেয়রের আমলে আন্দোলনের মুখে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তা স্থগিত করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত ১৮ জানুয়ারি তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে কর পুনর্মূল্যায়নের পর বার্ষিক কর নির্ধারণ করা হয় ৮৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পুরোনো নিয়মে ওই দাবি ছিল ৩৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। নতুন কর পুনর্মূল্যায়নের পর সরকারি খাতে হোল্ডিং দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৪৭টিতে। এর বিপরীতে বার্ষিক দাবি ছিল ২৮০ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ১ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ হোল্ডিংয়ের বিপরীতে বার্ষিক দাবি ধরা হয় ৫৭১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
বুধবারের সাধারণ সভায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গৃহকর সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে। করদাতারা যাতে সহজে আবেদন করতে পারেন, সে জন্য রাজস্ব সার্কেল অফিসের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে আপিল ফরম রাখা হবে।
চট্টগ্রাম নগরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি নিয়েও আলোচনা হয় বুধবারের সভায়। অনুমোদনের ১৫ দিনের মধ্যে ওয়াসাকে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করতে হবে, সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আবার নতুন করে অনুমোদন নিতে হবে ওয়াসাকে।
সাধারণ সভায় কাউন্সিলররা অভিযোগ করেন, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী লোডশেডিং হচ্ছে না। কখনো দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ আসে আর যায়। মানুষের কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উচিত লোডশেডিংয়ের সূচি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা জনগণকে অবহিত করা। সাধারণ সভায় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। | null |
6855a2015c | জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কয়েকটি বিষয় আমাকে পড়াতে হয়, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার ও সংবাদমাধ্যম’। জাপান একটি অগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশ এবং জাপানের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আমাদের পাঠক্রম নির্ধারিত করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আবশ্যকীয় একটি উপাদান হচ্ছে সংবাদমাধ্যম। সরকারের ভেতরে কী ঘটছে, জনগণের কাছে রাখা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার কীভাবে অগ্রসর হচ্ছে এবং সেই ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা কতটুকু, সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব হচ্ছে সেসব বিষয়ে জনগণকে অবগত করার মধ্য দিয়ে সঠিক পথে সরকারকে পরিচালিত করায় সহায়তা করা।প্রশ্ন উঠতে পারে, জনসংযোগের মতো সরকারের সুনির্দিষ্ট কিছু বিভাগ নিজে থেকেই সেই দায়িত্ব পালনে সক্ষম হওয়ায় সংবাদমাধ্যমকে কেন আগ বাড়িয়ে তা করতে হবে? জনসংযোগের কাজ যেহেতু হচ্ছে ব্যর্থতাকে আড়াল করে রেখে সাফল্যের ঢোল পেটানো, ফলে সে রকম কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলো সম্পর্কে জানতে পারা নাগরিকদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয়। আর এখানেই এসে যায় গণতান্ত্রিক কাঠামোয় সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বের প্রসঙ্গটি এবং একই সঙ্গে যা ফুটিয়ে তোলে সাংবাদিকতার সঙ্গে জনসংযোগের যোজন দূরত্বের পরিষ্কার ছবি।ফলে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলের অবস্থান অপেক্ষাকৃত দুর্বল, সে রকম গণতান্ত্রিক কাঠামোয় সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব আরও অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক হয়ে দেখা দেয়। জাপানের এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাহ্যিক বেশ কিছু মিল সহজেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব। দুই দেশেই ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়ায় দলের স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠার আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ সংবাদমাধ্যমজুড়ে বিস্তৃত। তবে গুণগত পার্থক্য এ রকম, জাপানের সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ সেই উদ্বেগ সম্পর্কে দেশবাসীকে জোর গলায় সতর্ক করে দেওয়ায় নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে না যে এদের গলা টিপে ধরো, কিংবা মামলার মারপ্যাঁচে কুপোকাত করে দিয়ে নাভিশ্বাস তুলে দাও এর মালিক বা সম্পাদকদের। সরকার বরং সমালোচনার পরোক্ষ জবাব দিয়ে চলেছে সরকার–সমর্থক সংবাদমাধ্যমে নানা রকম বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা ও সংলাপের মধ্য দিয়ে, যা-ও কিনা কোনো অবস্থাতেই অতিক্রম করছে না শালীনতার গণ্ডি।জাপানের সংবাদমাধ্যমের মধ্যে দৈনিক সংবাদপত্রকে রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি প্রভাবশালী গণ্য করা হয়। জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক সংবাদপত্রগুলো মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত। বর্তমান সরকারের দক্ষিণপন্থী অবস্থানের সমর্থনে আছে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক ইওমিউরি শিম্বুন-এর পাশাপাশি কট্টর জাতীয়বাদী চেতনায় অনুপ্রাণিত দৈনিক সাঙ্কেই শিম্বুন। অন্যদিকে, সরকারবিরোধী শিবিরে নেতৃত্বের অবস্থানে আছে প্রচার সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে অবস্থানকারী দৈনিক আসাহি ও মায়নিচি শিম্বুন। সরকারের অনুসৃত কতিপয় নীতি নিয়ে দুই শিবিরের কলমযুদ্ধ বলা যায় হাড্ডাহাড্ডি পর্যায়ের। একে অন্যকে ঘায়েল করার জন্য দোষত্রুটি খুঁজে বের করে তা নিয়ে ফলাও প্রচারেও পিছিয়ে নেই এরা।ঠিক তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল আসাহির বিরুদ্ধে যৌনদাসী-সংক্রান্ত বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগ ইওমিউরির উত্থাপন করা নিয়ে। জাপান সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইওমিউরি যৌনদাসীদের অস্তিত্ব অনেকটাই অস্বীকার করে আসছে। অন্যদিকে আসাহি নানা রকম ঐতিহাসিক দলিলপত্রের ভিত্তিতে সেই সত্যতা প্রমাণের চেষ্টা অনেক দিন থেকে করে আসছে। সেই প্রক্রিয়ার একটি বিচ্যুতি ছিল ত্রুটিপূর্ণ সেই প্রতিবেদন, যেটিকে পুঁজি করে কোমর বেঁধে নেমেছিল ইওমিউরি। আসাহি অবশ্য ভুল স্বীকার করে নিলেও উল্লেখ করেছিল যে একটিমাত্র প্রতিবেদনের মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া উদ্ধৃতির মধ্য দিয়ে পুরো বিষয়টির অর্থহীনতা প্রমাণিত হয় না। একপর্যায়ে ইওমিউরির সঙ্গে গলা মিলিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে কঠোর ভাষায় আসাহির সমালোচনা করলে জাপানের জনগণ এবং সার্বিকভাবে সংবাদমাধ্যম সেটাকে সহজভাবে নিতে পারেনি এবং বিতর্কের বাইরে থাকার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা পৌঁছে দিয়েছিল। সেই একবারের কঠোর সমালোচনার পর প্রধানমন্ত্রীও বুঝে গিয়েছিলেন, সংবাদমাধ্যমের মধ্যে চলা বিতর্কে সরকারের আগ বাড়িয়ে নাক গলাতে নেই এবং এর পর থেকে সে রকম কঠোর কোনো মন্তব্য তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত হয়নি। আসাহিকেও ভুল স্বীকার করে নেওয়ার জন্য জড়িয়ে পড়তে হয়নি একের পর এক মামলার ফাঁদে।এবার আমরা একটু পেছন ফিরে অতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আরও যে একটি বিষয়ে বাংলাদেশের অল্প কিছুদিন আগের পরিস্থিতির সঙ্গে জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের মিল কিছুটা হলেও খুঁজে পাব, সেটা হলো স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে সংবাদমাধ্যমের আচরণ। একালের আসাহি আর ইওমিউরি একে অন্যের বিপরীতে অবস্থান নিলেও জাপানের সেই যুদ্ধের দিনগুলোয় এরা ছিল দেশের সামরিক আগ্রাসনের কট্টর সমর্থক। যুদ্ধের পর অবশ্য সবাই আগের সেই অবস্থানের জন্য দলবদ্ধভাবে ক্ষমা চেয়ে উল্লেখ করেছিল যে কঠোর সেন্সরশিপের আওতায় এর বাইরে কোনো কিছু করার পথ তাদের সামনে বন্ধ ছিল।সামরিক শাসন বা স্বৈরতন্ত্র ক্ষমতাসীন হয়েই প্রথম যে কাজটি করে তা হলো সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। পাঠক হয়তো ভুলে যাননি সেই পাপিষ্ঠ কণ্ঠ: ‘আমি মেজর ডালিম বলছি।’ বঙ্গবন্ধুকে খুন করে খুনির দল প্রথমেই ছুটে গিয়েছিল বেতার কেন্দ্রে এবং বেতারের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর গলা টিপে ধরেছিল সব কটি সংবাদপত্রের। ফলে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতাসীন নতুন সরকারকে স্বাগত না জানানোর কোনো উপায় সেদিন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের ছিল না।২০০৭ সালে বেসামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আড়ালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বেলায়ও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি লক্ষ করা গেছে। সেদিন এমন কোনো সংবাদপত্র ছিল কি, যেটা কিনা সরকারের সমালোচনা করে সেই সরকারকে অবৈধ আখ্যায়িত করেছিল? যদি না থাকে, তবে কেন মাহ্ফুজ আনামের বিরুদ্ধে সম্মিলিত এই বিষোদ্গার। সবাই যে কাজ করেছে, সেই একই কাজ তাঁকেও করতে হয়েছে এবং এর পক্ষে কোনো রকম সাফাই না গেয়ে তিনি বরং নিজের সেই অক্ষমতার জন্য অনুতপ্ত হওয়ার প্রকাশকেই তুলে ধরেছেন। এটাকে তো মনে হয় সৎ সাংবাদিকতার একটি দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখা উচিত, মামলার প্যাঁচে তাঁকে ঘায়েল করে দেওয়ার মতো বেইমানি হিসেবে নয়।মাহ্ফুজ আনামের সমালোচনায় যাঁরা মুখর, তাঁরা অবশ্য বলে থাকেন যে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নেতৃত্বশূন্য করে তোলায় চালানো প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে জঘন্য অন্যায় কাজ তিনি করে ফেলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এত দিন আপনারা কোথায় ছিলেন? ঘটনা ঘটে যাওয়ার প্রায় আট বছর পর অতীতের একটি ভুলের জন্য দোষ স্বীকার করে নেওয়ার অর্থ অবশ্যই এ রকম নয় যে তাঁর সব রকম পদক্ষেপই তখন ছিল কলঙ্কিত।মনজুরুল হক: শিক্ষক ও সাংবাদিক। | null |
302ec6129c | শিল্পকলা একাডেমীর পরীক্ষণ থিয়েটারের হলভর্তি দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখল কিংবদন্তি খনার জীবনালেখ্য লীলাবতী আখ্যান। গতকাল শনিবার গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসবের দ্বিতীয় দিনে মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। লোকনাট্য দল (সিদ্ধেশ্বরী) মঞ্চস্থ করেছে এটি। কিংবদন্তির খনার জীবনালেখ্য লীলাবতী আখ্যান রচনা করেছেন নাসরীন মুস্তাফা ও নির্দেশক লিয়াকত আলী। লীলাবতীর আসল নাম খনা। সিংহলের ভাগ্যবিড়ম্বিত রাজকন্যা। বাবা সিংহলরাজ শত্রুর হাতে পরাজিত ও নিহত হলে শিশু লীলাবতী শিক্ষাগুরু মঞ্জুলসহ বন্দী হয় শত্রু দুর্গে। তাদের সঙ্গে আরও এক শিশু বন্দী হয়। তার নাম মিহির। মিহির উজ্জয়িনী রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজজ্যোতিষী পণ্ডিত বরাহের ছেলে। ভুল গণনার মধ্য দিয়ে বাবা জানতে পারেন, মিহিরের আয়ু ১২ দিন। তাই পণ্ডিত বরাহ ছেলে মিহিরকে সাত দিন পর তাম্রপাত্রে রেখে ভাসিয়ে দেন সাগরে। আচার্য মঞ্জুল তাকে সাগর থেকে রক্ষা করেন এবং লীলাবতীর সঙ্গেই সন্তানস্নেহে জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী করে তোলেন। কেটে যায় ১৬টি বছর। এরই মধ্যে লীলাবতী আর মিহির ভালোবাসায় আবদ্ধ হন। সূর্য সাক্ষী রেখে বিয়ে হয় তাঁদের। ঈর্ষায় অন্ধ শ্বশুর বরাহ পুত্রবধূ লীলাবতীর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে পারলেন না। বাবার নিষ্ঠুর আদেশে মিহির স্ত্রী লীলাবতীর জিহ্বা কর্তন করেন, যেন লীলাবতী আর কোনো বচন উচ্চারণ করতে না পারেন। লীলাবতীর মৃত্যু ঘটে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মুক্তিদাত্রী হিসেবে সবার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকেন ‘খনা’ নামে।নির্দেশক লিয়াকত আলী জানান, ‘লীলাবতী আখ্যান আমার একটি নিরীক্ষাধর্মী নাটক। নারীকে দুর্বল করে দেখা এবং নারীর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও অবদানকে অস্বীকার করা একটি মধ্যযুগীয় মূল্যবোধ। সেই মূল্যবোধ থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি আমাদের সমাজ।’ অভিনয় করেছেন লিয়াকত আলী, মাহফুজ হিলালী হ্যাপী, মাসুদ সুমন, আবু বকর বকশী, চন্দ্রশেখর দেবনাথ, রুবেল শঙ্কর প্রমুখ। | 3,564 |
ID_9191 | রূপচান্দা
রূপচান্দা এক প্রকারের মাছ। চ্যাপ্টাকৃতির এই মাছটি মিঠা পানি, অর্থাৎ পুকুর, নদী বা হ্রদে পাওয়া যায়।
| null |
27e72a3c48 | নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পৌর এলাকার উত্তরা আবাসনের বাঙ্গালী পট্টির ২৪/৭ নম্বর বাড়িতে বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলমগীর হোসেন (৩২) একই এলাকার তছিমুদ্দীনের ছেলে। পেশায় তিনি ইজিবাইকচালক ছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলমগীরের শাশুড়ি আবেদা খাতুনসহ চারজনকে থানায় নিয়ে গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত আলমগীর হোসেন প্রায় ১০ বছর আগে একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে আতিকা পারভীনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। কিন্তু আলমগীরের পরিবার এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। ঘটনার দিন আলমগীর হোসেন ইজিবাইক চালিয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী পেশাগত কারণে উত্তরা ইপিজেডে অবস্থান করছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে শোবার ঘরের বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় আলমগীরকে দেখতে পান তাঁর শাশুড়ি।
স্থানীয় ব্যক্তিরা আলমগীরকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে আলমগীরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের স্ত্রী আতিকা পারভীন বলেন, কয়েক দিন ধরে স্বামী আলমগীর ঘুমের ঘোরে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আতিকুল ইসলামের দাবি, আত্মহত্যার বিষয়টি সাজানো। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম বলেন, মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত ব্যক্তির শাশুড়িসহ চারজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। | 9,612 |
56a991a3ac | নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় পিটুনিতে আহত শমসের আলী (৬৫) নামের এক ব্যক্তি গতকাল রোববার মারা গেছেন।পুলিশ জানায়, উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামে বাড়ির ল্যাট্টিনের ময়লা পরিষ্কার করাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার চাচা শমসের আলীর সঙ্গে তাঁর ভাতিজাদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ভাতিজাদের মারধরে শমসের গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল সকালে তিনি মারা যান। ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। | null |
5a1f378199 | রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকা থেকে গত বুধবার বিকেলে নম্বরপ্লেটবিহীন একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করেছে পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগ।পুলিশের ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের উপকমিশনার প্রবীর কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ট্রাফিক পুলিশ হাউস বিল্ডিং এলাকায় নিরাপত্তাচৌকি বসিয়ে তল্লাশি করছিল। ওই সময় সন্দেহজনক একটি (ঢাকা মেট্রো গ-৩৩-৬৩০১) গাড়িকে থামার সংকেত দিলে চালক গাড়ি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। গাড়িটির নম্বর থাকলেও তা প্লেটে লিখে গাড়িতে ঝোলানো হয়নি। পরে গাড়িটি উদ্ধার করে উত্তরা পশ্চিম থানায় পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। | null |
5946d0a6bc | সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভী-বাজারের কুলাউড়া উপজেলার ২০৬ নম্বর মনু রেলসেতুর কাঠের স্লিপারে লাগানো বাঁশের ফালি অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অকেজো স্লিপারগুলো বদলে নতুন স্লিপার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, মনু নদের ওপর স্থাপিত এই সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০০ মিটার। এই সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। সেতুতে রেললাইনের নিচে ২০৮টি কাঠের স্লিপার বসানো রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু স্লিপার নষ্ট। অনেক স্লিপারের নাট-বল্টু খুলে পড়ে গেছে। এসব স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হয়, সে জন্য এর ওপর ফালি করা বাঁশ স্থাপন করে পেরেক ঠুকে রাখা হয়। এতে ট্রেন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম আলোয় একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। | null |
742e5a580e | সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) ৭০তম শাখা খোলা হয়েছে ঢাকার খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রীতে।ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান আনিসুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে সম্প্রতি শাখাটির উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালক মো. শাহ্ আলম। এতে অন্যান্যের মধ্যে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি। | null |
5f021e8642 | হাসপাতালে ভর্তির উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ফাইজারের প্যাক্সলোভিড ট্যাবলেট ব্যবহারের জোর সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আজ শুক্রবার ডব্লিউএইচও এ কথা বলেছে। খবর এএফপির।
বিএমজে চিকিৎসা সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেসব মানুষ করোনার টিকা নেননি, যাঁরা বয়স্ক বা যাঁদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের চিকিৎসায় প্যাক্সলোভিড খুব ভালো ফল দেয়।
ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ঠেকাতে যেসব বিকল্প ট্যাবলেট আছে, সেগুলোর মধ্যে ফাইজারের মুখে খাওয়ার ওষুধটি বেশি কার্যকর।
প্রায় ৩ হাজার ১০০ রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করে পরিচালিত দুটি ট্রায়ালের ফলাফলের ভিত্তিতে প্যাক্সলোভিড নিয়ে নতুন সুপারিশটি করেছে ডব্লিউএইচও।
ট্রায়ালে দেখা গেছে, করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে প্যাক্সলোভিড।
ডব্লিউএইচওর সুপারিশ অনুযায়ী, ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের প্যাক্সলোভিড ওষুধটি দেওয়া যাবে। তবে অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের এই ওষুধ দেওয়া যাবে না।কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদেরও এই ওষুধ না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাঁদের ক্ষেত্রে ওষুধটির সুবিধা যত্সামান্য।
গুরুতর করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধটি কতটা কাজ দেবে, তা নিয়ে কোনো মতামত দিতে রাজি হননি ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এ ব্যাপারে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে।
তবে এ ধরনের অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসার সীমাবদ্ধতা আছে বলে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএইচও। তারা বলছে, রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই শুধু এই ওষুধ দেওয়া যাবে। তার মানে হলো, রোগীদের অবশ্যই দ্রুত করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরপরই রোগীকে এই ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেবেন চিকিৎসক।
করোনা মহামারির অবসানে মুখে খাওয়ার ওষুধ বাজারে আসার বিষয়টিকে সম্ভাব্য বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, বাড়িতে বসেই এই চিকিৎসা নেওয়া যায়। এর জন্য রোগীকে হাসপাতালে যেতে হয় না।
নিয়ম অনুযায়ী, করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে রোগীকে প্যাক্সলোভিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করতে হবে। পাঁচ দিন ধরে তা খেতে হবে।
প্যাক্সলোভিডের দামের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ফাইজারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। | null |
742ff61c4d | পর্দা ছাড়া ছবি তুলে তা টুইটারে পোস্ট করার অভিযোগে সৌদি আরবের এক তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ। সৌদির রাজধানী রিয়াদের পুলিশ গতকাল সোমবার এ খবর জানিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
পুলিশের মুখপাত্র ফাওয়াজ আল-মাইমেন আটক ওই তরুণীর নাম প্রকাশ করেননি। তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের খবরে ওই তরুণীর নাম মালাক আল-শেহরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত মাসে রিয়াদের রাস্তায় পর্দা ছাড়া ছবি তুলে তা টুইটারে পোস্ট করেন ওই তরুণী। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এক বিবৃতিতে পুলিশের মুখপাত্র ফাওয়াজ আল-মাইমেন বলেন, রাষ্ট্রের সাধারণ নিয়ম ভেঙেছেন ওই তরুণী। তিনি সৌদি আরবের প্রচলিত নিয়ম ভেঙে রিয়াদের এক ক্যাফের পাশে পর্দা ছাড়া ছবি তুলে তা টুইটারে পোস্ট করেছেন।২০ বছর বয়সী ওই তরুণীকে আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশের মুখপাত্র বলেন, ‘নিষিদ্ধ হওয়ার পরও তরুণীটি প্রকাশ্যে অনাত্মীয় পুরুষের সঙ্গে কথা বলেছেন।’ তিনি জনসাধারণকে ইসলামের শিক্ষার প্রতি অনুগত থাকার আহ্বান জানান। | null |
6ba66503ee | দক্ষিণ এশীয় সাহিত্যে ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ এক অমীমাংসিত মহৎ রহস্য হয়ে রইলেন। কবি ফয়েজ কোথায় শেষ আর কোথায় শুরু রাজনীতিক ফয়েজ? কোথায় শেষ প্যান-দক্ষিণ এশীয় মার্ক্সবাদী আর কোথায় শুরু পাকিস্তানি সত্তা? এসব বিপরীতমুখী পরিচয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার বিষয়টি তাঁর অনুরাগীদের জন্য পীড়াদায়ক এক ধাঁধা হয়ে আছে। কোনো বাংলাদেশি অনুরাগীর জন্য এটি আরও জটিল। এই নিবন্ধের লেখক একজন বাংলাদেশি; তাঁর জন্ম ১৯৫০-এর দশকে। তাঁর কাছে এক জটিল পরিচয়ে হাজির হন ফয়েজ—সব সীমানা পেরোনো মহান আদর্শের সঙ্গে তাঁর বন্ধন। তিনি এমন এক পাকিস্তানি, যাঁর পানে বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার দৃষ্টিতে চেয়ে থেকেছে। তবে এই বন্ধনের প্রতি চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে একাত্তর ও তার যুদ্ধোত্তর ফয়েজ। যে বাংলাদেশিরা ফয়েজের সম্বন্ধে জানতেন, তাঁরা সেসব ভয়ানক দিনগুলোতে ভেবেছেন, ‘এসব বিষয়ে ফয়েজের কী ভাষ্য?’ পূর্বাংশের মানুষের চোখে তখন তিনি শুধু ‘ভালো পাকিস্তানি’ হয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে ফয়েজ কি কোনো দিন এমন কিছুর প্রতিনিধিত্ব করতেন, যা পাকিস্তানকে ছাপিয়ে যায়? পাকিস্তানি পরিচয়ের বাইরে এসে তাঁর পক্ষে কি সম্ভব ছিল দক্ষিণ এশিয়া ও তার বাইরের গুণমুগ্ধ অনুরাগীদের ধারণ করে বৃহত্তর পরিচয় গড়ে তোলা?১৯৬০-এর দশকের শেষভাগে মুনীর চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানে সাহিত্যবিষয়ক একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতেন। পাকিস্তানি লেখকদের সাহিত্যকর্মের ওপর আলোচনা করতেন। বক্তা হিসেবে তাঁর খ্যাতি কিংবদন্তিতুল্য। সাহিত্যজগতের মহান প্রতিভাদের তিনি নাটকীয় ভঙ্গিতে তুলে ধরতেন। ফয়েজের ওপর তেমনি এক অনুষ্ঠান করলেন তিনি। ফয়েজ তাঁর সুহূদ, সহযাত্রী। ‘মুঝসে পাহলি সি মুহাব্বাত মেরে মেহবুব না মাঙ’ কবিতার ওপর আলোচনা কেন্দ্রীভূত রেখে মুনীর চৌধুরী ফয়েজকে একজন সামাজিক বিপ্লবী এবং নিপীড়িত মানুষের কবি হিসেবে তুলে ধরলেন। এই উপস্থাপনা মুনীর চৌধুরীর সঙ্গেও মানিয়েছিল ভালো—তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন, ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের সময় তাঁর সক্রিয়তার ফলে জেল খাটতে হয়েছে। একজন আজীবন সাহিত্যকর্মী হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠেছিলেন।সবচেয়ে জরুরি কথা হলো, ফয়েজের কবিতার প্রতি মুনীর চৌধুরীর ভালোবাসায় খাদ ছিল না। টেলিভিশনে মুনীর চৌধুরীর সেই উপস্থাপনা আমার জীবনের এক স্মরণীয় মুহূর্ত; অনুভূতি ও সৌন্দর্যের যে কবিকে তিনি চেনালেন, সেই কবিতে আমি আজও মজে আছি। তথাপি আমার ভালো লাগায় চলে আসে ঈষৎ বেদনার আভাস—যখন দেখি ফয়েজকে বানিয়ে ফেলা হয়েছে জাতীয়, আঞ্চলিক ও ভাষাকেন্দ্রিক। একদা যে কবি আমাদের সবার উদ্দেশে কথা বলতেন, তাঁর জন্য এ তো এক ট্র্যাজেডি।বিপ্লবীর রূপান্তর চল্লিশের দশকে ফয়েজ মার্ক্সবাদী ছিলেন, কোনো সন্দেহ নেই। তৎকালীন অবিভক্ত ভারতে থাকতেন। ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফিরে এলেন সাংবাদিক হতে। বিয়ে করেছিলেন ব্রিটিশ নারী অ্যালিসকে। অ্যালিস কমিউনিস্টদের প্রতি সহমর্মী। তাঁর বোনও বিয়ে করেছিলেন এক ভারতীয়কে, যিনি আলীগড়ে পড়াতেন। সেই সময়ে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি জাতিরাষ্ট্র গঠিত হলে কমিউনিস্ট পার্টি দলীয় সদস্যদের বলল নিজ নিজ ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বেছে নিতে। দলের নির্দেশ মেনে বহু কমিউনিস্ট নতুন সীমান্ত পেরিয়ে ভারত ও পাকিস্তানে চলে গেল। বহু সমালোচকের মতে, তারও আগে কমিউনিস্ট পার্টি দলীয় কর্মীদের যখন নিজ নিজ ধর্মীয় পরিচয় অনুযায়ী মুসলিম লীগ অথবা কংগ্রেসে যোগ দিতে বলে, তখনই ‘সাম্প্রদায়িক’ হয়ে ওঠে। ভারতের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং পরিচালনা করার সামর্থ্য দলটির তেমন নেই বলে প্রমাণিত হলো আর কমিউনিস্ট পার্টি চলে গেল প্রান্তিক ভূমিকায়।আগে অবাধ বিচরণ থাকলেও ভারত ভাগের পর ফয়েজ নতুন সীমান্তরেখার পাকিস্তান অংশে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিলেন। নতুন রাষ্ট্রের রাজনৈতিক কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের (রাষ্ট্রের সনদে পরিষ্কার যেমন দেখা যাচ্ছিল, ক্রমেই সেই এক ধর্মের রাষ্ট্রের দিকেই ধাবিত হলো) প্রতি তাঁর বিশ্বাস থেকে তিনি এ সিন্ধান্ত নিলেন? ফয়েজ কখনো মুসলিম লীগার ছিলেন না, এমনকি ‘মুসলমান’ও না। তাহলে কেন তিনি পাকিস্তানকে বেছে নিলেন? হয়তো তা শুধুই তাঁর স্বদেশে ফেরা, যে স্বদেশ সব দিক থেকে ভারতের থেকে কম উন্মুক্ত। ঠিক কী কারণে তিনি পাকিস্তানের প্রতি আকৃষ্ট হলেন তা নির্ভুলভাবে বলা কঠিন, তবে নিশ্চয়ই তিনি নতুন রাষ্ট্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সেই সিদ্ধান্ত নেননি। হয়তো ঘরে ফেরাই একমাত্র উদ্দেশ্য।১৯৪৭-এর পর ফয়েজ তাঁর চিন্তাভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও তৎপরতার জন্য পাকিস্তানে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর বামপন্থী অবস্থান ছিল স্পষ্ট। ট্রেড ইউনিয়ন তৎপরতার সঙ্গে শরিক ছিলেন। পাকিস্তানের জন্মের একেবারে সূচনালগ্নেও ট্রেড ইউনিয়ন করা অনেকটাই রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা গণ্য করা হতো। ১৯৫০-৫১ সালে ফয়েজ গ্রেপ্তার হলেন। তাঁর সঙ্গে কমিউনিস্ট নেতা সাজ্জাদ জহির এবং জেনারেল আকবর খানের নেতৃত্বে কয়েকজন সেনা কর্মকতা। তাঁদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করার অভিযোগ করা হলো। দীর্ঘ কয়েক বছর কারারুদ্ধ থাকার পর বিচারে তাঁর চার বছর সাজা হলো। দুনিয়াব্যাপী কমিউনিস্ট পার্টিগুলো ক্ষমতার বাইরে থাকা অবস্থায় সাধারণত সেনাবাহিনীমুখী হয় না। কিন্তু কমিউনিস্টদের মধ্যে সব সময় সেনাবাহিনীর প্রতি মারাত্মক আকর্ষণ দেখা গেছে। এঁরা বিশ্বাস করেন যে সামরিক অভ্যুত্থান দ্রুত এক ঝাপটায় বিপ্লব ঘটাতে পারে—সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও স্থিতিস্থাপকতা গুণকে অদরকারি বানিয়ে দেয়। আফ্রিকায় সেই চেষ্টা করা হয়েছে—তাতে সাফল্যের ঘাটতি সুস্পষ্ট। উদাহরণ, ইথিওপিয়া ও মোজাম্বিক। বাংলাদেশেও তাই। ১৯৫০-এর অভ্যুত্থান-প্রচেষ্টায় বামপন্থীদের জড়িত থাকার কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা আছে বলে মনে হয় না। তবে তাতে ফয়েজের সম্পৃক্ততা ছিল, অথবা আমাদের ধারণা তিনি জড়িত ছিলেন। কেননা কোনো ‘স্বীকারোক্তি’ মিলেনি। কারারুদ্ধ হওয়ার পরপরই তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন অপসৃয়মাণ হতে থাকে। যা হোক, ১৯৫৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। জনমনে ফয়েজ ক্রমেই রাজনীতিকের বাইরে বহুমাত্রিক পরিচয়ে হাজির হতে থাকেন—আমাদের সময়ের অন্যতম মহৎ কবি, পাকিস্তানি সুফিদের সুহূদ আর অবশেষে সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্বিষ মানুষ, স্পষ্টবাদী অ্যালকোহলপ্রেমী। ফয়েজ বদলে গেলেন। তাঁর এই রূপান্তর মহৎ কবির নির্ঝঞ্ঝাট পরিচয়ের সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খেল। নতুন রূপের এই কবি রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেন না। তবু সত্য রয়ে যায়: তিনি তো চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, যদিও সফল হয়নি। কবি ও কমিউনিস্ট কবি ও কমিউনিস্ট পরিচয় সব সময় একসঙ্গে ভালো যায় না। কবিরা সচরাচর শব্দ ও অনুভূতির কারবারি, হূদয়ের টানে রাজনীতির ময়দানে আসেন, মতাদর্শের জন্য নয়। সময় গেলে পরিচয় দুটির মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে, যদি না সামনাসামনি লড়াই বেধে যায়। চিলির কবি পাবলো নেরুদা যতটা না মার্ক্সবাদী বিপ্লবী, তার চেয়েও বড় কবি। তবু তিনি উভয় পরিচয় মিলিত চর্চা করতে সচেষ্ট ছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কারাবন্দী করা হয়। তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সহযাত্রী। এমনকি তিনি দলটির আনুষ্ঠানিক বাংলা সংবাদপত্রও চালিয়েছেন। কিন্তু সময় গেলে সরে গেলেন—তাঁর কবিতা ও গান প্রাধান্য পেতে থাকল। নজরুলের চেয়ে ফয়েজ ভালো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেয়েছিলেন। মার্ক্সবাদী মতবাদ ও তার প্রায়োগিক দিক নিয়েও ফয়েজের বোঝাপড়া ভালো ছিল। তদুপরি তিনি ছিলেন অধিকতর মধ্যবিত্ত ও শরিফ (ভদ্রলোক)। তাঁর কবিতার শিকড় ও হাতিয়ার উর্দু ও ফারসি সাহিত্যের চমৎকার নির্যাস। এমনকি তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা ‘মুঝছে পেহলি সি মুহাব্বাত’-এর ভাষা অত্যন্ত কুশলী গ্রন্থীবদ্ধ ফারসি-উর্দু, সুশিক্ষিত অল্পসংখ্যক মানুষের পক্ষেই যার অর্থোদ্ধার সম্ভব। অন্যদিকে নজরুল কৃষক পরিবারের সন্তান। কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ যে শ্রেণী ও সাংস্কৃতিক শিকড় থেকে উঠে আসা তা নানা দিক থেকে নজরুলের চেয়ে ফয়েজের মধ্যে অনেক ভালোমতো ধরা পড়ে। কিন্তু পাকিস্তানে ফয়েজের রাজনীতির জায়গা কোথায়? যদিও পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্ট ঐতিহ্য অনেক গভীরে প্রোথিত আর মার্ক্সবাদী বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিককর্মীদের দ্বারা সেখানকার রাজনীতি তাড়িত হয়েছে, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে তেমন তাড়না ছিল পুরোপুরি অনুপস্থিত। ভারতের প্রতি ঘৃণায় ঐক্যবদ্ধ—তার অধিক কিছু নয়। কেউ হয়তো মিয়া ইফতেখারুজ্জামান ও ওয়ালী খানের নাম বলতে পারেন, তবে তাঁরা যতটা না মার্ক্সবাদী, তাঁর চেয়ে বেশি পশতুন। ঢাকায় শিশুকালে শুনেছিলাম পাকিস্তানে টাইমস-এ জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক আইন জারির (১৯৫৮ সালে) প্রশংসা করে সম্পাদকীয় লিখতে ফয়েজ অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। মিয়া ইফতেখারুজ্জামান তখন পত্রিকাটির মালিক আর সম্পাদক ফয়েজ। কিছুদিন পরই পাকিস্তান সরকার পত্রিকাটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিলে ফয়েজকে পত্রিকা ছাড়তে হয়। এই স্পর্ধা দেখানোর পর রাজনৈতিক ফয়েজকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি, অন্তত প্যান-পাকিস্তানি রাজনীতিতে, যে রাজনীতির অনুরণন পূর্ব পাকিস্তানেও পাওয়া যেত। তখন থেকেই ফয়েজ হয়ে ওঠেন শুধুই একজন কবি, সমাজতন্ত্রী কবি আর নন।ফয়েজ তাঁর আদর্শের অবয়বে যে পাকিস্তানকে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন ১৯৭১-এ, সেই পাকিস্তানের অবসান ঘটে গেছে। ঢাকায় ২৫ মার্চ ক্র্যাকডাউন চালানোর পরের দিনগুলোতে মানুষেরা যখন ভাবছে পূর্বাংশের রক্তাক্ত ঘটনাবলিকে কীভাবে দেখছে পশ্চিমাংশের জনগণ, তখন দেখা গেল সমস্বরে তার অনুমোদন, নেতৃত্বে জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি বললেন ‘থ্যাঙ্ক গড! পাকিস্তান ইস সেভড!’ এই অকালীন বক্তব্য বিখ্যাত হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত ভুট্টোর সব কৌশল গতি হারিয়ে ফেলল—ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তান লজ্জাজনকভাবে ভেঙে পড়ল। ফয়েজকে যাঁরা চিনতেন, সেদিনগুলোতে তাঁরা জানতে উৎসুক ছিলেন, কী বললেন ফয়েজ? তিনি প্রতিবাদ করেছেন? এটা যে ভুল হচ্ছে এ কথা বলে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন? ফয়েজ আসলে কী করেছিলেন আমরা জানি না। কিন্তু এটুকু জানি, এই সেই কবি, যাঁর কাছে বহু বাংলাদেশি আশা করেছিলেন তাঁদের পাশে দাঁড়বেন তিনি। যেসব পাকিস্তানি ভিন্নমত জানাতে চেয়েছেন তাঁরা সামরিক শাসনে চালিত পাকিস্তানে তা জানাতে পারতেন—এমন আশা নিশ্চয়ই ঠিক নয়। একেবারে হাতে গোনা কয়েকজন তা পেরেছিলেন। যাঁরা তা করেছিলেন তাঁদের হয় জেলে যেতে হয়েছিল নতুবা আরও বড় মূল্য দিতে হয়েছিল। কিন্তু বাংলার জনগণের ভাবনায় কবি ও রাজনীতিক ফয়েজ যেমন মানুষ ছিলেন, তাঁর কাছে তাঁদের সেই দাবি ছিল। তাঁকে শুধু এক রক্ত-মাংসের পাকিস্তানি হিসেবে দেখতে চায়নি। একভাবে ফয়েজ হয়ে উঠেছিলেন পাকিস্তানের ইতিহাসের বন্দী।বন্ধু ও অচেনা১৯৭৪ সালে ফয়েজ বাংলাদেশে এসেছিলেন। সরকারি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংস্কৃতি উপদেষ্টা হিসেবে। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু লেখক, কমিউনিস্ট কর্মী শহীদুল্লা কায়সার, মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হানের মতো অন্তরঙ্গতম বন্ধু নেই। যুদ্ধের সময় তাঁদের অন্তর্ধান ঘটে। বন্ধুত্বের মধ্যে স্মৃতি, আলাদা ইতিহাসের বোধ আর দূরের দুই দেশের বাস্তবতা এসে পড়ায় অন্যরা ফয়েজের সঙ্গে স্বস্তিবোধ করেননি। বন্ধুত্বের উষ্ণতার ঘাটতি ছিল। তাঁর সবচেয়ে যন্ত্রণাদীর্ণ ও সুন্দর কবিতার অন্যতম ‘হাম কে থেহরে আজনবি’ (আমরা অচেনা হলাম)-তে তাঁর ব্যক্তিগত যন্ত্রণাবোধ উঠে এসেছে। আর উঠে এসেছে বহু পাকিস্তানি ও বাংলাদেশির বোধ, যুদ্ধ যাঁদের বন্ধুত্বকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। কবিতাটির শেষের পঙিক্তগুলো হলো:উন সে জো কেহনে গায়ে থি ফয়েজ, জা সাদকা কিয়ে আনকাহি হি রেগ গায়ি ভো বাত, সাব বাতোন কে বাদবন্ধুত্ব মানুষের ভাবনার চেয়ে অনেক কঠিন। দক্ষিণ এশীয়ায় রাজনীতি বন্ধুত্বকে পুড়াতে পারে সংঘাতের আগুনে।১৯৫০-এ কারাবন্দী হওয়ার পরপরই ফয়েজের রাজনীতির কবর হয়ে যায় পাকিস্তানে। শুধু তাঁর কবিতা বেঁচে থাকে। কবি হিসেবে প্রতিদিন তাঁর মর্যাদা বেড়েছে—সারা উপমহাদেশে খ্যাতির বিস্তার ঘটেছে। অবশেষে ফয়েজ মহত্তম কিংবদন্তিদের অন্যতম হয়ে ওঠেন। কারও মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ১৯৪৭-এর পর যেহেতু যে দেশে তাঁর বাস সে দেশের দ্বারা তাঁর জগৎ নির্ধারিত হয়েছে, তাহলে কি তিনি নিজ জনগণকে (রাষ্ট্রের সীমা ছাড়িয়ে যে জনগণ দক্ষিণ এশীয়) গড়ে তোলার কাজে ইস্তফা দিলেন। পাকিস্তানের রাজনীতি তাঁর সমাজতান্ত্রিক মনকে আবদ্ধ করে ফেলেছিল। যে রাজনীতির বদল ঘটাতে চেয়েছিলেন সেই রাজনীতিই তাঁর মানসপট অতিক্রম করে গেল। ফয়েজের ব্যক্তিত্ব শুধু একজন কবির ব্যক্তিত্ব ছিল না। আমার মনোবেদনার কারণ আসলে সেটাই—স্বীকার করি, এটা আমার অযৌক্তিক অনুভূতি। আমরা এমনও দেখেছি, রাজনীতি পাল্টাতে না পেরে কখনো কখনো মানুষ কেমন করে নিজেই বিরাজনীতিকৃত হয়ে যায়। একবার মুনীর চৌধুরী প্রকাশ্যে আপসোস করে বলেছিলেন, জীবনের প্রলুব্ধতার কাছে তিনি হেরে গেছেন—শিক্ষক হওয়ার জন্য দলীয় কর্মীর জীবন ছেড়ে দিয়েছেন। ফয়েজ কোন পথ অনুসরণ করেছিলেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। কিন্তু আশা করি পাকিস্তানে তিনি রাজনৈতিক দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েই শান্তি পেতেন। ফয়েজের কবিতা পাকিস্তানে যতটা প্রশংসনীয়, ঠিক ততটাই ভারতেও। আমার মনে হয়, ভারতের রাজনৈতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ মাটিতেই হয়তো ফয়েজ আরও ভালো থাকতে পারতেন। ভারতে সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির ভগ্নদশা হলেও অস্তিত্বহীন তো নয়। কলামিস্ট, বিদ্রোহী, সেক্যুলারপন্থী, রোমান্টিক কবি, অ্যালকোহলপ্রেমী—সব সত্তা শেষ পর্যন্ত হয়ে গেল পাকিস্তানি। তাই তিনি ১৯৭৪ সালে ভুট্টোর সঙ্গে ঢাকা এসে দেখলেন তাঁর বহু বন্ধুকে মেরে ফেলা হয়েছে কিংবা কোনো খোঁজ নেই। সে শক্তি এসব ঘটিয়েছে, তখন বাংলাদেশে তিনি সেই শক্তিরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। গভীর ফাটল হয়ে পড়েছে অসীম ও পূর্ণাঙ্গ: তাঁর সফরসঙ্গীদের সঙ্গে আর মেলামেশা সম্ভব ছিল না তাঁর বাংলাদেশি বন্ধুদের। যারা পৃথিবীর ইতিবাচক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে, তারা কখনো কখনো ইতিহাসেরই দাস হয়ে যেতে বাধ্য হয়। | null |
7fc5dff55a | প্রশ্ন:অভিনন্দন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। কেমন লাগছে সেরার মুকুট জয় করে?
অভিনন্দন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। কেমন লাগছে সেরার মুকুট জয় করে?
ধন্যবাদ। নিঃসন্দেহে এ এক অসাধারণ অনুভূতি। ক্যারিয়ারে অল্প সময়ে অনেক কিছুই অর্জন করেছি। কিন্তু মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ অর্জনের ব্যাপারটাই অন্য রকম। একমাত্র যিনি এটা অর্জন করেন, তিনিই জানেন এই অনুভূতি। এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা অর্জন।
ধন্যবাদ। নিঃসন্দেহে এ এক অসাধারণ অনুভূতি। ক্যারিয়ারে অল্প সময়ে অনেক কিছুই অর্জন করেছি। কিন্তু মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ অর্জনের ব্যাপারটাই অন্য রকম। একমাত্র যিনি এটা অর্জন করেন, তিনিই জানেন এই অনুভূতি। এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা অর্জন।
প্রশ্ন:সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যাঁরা অংশ নেন, তাঁরা অনেকেই সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বা পরে যুক্ত হন। আপনার ক্ষেত্রে কোনটা ঘটেছে?
সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যাঁরা অংশ নেন, তাঁরা অনেকেই সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বা পরে যুক্ত হন। আপনার ক্ষেত্রে কোনটা ঘটেছে?
আমি কখনোই ভাবিনি যে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ হব। এই আয়োজনে অংশ নেওয়ার আগে থেকেই আমি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছি। একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত আছি। এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে কোভিড–১৯ পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছি। আমার কাছে মনে হয়, একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। সামনের দিকে আমি নারী, শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখি। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তারপর যেন মেয়েরা বিয়ে করে—এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে চাই।
আমি কখনোই ভাবিনি যে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ হব। এই আয়োজনে অংশ নেওয়ার আগে থেকেই আমি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছি। একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত আছি। এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে কোভিড–১৯ পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছি। আমার কাছে মনে হয়, একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। সামনের দিকে আমি নারী, শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখি। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তারপর যেন মেয়েরা বিয়ে করে—এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে চাই।
প্রশ্ন:আপনি কেন নিজেকে অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে অনন্য বলে মনে করছেন?
আপনি কেন নিজেকে অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে অনন্য বলে মনে করছেন?
আমি কখনোই কাউকে হিংসা করি না। গিবত করা আর বাজে কথা বলা একদমই পছন্দ করি না। বিজয়ী হওয়ার পেছনে এগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। এ ছাড়া বিচারকেরা হয়তো চেয়েছেন, এমন একজন নির্বাচিত হোক, যে প্রতিযোগিতায় আসার আগে থেকেই অনেক কিছু জানে। আমি অনেক বছর ধরে মডেলিং করছি, আমার একটা অভিজ্ঞতা আছে। আমি পরিশ্রমী। সাত বছর মডেলিং করে তবেই স্বপ্ন দেখেছি, মিস ইউনিভার্স হব। একদিনে এসে, এক মাসের একটা গ্রুমিং সেশনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হইনি। তা ছাড়া বুদ্ধিমত্তার একটা ব্যাপারও আছে। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বডি ল্যাঙ্গুয়েজও একটা বড় ফ্যাক্টর। সবকিছু মিলিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন তাঁরা। এ আয়োজনের সেরা দশে যাঁরাই ছিলেন, সবাই কিন্তু গুণবতী। এটা যেহেতু প্রতিযোগিতা, তাই একজনকেই বেছে নিতে হবে। হয়তো এসব ভেবেই বিচারকেরা আমাকে বাছাই করেছেন।
আমি কখনোই কাউকে হিংসা করি না। গিবত করা আর বাজে কথা বলা একদমই পছন্দ করি না। বিজয়ী হওয়ার পেছনে এগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। এ ছাড়া বিচারকেরা হয়তো চেয়েছেন, এমন একজন নির্বাচিত হোক, যে প্রতিযোগিতায় আসার আগে থেকেই অনেক কিছু জানে। আমি অনেক বছর ধরে মডেলিং করছি, আমার একটা অভিজ্ঞতা আছে। আমি পরিশ্রমী। সাত বছর মডেলিং করে তবেই স্বপ্ন দেখেছি, মিস ইউনিভার্স হব। একদিনে এসে, এক মাসের একটা গ্রুমিং সেশনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হইনি। তা ছাড়া বুদ্ধিমত্তার একটা ব্যাপারও আছে। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বডি ল্যাঙ্গুয়েজও একটা বড় ফ্যাক্টর। সবকিছু মিলিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন তাঁরা। এ আয়োজনের সেরা দশে যাঁরাই ছিলেন, সবাই কিন্তু গুণবতী। এটা যেহেতু প্রতিযোগিতা, তাই একজনকেই বেছে নিতে হবে। হয়তো এসব ভেবেই বিচারকেরা আমাকে বাছাই করেছেন।
প্রশ্ন:শুরু থেকে অনেকে বলছিল, আপনাকে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন করা হবে। শেষ পর্যন্ত তা–ই হলো। এটা কি আগে থেকেই ঠিকঠাক ছিল?
শুরু থেকে অনেকে বলছিল, আপনাকে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন করা হবে। শেষ পর্যন্ত তা–ই হলো। এটা কি আগে থেকেই ঠিকঠাক ছিল?
আমি বাংলাদেশের প্রথম সারির মডেল। নিয়মিত কাজ করছি। সবাই আমাকে চেনে। তাই লোকের মুখে আমার নাম বেশি ছড়িয়েছে। একটা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় আমাকেই যদি চ্যাম্পিয়ন করবে, তাহলে এক মাসের গ্রুমিং করিয়ে, পাঁচতারা হোটেলে রেখে, ভারত থেকে গ্রুমার এনে সবাইকে নিয়ে এত বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের দরকারই ছিল না। আমাদের সেরা দশের সবাইকে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ বলেছে, তোমরা দশজনই কিন্তু মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। যেহেতু এটা প্রতিযোগিতা, তাই একজনকে নির্বাচিত করতে হবে। নম্বরের পার্থক্য খুবই কম, এক বা দুই হবে।
আমি বাংলাদেশের প্রথম সারির মডেল। নিয়মিত কাজ করছি। সবাই আমাকে চেনে। তাই লোকের মুখে আমার নাম বেশি ছড়িয়েছে। একটা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় আমাকেই যদি চ্যাম্পিয়ন করবে, তাহলে এক মাসের গ্রুমিং করিয়ে, পাঁচতারা হোটেলে রেখে, ভারত থেকে গ্রুমার এনে সবাইকে নিয়ে এত বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের দরকারই ছিল না। আমাদের সেরা দশের সবাইকে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ বলেছে, তোমরা দশজনই কিন্তু মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। যেহেতু এটা প্রতিযোগিতা, তাই একজনকে নির্বাচিত করতে হবে। নম্বরের পার্থক্য খুবই কম, এক বা দুই হবে।
প্রশ্ন:আপনার বিরুদ্ধে বয়স লুকানোর অভিযোগও উঠেছে, কী বলবেন?
আপনার বিরুদ্ধে বয়স লুকানোর অভিযোগও উঠেছে, কী বলবেন?
সবাই গুগল করে বলছেন আমার বয়স ২৮ বা ২৯, জন্ম ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯২। এটা মিথ্যা কথা। বয়সের কোনো তথ্য আমি গোপন করিনি। আমার পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ আয়োজকদের কাছে জমা আছে।
সবাই গুগল করে বলছেন আমার বয়স ২৮ বা ২৯, জন্ম ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯২। এটা মিথ্যা কথা। বয়সের কোনো তথ্য আমি গোপন করিনি। আমার পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ আয়োজকদের কাছে জমা আছে।
প্রশ্ন:আপনার এসএসসি পরীক্ষার সনদপত্র বলছে ভিন্ন কথা...
আপনার এসএসসি পরীক্ষার সনদপত্র বলছে ভিন্ন কথা...
আবারও বলছি, আমি কোনো তথ্য গোপন করিনি। বয়সের প্রমাণ দিয়েই আমাকে নাম নিবন্ধন করতে হয়েছে। এসব না দিলে আমাকে নিবন্ধন করতে দিত না। আর সার্টিফিকেট কে বা কারা বের করেছে, তা আমি জানি না। এসব নিয়ে ভাবিও না। আমাদের সময়ে সাটিফিকেটে অনেক ভুল থাকত। এই যেমন বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ। আমার এসএসসির সনদে যে জন্ম তারিখ ও সাল লেখা আছে, সেটা সত্য নয়।
আবারও বলছি, আমি কোনো তথ্য গোপন করিনি। বয়সের প্রমাণ দিয়েই আমাকে নাম নিবন্ধন করতে হয়েছে। এসব না দিলে আমাকে নিবন্ধন করতে দিত না। আর সার্টিফিকেট কে বা কারা বের করেছে, তা আমি জানি না। এসব নিয়ে ভাবিও না। আমাদের সময়ে সাটিফিকেটে অনেক ভুল থাকত। এই যেমন বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ। আমার এসএসসির সনদে যে জন্ম তারিখ ও সাল লেখা আছে, সেটা সত্য নয়।
প্রশ্ন:আপনি যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০০৭ সালে এসএসএসি পাস করেছেন। এটা সত্য, নাকি মিথ্যা?
আপনি যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০০৭ সালে এসএসএসি পাস করেছেন। এটা সত্য, নাকি মিথ্যা?
দিস ইজ রাইট। কিন্তু আমার জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট—সবকিছুতে লেখা আছে, ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতে আমার জন্ম।
দিস ইজ রাইট। কিন্তু আমার জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট—সবকিছুতে লেখা আছে, ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতে আমার জন্ম।
প্রশ্ন:এই প্রতিযোগিতা ঘিরে আপনাকে নিয়েই কেন এত অভিযোগ উঠছে?
এই প্রতিযোগিতা ঘিরে আপনাকে নিয়েই কেন এত অভিযোগ উঠছে?
আমাকে নিয়ে কেন এত অভিযোগ, আমি তা বলতে পারব না। যেহেতু এটা প্রতিযোগিতা, আমার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন প্রতিযোগী ছিলেন। তাঁরা মনে করতে পারেন, তাঁরা আরও বেশি যোগ্য। সেই ঈর্ষা থেকে হয়তো এমনটা হচ্ছে। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ, এখানে ভালো করলেও লোকে কথা বলবে, খারাপ করলে তো বলবেই। আমাকে নিয়ে এর আগেও নানা বিতর্ক হয়েছে। শুধু যে মিস ইউনিভার্স নিয়ে হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। আমার জীবনের অনেক কিছু নিয়েই কনট্রোভার্সি।
আমাকে নিয়ে কেন এত অভিযোগ, আমি তা বলতে পারব না। যেহেতু এটা প্রতিযোগিতা, আমার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন প্রতিযোগী ছিলেন। তাঁরা মনে করতে পারেন, তাঁরা আরও বেশি যোগ্য। সেই ঈর্ষা থেকে হয়তো এমনটা হচ্ছে। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ, এখানে ভালো করলেও লোকে কথা বলবে, খারাপ করলে তো বলবেই। আমাকে নিয়ে এর আগেও নানা বিতর্ক হয়েছে। শুধু যে মিস ইউনিভার্স নিয়ে হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। আমার জীবনের অনেক কিছু নিয়েই কনট্রোভার্সি।
প্রশ্ন:এসব কনট্রোভার্সিকে কীভাবে দেখেন?
এসব কনট্রোভার্সিকে কীভাবে দেখেন?
এটা আমাকে আরও বেশি সামনে এগিয়ে যেতে হেল্প করে। কনট্রোভার্সিকে কখনোই নেতিবাচকভাবে দেখি না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, মিস ইউনিভার্সের মূল আসরে যদি যেতে পারি, আজ যাঁরা উল্টাপাল্টা কথা বলছে, তারাই আমাকে নিয়ে ভালো কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করবে। কেউ আমাকে নিয়ে নেগেটিভ কথা বললে আমার মধ্যে জিদ চলে আসে। কনফিডেন্স বাড়ে।
এটা আমাকে আরও বেশি সামনে এগিয়ে যেতে হেল্প করে। কনট্রোভার্সিকে কখনোই নেতিবাচকভাবে দেখি না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, মিস ইউনিভার্সের মূল আসরে যদি যেতে পারি, আজ যাঁরা উল্টাপাল্টা কথা বলছে, তারাই আমাকে নিয়ে ভালো কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করবে। কেউ আমাকে নিয়ে নেগেটিভ কথা বললে আমার মধ্যে জিদ চলে আসে। কনফিডেন্স বাড়ে।
প্রশ্ন:শোনা যাচ্ছে, মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আপনার বয়স লুকানোর অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে। যাছাই–বাছাই চলছে। এটা যদি প্রমাণিত হয় আর মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যদি কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য আপনি কি প্রস্তুত?
শোনা যাচ্ছে, মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আপনার বয়স লুকানোর অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে। যাছাই–বাছাই চলছে। এটা যদি প্রমাণিত হয় আর মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যদি কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য আপনি কি প্রস্তুত?
আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। আমার পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, জন্মনিবন্ধন তো আর কেউ বদলাতে পারবে না। তাঁরা চাইলেও উল্টাপাল্টা কিছু বের করতে পারবে না। এটা সম্ভবও নয়। এরপর যদি তারা খতিয়ে দেখে প্রমাণ পায়, তাহলে যে ব্যবস্থা নেবে আমি তা–ই মাথা পেতে নেব।
আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। আমার পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, জন্মনিবন্ধন তো আর কেউ বদলাতে পারবে না। তাঁরা চাইলেও উল্টাপাল্টা কিছু বের করতে পারবে না। এটা সম্ভবও নয়। এরপর যদি তারা খতিয়ে দেখে প্রমাণ পায়, তাহলে যে ব্যবস্থা নেবে আমি তা–ই মাথা পেতে নেব।
প্রশ্ন:র্যাম্প মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। এখন হলেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। এরপর আর কী কী করতে চান?
র্যাম্প মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। এখন হলেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ। এরপর আর কী কী করতে চান?
ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার যেমন বাংলাদেশের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার নিয়ে এসেছেন, আমি অভিনয়শিল্পী হয়ে বাংলাদেশের জন্য অস্কার আনতে চাই।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার যেমন বাংলাদেশের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার নিয়ে এসেছেন, আমি অভিনয়শিল্পী হয়ে বাংলাদেশের জন্য অস্কার আনতে চাই। | 2,013 |
13256f268c | যশোর শিল্প ও বণিক সমিতির নির্বাচন স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে মামলা করে জীবননাশের ¦আশঙ্কায় পড়েছেন জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ খান। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক শীর্ষ নেতা মুঠোফোনে তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় তিনি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর পর থেকে শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকায় তাঁর বাসভবন ও ডাল মিল এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।ফিরোজ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের কেউ ভালো নেই। আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা ফোন করে বলেছেন, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য একটা কাগজ পাঠাচ্ছি, স্বাক্ষর করে দেবেন। তা না হলে আমার ছেলেরা যা করার তা করবে। এর পর থেকে আমার স্ত্রী মানসিক চাপে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছে, বাঁচবে কি না জানি না। আমিও জীবনাশঙ্কায় রয়েছি।’জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার আক্কাছ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যবসায়ীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার সব করা হচ্ছে। তাঁর বাসভবন ও মৎস্য হ্যাচারি প্রতিষ্ঠানের আশপাশে পুলিশি টহল রয়েছে।নির্বাচনে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় নির্বাচন স্থগিত চেয়ে গত বৃহস্পতিবার যশোর সহকারী জজ আদালতে ফিরোজ খান আবেদন করেন। শুনানি শেষে সদর সহকারী জজ আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলাম নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন। একই সঙ্গে কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না, সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয় বিবাদীদের। বিবাদীরা হলেন সমিতির প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাবিনা ইয়াসমিন, নির্বাচন বোর্ডের আহ্বায়ক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান, বোর্ডের সদস্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উল আলম ও সাইফুল ইসলাম।এদিকে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে একটি প্যানেলের নেতা ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলী রেজা রাজু অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনটি রাজনৈতিকীকরণ বা দলীয়করণ করা হচ্ছে। তাই তো বিএনপির চার প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করতে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাঁকেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে ফোন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। কিন্তু তিনি প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনের আগে এবার যেসব কর্মকাণ্ড হয়েছে, তাতে ভোটাররা পরিস্থিতি খারাপ মনে করলে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।এর আগে বিএনপিপন্থী চার ব্যবসায়ী নেতা নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র কেনার পর আওয়ামী লীগের এক পক্ষ পুলিশ দিয়ে নাশকতার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করায়। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা থানা ঘেরাও, দোকান বন্ধ করে মানববন্ধন, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পেয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া সমঝোতার ভিত্তিতে এবারের চেম্বার নির্বাচনের কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আগের মতো এবারের নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ নেই। | null |
9df2411d42 | রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দুই কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের এনআইডি দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে সংস্থাটি। আজ সোমবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে কমিশন। শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে অনুসন্ধান শুরু হবে বলে জানিয়েছে দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
দুদক জানিয়েছে, অনুসন্ধানের আওতায় আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ৫১ জন রোহিঙ্গাকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওইসব পরিচয়পত্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট করেছে বলেও প্রমাণ মিলেছে।
যাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তাঁদের মধ্যে দুজন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এঁরা হলেন, চট্টগ্রাম জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান ও চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা (বর্তমানে পাবনার নির্বাচন কর্মকর্তা) আব্দুল লতিফ শেখ। অন্যরা হলেন, ঢাকা জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের (এনআইডি) টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সাগর, একই শাখার সাবেক টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, চট্টগ্রামের পটিয়ার বড় উঠান ইউনিয়মের শাহানুর মিয়া, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের অস্থায়ী অপারেটর জনপ্রিয় বড়ুয়া ও চট্টগ্রাম ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন।
এঁদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন জয়নাল আবেদীন।
দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া ও ল্যাপটপসহ নির্বাচনের সরঞ্জাম আত্মসাতের অভিযোগ আছে।দুদক বলছে, এনআইডি জালিয়াতির এ অভিযোগ প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ অনুসন্ধান অনুবিভাগের মাধ্যমে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।গত ১৯ সেপ্টেম্বর দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ, উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন ও মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনের কাছে এক চিঠির মাধ্যমে অনুসন্ধানের অনুমতি চায়। দলটি তিনটি পাসপোর্ট কার্যালয়সহ বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করা প্রায় দেড়শ পাসপোর্ট আবেদনপত্রের নথি সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো এনফোর্সমেন্ট দলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলেও নির্বাচন কমিশনের সবাই দায়সারা কাজ করেছেন। তারা এই অভিযানের আগ পর্যন্ত ল্যাপটপ হারানো সংক্রান্ত কোনো জিডি বা মামলা এবং ল্যাপটপ উদ্ধারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে অভিযান চালানোর পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস কোতোয়ালী থানায় এবং ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বাদী হয়ে জেলার সদর থানায় ভোটার তালিকায় ৬০০ রোহিঙ্গাদের নাম উঠানোর অভিযোগে মামলা করেন। কোতোয়ালী থানায় করা মামলায় পাঁচ কর্মচারীকে আসামি করা হয়।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট দলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই মামলা লোকদেখানো এবং দায়িত্ব এড়ানোর কৌশলমাত্র। এনফোর্সমেন্ট দলের কাছে স্পষ্টভাবে মনে হয়, হাতেগোনা কয়েকজন কর্মচারীর পক্ষে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তারাও জড়িত ছিলেন বলে রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়।
দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশনের সার্ভারে তথ্য সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ ছাড়াও ডিজিটাল ক্যামেরা, স্ক্যানার, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন, আইরিশ মেশিন, ডিজিটাল সিগনেচার প্যাডসহ এনআইডিতে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো কোনো কর্মচারীর কাছে থাকার কথা নয়। কর্মকর্তাদের কাছে ওইসব যন্ত্রপাতি থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ল্যাপটপ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। দুদককে পাশ কাটানোর জন্য দায়সারা মামলা করে জড়িত কর্মকর্তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়। | null |
4e88053437 | সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের পর যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকহারে কমেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিদ্যানন্দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সমর্থক দাবি করে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৩৬। হাজিরা খাতা সূত্রে জানা গেছে, রোববার থেকে বিদ্যালয়ে গড়ে ১০-১৫ জন উপস্থিত হচ্ছে। গত শনিবারের নির্বাচনে বিদ্যানন্দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন খলিলুর রহমান। পরাজিত প্রার্থী জুলমত আলী ও তাঁর সমর্থকেরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে খলিলুর রহমানের সমর্থক দাবি করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিচ্ছেন। সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার দেখা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণীর ২৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নয়জন, প্রথম শ্রেণীতে ৩৬ জনের মধ্যে পাঁচজন শিক্ষার্থী উপস্থিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষক রোকসানা পারভীন বলেন, রাজনীতির দলাদলির কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসতে পারছে না। দ্বিতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী বলে, ‘বুড়িহাটি গ্রামের আমজাদ আমাদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিচ্ছে।’ বিদ্যালয়ের অভিভাবক মজিরুন্নেসা বলেন, ‘প্রতি মোড়ে মোড়ে লাঠি নিয়ে লোক দাঁড়িয়ে আছে। শিশুরা স্কুলে আসবে কীভাবে।’স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমারা চেষ্টা করেও শিশুদের বিদ্যালয়ে আনতে পারছি না। অভিভাবকেরা ভয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না।’ পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলমত আলী অভিযোগ করেন, ওই প্রধান শিক্ষক ভোটের পর তাঁর কর্মীদের মারধর করেছেন। এ কারণে এলাকার অভিভাবকেরা স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন না। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করিনি।’ কাউকে মারধরের অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে জেনেছি। আমি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে এ সমস্যার সমাধান করব।’ | null |
1770dcacf9 | কাঠমান্ডুতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও একজনকে দেশে আনা হয়েছে। তাঁর নাম শেখ রাশেদ রুবায়েত। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আহত পাঁচজনকে দেশে আনা হলো।
আজ শনিবার দুপুরে রাশেদ রুবায়েতকে ঢাকায় আনা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার দেশে ফেরেন বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার আহত তিন যাত্রী। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। ওই তিনজন হলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের বাসিন্দা সৈয়দ কামরুন্নাহার স্বর্ণা, আলমুন নাহার অ্যানি ও মেহেদি হাসান।
এর আগে আহত যাত্রী রিজওয়ানুল হককে সিঙ্গাপুরে ও শাহরিন আহমেদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। শাহরিন এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত সোমবার ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। | null |
3e07d44601 | মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার এই রায়কে ‘আঁতাতের রায়’ উল্লেখ করে শাহবাগে রাস্তা অবরোধ করতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এতে ইমরানসহ অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। রায় ও হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেল চারটায় শাহবাগে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। এ ছাড়া, আজ বৃহস্পতিবার চারটায় সারা দেশে গণজাগরণ মঞ্চ বিক্ষোভ করবে।রায়ের পর থেকে গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত পৃথকভাবে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চের দুই অংশ। আপিল বিভাগের রায়ের পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইমরান এইচ সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে পরিকল্পিতভাবে এ রায় দেওয়া হয়েছে। এই রায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।’সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইমরান এইচ সরকার একটি মিছিল নিয়ে ট্রাইব্যুনালের দিকে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি ‘জামায়াতকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার জন্য এই রায় দেওয়া হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। এ রকম একটি রায় দেওয়ার জন্য বছর খানেক ধরে ষড়যন্ত্র হচ্ছিল বলে তিনি দাবি করেন।পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা ‘প্রহসনের এই রায়, মানি না মানব না’; ‘রাজাকার সাঈদীর ফাঁসি চাই, দিতে হবে’; ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ এসব স্লোগান দিতে থাকেন।বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে শিশুপার্কের দিক থেকে আসা দুটি জলকামান থেকে গরম ও রঙিন পানি ছুড়তে থাকে পুলিশ। এ সময় ফুলের দোকানের পাশে অবস্থান নিয়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়লে বেশ কয়েকটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশের হামলায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, মঞ্চের কর্মী নাফিস, বিন্দু ও মোস্তাক আহত হন। তাঁদের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আরও বেশ কয়েকজন আহত হলেও তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন।হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে জাদুঘরের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ‘শাহবাগ আন্দোলন’। গণজাগরণ মঞ্চে বিভক্তির পর পাঁচটি বাম ছাত্রসংগঠন মিলে একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছিল। মিছিল করে তারা শাহবাগ মোড়ের দিকে গেলে তাদেরও জলকামান নিয়ে ধাওয়া করে আজিজ সুপার মার্কেট পর্যন্ত নিয়ে যায় পুলিশ।পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান বলেন, ‘আমরা কারও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেইনি। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় প্রথমে তাঁদের সরে যেতে বলা হয়েছে। তারা না সরায় জলকামান ব্যবহার করতে হয়েছে।’পুলিশের হামলার সময় জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইমরানবিরোধী অংশের প্রতিবাদী গণসংগীত চলছিল। একপর্যায়ে গণসংগীত থামিয়ে ওই অংশের নেতা কামাল পাশা চৌধুরী মাইকে হামলার নিন্দা জানান। সকালে এই অংশের নেতা-কর্মীরাও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে শাহবাগেই বিক্ষোভ মিছিল শেষে জাদুঘরের সামনে বক্তৃতা ও প্রতিবাদী গণসংগীতের আয়োজন করেন তাঁরা। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কামাল পাশা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, এ রায় মানি না। এ রায়কে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। এ রায়ের মাধ্যমে স্বাধীন দেশের মানুষ প্রতারিত হয়েছে।’পুলিশের হামলার পর দুপুর ১২টার দিকে আজিজ সুপার মার্কেট থেকে পুনরায় সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভকারীরা ফিরে এসে জাতীয় জাদুঘরের সামনে একটি সমাবেশ করেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের একাংশ যোগ দেয়। এরাও সংবাদ সম্মেলন করে দুই পক্ষকে বর্জন করেছিল।শাহবাগ আন্দোলনের সংগঠক বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু ও বোয়ানের অন্যতম সদস্য কানিজ আকলিমা সুলতানা আন্দোলনের স্বার্থে দুই অংশকে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তাব করেন। উভয় অংশের নেতাদের মতামত অবিভক্ত কর্মসূচির পক্ষে থাকলেও বেলা দেড়টার দিকে ইমরানপন্থী অংশ আলাদাভাবেই বিকেলে সমাবেশ ডাকে।হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ইমরান এইচ সরকার বিকেলের সমাবেশে যোগ দেননি। ব্লগার মারুফ রসূলের সঞ্চালনায় সমাবেশে যুব ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি হাসান তারেক, ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাবিব, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় অপর অংশের প্রতিবাদী সংগীত হচ্ছিল। সেখানে তীব্র শব্দদূষণের সৃষ্টি হয়। উভয় অংশ থেকেই একাধিক বক্তা অপরকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন।ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী রায় ও হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরকারের প্রতি ‘সুনির্দিষ্টভাবে সুবিচার’ দাবি করেন। পরে ব্লগার আরিফ জেবতিক ইমরান এইচ সরকারের পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। | null |
6e8728e155 | ‘...এটা কেন হলো? ওটা আরও ভালো হতে পারত!’ গত বিশ্বকাপের সময় এমন অনেক প্রশ্ন এবং উপদেশ শুনতে হয়েছে আমাকে। বাংলাদেশ থেকে মোবাইলে সুদূর ওয়েস্ট ইন্ডিজে পৌঁছে যেত সবই। মোবাইল এমন একটা জিনিস, যেটি যোগাযোগের মাধ্যম থেকে অনেক সময়ই উপদ্রব। ভুক্তভোগী আমি নিজেই। আমার ফ্ল্যাটের পাশেই থাকা এক ড্রাইভার পর্যন্ত আমাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ফোন করে বসল। ওপরের কথাটি তারই। এটা বাস্তবতা। সুযোগ থাকলে লোকজন আপনাকে ফোন করবেই। আর বন্ধু-বান্ধব তো আছেই। কারও এক বন্ধু হয়তো বলল, ‘দোস্ত তোর এই শটটা ঠিক হয়নি। শটটা এইভাবে নিতে পারতি’...। বিশ্বকাপের সময় এগুলো কানে তোলা যাবে না একদম। এবার তো আমরা দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলছি। মোবাইল বিড়ম্বনা আরও প্রবল হতে পারে। সুতরাং বিশ্বকাপের সময় যতটা সম্ভব এই বস্তুটি অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার না করাই ভালো ক্রিকেটারদের। খেলা নিয়ে খেলার বাইরের লোকের কথা শোনা চলবে না।তাই আমার পরামর্শ, মোবাইল ফোন ‘সংরক্ষিত’ করে দেওয়া উচিত। তাই বলে কাউকে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কথা বলছি না, শুধু নির্ধারিত কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলা সীমাবদ্ধ থাকলেই ভালো। এটা শুধু পরিবার হতে পারে। এর বাইরে অন্য কারও ফোন ধরা উচিত হবে না খেলোয়াড়দের।লেখার শুরুতে মোবাইল নিয়ে পড়ার কারণ, বিশ্বকাপটা শুধু মাঠের লড়াই নয়, মাঠের বাইরের লড়াইও। কাজেই মাঠের বাইরে আমাদের দলীয় ব্যবস্থাপনা এমন হওয়া উচিত, খেলোয়াড়েরা যেন চাপমুক্ত হয়ে মুক্তমনে নিজের খেলাটা খেলতে পারে। এটা খুবই জরুরি। দেশের মাটিতে খেলা বলে প্রত্যাশার চাপ একটু বেশিই থাকবে। আর এই প্রত্যাশা বেড়েছে আমাদের দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে। তবে দলের প্রতি আমার প্রথম কথা, প্রত্যাশার চাপটা বাইরে রেখে খেলতে হবে। মানুষের চাহিদা অনেক, কিন্তু খেলা একটা বাস্তবতা। ব্যাট-বলের হিসাব। কে কী চায়, সেটাকে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে আছড়ে ফেলে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই মূল ভাবনা হওয়া চাই এই সময়। আমার বিশ্বাস, একটা দল তখনই ভালো খেলে, যখন তারা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলার চেষ্টা করে। অতিরিক্ত কিছু করতে গেলেই অনেক সময় স্বাভাবিক পারফরম্যান্স পাওয়া যায় না। কাজেই স্বাভাবিক খেলাটাই প্রথম কাজ।দ্বিতীয় কাজ—বেশি উপদেশ শোনা যাবে না। আমাদের দেশে উপদেশ দেওয়ার লোকের অভাব নেই। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, ক্রিকেটবোদ্ধা, ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট অনেকেরই উপদেশ থাকবে, কিন্তু খেলতে হবে নিজের খেলাটাই। আবারও বলছি, উপদেশ অনেক আসবে, কিন্তু কানে তোলা যাবে না।তিন স্পিনার কেন খেলানো হলো, ব্যাটিং অর্ডারে অমুক জায়গায় অমুক কেন, এটা না করে ওটা করলে কী হতো....বাইরে থেকে শোনা যাবে এমন অসংখ্য মন্তব্য। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কথা বলি, গত বিশ্বকাপে জাভেদকে দিয়ে উদ্বোধন করানোর একটা কথা এসেছিল, কিন্তু বিশ্বকাপের আগ থেকে শাহরিয়ার নাফীস ভালো কিছু ইনিংস খেলে আসায় আমরা ওকে দিয়েই শুরু করতে চাইছিলাম। ফাস্ট বোলার দুজনের জায়গায় তিনজন খেলানো (আমরা দুজন নিয়ে খেলছিলাম)...এমন উপদেশ ছিল অনেক। কিন্তু টিমের জন্য যেটা ভালো মনে করতাম, আমরা সেটাই করতাম। আমরাই বুঝতে পারতাম, কাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়। কে ভালো ফর্মে আছে। টিমে যারা থাকে, তারাই সবচেয়ে ভালো বোঝে। সুতরাং টিম ম্যানেজমেন্ট যা ভালো মনে করবে, তা-ই করা উচিত।বিশ্বকাপের সময় সারাক্ষণ হোটেলে বসে থাকারও পক্ষপাতী নই আমি। বাইরে যাব না, কোথায়ও মিশব না—এসব চিন্তা যেন না করে খেলোয়াড়েরা। এসব চিন্তা চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। সামাজিকতা আমরা অবশ্যই রক্ষা করব, তবে ওসব অনুষ্ঠানে খেলা নিয়ে কথাবার্তা এড়িয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।আমরা যেকোনো অনুষ্ঠানেই যেতে পারি। সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, ডিনার করা...এগুলো দরকার। বাইরে গেলে আমরা ডিনারটা সব সময় একসঙ্গে করি। দেশে অনেক সময় এটা সম্ভব হয় না। এমন কিছু খাওয়া যাবে না যাতে শরীরের ক্ষতি হয়। কারণ ফিট টিম বিশ্বকাপে খুব দরকার হবে। সবাই যেন এই ব্যাপারটা নিয়ে সতর্ক থাকে। একসঙ্গে ঘুরলে, সিনেমা দেখলে টিমের গাঁথুনিটা অনেক দৃঢ় হয়। টিম ম্যানেজমেন্ট এসব নিশ্চিত করতে পারে। মাঝে মাঝে সবাই একসঙ্গে বসে সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।মাঠে অনেক দর্শক থাকবে। প্রতি বলে চার-ছয় দেখতে চাইবে অনেকে। অবশ্যই দর্শক অনেক বড় প্রেরণা, তবে দর্শকদের চাহিদার কথা না ভেবে ম্যাচের অবস্থা বুঝে খেলা দরকার। দর্শককে খুশি করার জন্য যেন কেউ কিছু না করে...অবশ্য এই পর্যায়ে এটা কারও করার কথাও না। তবে দেশের মাটিতে খেলা বলে দর্শকের বাড়তি চাপ সামলানোর মতো বড় একটা কাজ রয়েছে খেলোয়াড়দের। তবে সেটা নিয়ে বেশি ভাবলে চলবে না।আর একটা বিষয়, খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিশ্বকাপের সময় পরিবার থাকলে ভালো। সারাক্ষণ খেলা নিয়ে ভাবলে সেটা বাড়তি বোঝা হতে পারে। খেলা না থাকলে বা অবসরে খেলার বাইরে অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করা ভালো। ওই সময় চাপমুক্ত থাকাটা খুবই জরুরি।বিশ্বকাপের সময় খুব বেশি পত্রপত্রিকা না পড়াই ভালো। ভালো করলে মিডিয়া ভালো লিখবে, খারাপ করলে খারাপ। খারাপটা আমরা হয়তো সেভাবে নিতে পারব না। গত বিশ্বকাপের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমরা দেশের কাগজ পড়তাম ইন্টারনেটে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বিশ্বকাপের সময় যত দূর সম্ভব পত্রিকা থেকে দূরে থাকুক খেলোয়াড়েরা।টিম ম্যানেজমেন্টেরও দায়িত্ব অনেক। কোচ-অধিনায়ককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। মোট কথা, টোটাল টিম ওয়ার্কে সমন্বয় থাকা চাই। খেলোয়াড়দের যতটা সম্ভব চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করা উচিত বোর্ডের। চাপ এলে সেটিকে সরিয়ে এগিয়ে যাওয়া চাই একসঙ্গে। আল্লাহ না করুক, যদি খারাপ কিছু হয়, তখন খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য সবাই সবার প্রতি সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দেবে আশা করছি। দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনটা খুব দরকার। সেই সমর্থন পেলে মাঠের বাইরের চাপ পেছনের দরজা দিয়ে এমনিতেই পালাবে! | null |
20cc247fa0 | জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটের চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসারের (সিএসও) পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান খান। সোমবার তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে স্ন্যাপচ্যাটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
রয়টার্স, বিজনেস ইনসাইডারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম স্নাপচ্যাটের সিইওর বরাত দিয়ে বলছে, নিজের নতুন প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা থেকেই ইমরান স্নাপচ্যাট ছেড়েছেন। নতুন করে শুরু করতে যাওয়া ইমরানের নতুন প্রতিষ্ঠানও হবে প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট।
স্ন্যাপচ্যাটের সিইও ইভান স্পিজেল বলেন, ‘ইমরান আমাদের ব্যবসার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। আমরা তাঁর কঠোর পরিশ্রমকে উৎসাহ দিচ্ছি। তাঁর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’ প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ইমরানের এই চলে যাওয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক বা অভ্যন্তরীণ নীতিগত কোনো মনোমালিন্য সংশ্লিষ্ট নয়।
বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক এই সফল ব্যাংকার ২০১৫ সালে স্ন্যাপচ্যাটে যোগদান করেন। ইমরানের যোগদানের পর এই অ্যাপটি জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে। | null |
32io8g3fl1 | ননদের ঢাকার বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন পটুয়াখালীর রোকেয়া বেগম। সঙ্গে আসেন মেয়ে খুশি ও তাঁর স্বামী রিয়াজ।
বেড়ানো শেষে বাড়ি ফিরবেন বলে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার লঞ্চ ধরতে বাড্ডা থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হন রোকেয়ারা। কিন্তু তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারেননি। গতকাল বিকেলে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আহত হন তাঁরা।
আহত তিনজনকেই গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রোকেয়ার রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খবর শুনে পটুয়াখালী থেকে ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছেন রোকেয়ার স্বামী আলতাফ শরীফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ বুধবার তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও জামাইয়ের বাড়িতে থাকার কথা ছিল। কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেল!
আলতাফ জানতে পেরেছেন, রোকেয়ারা গুলিস্তানে এসে দেখেন যানজট। তাই হেঁটেই এগোতে থাকেন। সিদ্দিকবাজার দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে রোকেয়া, মেয়ে খুশি ও তাঁর স্বামী রিয়াজ আহত হন। রোকেয়ার মাথা ও কান ফেটে গেছে। খুশিরও কান ফেটে গেছে। রিয়াজের শরীরের বিভিন্ন জায়গা ছিলে গেছে। রোকেয়া সুস্থ হলেই তাঁরা পটুয়াখালী ফিরে যাবেন বলে জানান আলতাফ।
সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত শতাধিক। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ২০ জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। | null |
17c92aafbe | বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বিষয়ের জার্নালগুলো ইন্টারনেটে কীভাবে সহজলভ্য করা যায়, সে বিষয়ে তিন দিনের একটি কর্মশালা গত ২১ মে ঢাকার বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমীর (একাডেমী অব সায়েন্সে—বিএএস) সেমিনার হলে শেষ হয়েছে। এ আয়োজনে বিএএসকে সহযোগিতা করেছে যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর অ্যাভেইলিবিলিটি অব সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্স (আইএনএএসপি)। কর্মশালায় বাংলাদেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ও মেডিকেল কলেজের জার্নালের সম্পাদক অংশ নেন। বাংলাদেশের জার্নালগুলোকে অনলাইনে (www.banglajol.info) প্রকাশ করা এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের ৮০টি গবেষণা জার্নাল বর্তমানে গবেষকদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত আছে।কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএনএএসপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান সিওক্স কামিং। এর উদ্বোধন করেন বিএএসের সাবেক সভাপতি এম শমশের আলী। সমাপনী অনুষ্ঠানে সনদ বিতরণ করেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিজ্ঞান একাডেমীর সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। কর্মশালার সমন্বয় করেন অধ্যাপক এম এ মাজেদ। —বিজ্ঞপ্তি | null |
59ecc15b73 | চারপাশে ভয়, আশঙ্কা। এর মধ্যেই নতুন একটি বছর এল। ২০১৪ তারকাদের জীবনেও আনবে নতুন স্বপ্ন ও কাজের নতুন উদ্যম, তারা-ঝলমল ভুবনের বাসিন্দারা এমনটিই প্রত্যাশা করেন। ২০১৪ সালে কী কাজ করতে চান, এ বছরে তাঁদের টার্গেট কী? ‘আনন্দ’-এর এসব প্রশ্নের সামনে অকপট হয়েছেন ২০১৩ সালে বিনোদন জগতের বিভিন্ন মাধ্যমে নিজ নিজ ক্ষেত্রে যাঁরা আলোচিত ছিলেন, সেই তারকাদের কয়েকজন।সঙ্গে ছিলেন আলতাফ শাহনেওয়াজ ও শফিক আল মামুন
শাকিব খান২০১৩ সালে অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে কিছু ছবিতে কাজ করেছি। এ বছর সেই ঢেঁকি আর গিলতে চাই না।২০১৪ সাল আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর আমার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মসের যাত্রা শুরু হচ্ছে। ২০১৪ সালজুড়ে আমি নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি আর বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে বেছে বেছে তিনটি ছবিতে কাজ করব। এই বছরে মোট পাঁচটি ছবিতে অভিনয়ের ইচ্ছা আছে। আমার নিজের প্রযোজিত ছবিতে ক্যামেরার কাজ থেকে শুরু করে সবকিছুই ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে কারিগরি সহযোগিতা নেওয়ার চেষ্টা করব। গানগুলো করব ইউরোপের মনোরম লোকেশনে। এ ছাড়া বাইরের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, সেগুলোর বাজেটও অনেক। এতে উন্নত কারিগরি ব্যবহার করা হচ্ছে।১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে এসকে ফিল্মসের প্রথম প্রযোজনা হিরো, দ্যসুপারস্টার, তার আগে ১ ফেব্রুয়ারি শুটিং শুরু হবে প্রেমকরে আমি মরবছবির কাজ। মার্চ মাসের শেষের দিকে শুরু হবে রাজাহ্যান্ডসাম।এ ছাড়া অক্টোবরের মাঝামাঝিতে এসকে ফিল্মস থেকে সম্পূর্ণ রোমান্টিক একটা ছবির কাজ শুরু করব। ছবিটির নাম এখনো ঠিক হয়নি। এ জন্য দুটি গল্প লেখা চলছে। নায়িকা হিসেবে এখানে একেবারেই নতুন মুখ থাকবে। এ বছর ভালো দু-একটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করার ইচ্ছা আছে।
অপু বিশ্বাস২০১৩ সালটি ছিল আমার কাছে পুরোনো অপুর বিদায়ের বছর। মাইনেম ইজ খান, প্রেমিকনম্বর ওয়ানও দেবদাস—এই তিনটি ছবিতে কাজ করেছি। ছবি তিনটি আলোচনায়ও ছিল। মাঝখানের সময়টা নিজেকে চলচ্চিত্রের জন্য নতুন করে তৈরি করেছি। উদ্দেশ্য একটাই, ২০১৪ সালে নবাগত অপু হিসেবে আমাকে দর্শক দেখতে পাবেন। ২০১৪ সাল নতুন অপুর নতুনভাবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। এ বছর হাতে গুনে পাঁচ-ছয়টি ছবিতে কাজ করব। নতুনভাবে চলচ্চিত্রের এই যাত্রায় বুঝে, শুনে, যত্ন নিয়েই কাজ করতে চাই। ইতিমধ্যে হাতে নিয়েছি শাফি উদ্দীন শাফির রেড, ওয়াকিল আহমেদের শোধ, মমতাজুর রহমান আকবরের সালামমালয়েশিয়া, বদিউল আলম খোকনের দুটি ছবি হিরো, দ্যসুপারস্টারও রাজাহ্যান্ডসামএবং জাকির হোসেন রাজুর মনেরমতো মানুষ পাইলাম না।এ বছরও শরীরের ওজন আরও অন্তত পাঁচ কেজি কমাতে চাই। ছবির সংখ্যা হবে কম কিন্তু ভালো কাজ করব। চলচ্চিত্র থেকে তাড়াতাড়ি বিদায় নিতে চাই না।
চঞ্চল চৌধুরীআমি ব্যক্তিগতভাবে যা কিছু চাই না কেন, পুরো ব্যাপারটি এখন নির্ভর করছে দেশের সার্বিক রাজনীতির ওপর। দেশের রাজনীতি যদি অস্থিতিশীল থাকে, তাহলে আমি শুধু নই, আমরা কেউই সুস্থিরভাবে কোনো কাজ করতে পারব না। তাই ২০১৪ নিয়ে যা-ই বলি না কেন, আমার সব পরিকল্পনা নির্ভর করছে দেশের পরিস্থিতির ওপর।আমাদের দেশে এখন অনেক চ্যানেল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক নাটক হচ্ছে। সংখ্যাগতভাবে বেশি হওয়ায় নাটকের মান গেছে কমে। এ ক্ষেত্রে বাজেট ও বিজ্ঞাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নতুন বছরে আমি চাই, এ বিষয়টির সুরাহা হবে। বিনোদনমাধ্যমে এখন অপেশাদার কিছু মানুষজন ঢুকে পড়েছে। আমি মনে করি, যার যে কাজ সেটাই তার করা উচিত।আমাদের এখানে মানসম্মত নাটকের খুব অভাব। আমি যদি ভালো একটি নাটকে অভিনয় করতে চাই, তবে আমার মানসম্মত নাট্য পাণ্ডুলিপি প্রয়োজন, ভালো পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী—সর্বোপরি সুন্দর টিমওয়ার্ক প্রয়োজন। আমি চাইব ২০১৪ সালে এই বিষয়গুলোর সমাধান হবে।
নতুন বছরে আমার টার্গেট ভালো নান্দনিক নাটকে অভিনয় করা; এমন নাটক, যেখানে অভিনয় করে আমার আত্মার তৃপ্তি মিটবে।
সুমাইয়া শিমু২০১৩ ভালোই কেটেছে। যদিও বছরের শেষ দিকে রাজনৈতিক অঙ্গন একটু অস্থির ছিল। এ সময় হরতাল-অবরোধের কারণে প্রায়ই আমাদের অ্যাম্বুলেন্সসহ নানা বিচিত্র উপায়ে শুটিংয়ে যেতে হয়েছে। আমাদের মধ্যে সব সময় একধরনের ভয় কাজ করেছে। ২০১৪ সালে আমি নির্ভয়ে কাজে যেতে চাই। এটা হলো আমার প্রথম টার্গেট। এ ছাড়া অভিনয়শিল্পী হিসেবে ভালো কাজ করার আকাঙ্ক্ষা তো সব সময় থাকে। নতুন বছরেও সেটি আছে। এ বছর ভিন্নধর্মী চরিত্র, যে ধরনের চরিত্রে আমি আগে কাজ করিনি, এমন চরিত্রে কাজ করতে চাই। চাই ভালো পাণ্ডুলিপি ও ভালো পরিচালক। নতুন বছরের কাছে আমার প্রত্যাশা এমনই। সব শেষে বলি, এ বছর আমি এমন একটি কাজ করতে চাই, যে কাজ শিল্পী হিসেবে আমাকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখবে।
কনানতুন বছরে দেশের সুস্থ পরিস্থিতি আশা করি। দেশ সুস্থির থাকলে আপনাতেই ভালো কাজ করা সম্ভব হবে। ২০১৩ সালের দিকে যদি ফিরে তাকাই, এ বছর একক অ্যালবাম প্রকাশ না পেলেও সিম্পলিকনারমিউজিক ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে গান করেছি। কাজের সূত্রে দেশের বাইরে গিয়েছি কয়েকবার। বলতে গেলে ভালোই কেটেছে বছরটি। সে হিসাবে ২০১৪ আরও ভালো কাটবে, এ আশা তো করতেই পারি, নাকি?নতুন বছরে একটি একক অ্যালবাম করার ইচ্ছা আছে। বাপ্পা মজুমদার ও হূদয় খানের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাও হয়েছে। তবে দেশের পরিস্থিতির কারণে অ্যালবামের কাজ থেমে আছে। তা ছাড়া নজরুলসংগীতের একটি অ্যালবাম প্রকাশের আকাঙ্ক্ষা আছে ২০১৪-তে। নজরুল একাডেমীতে নয় বছর ধরে গান শিখেছি আমি। এবার তাই নজরুলের বিভিন্ন ঘরানার গান থেকে বাছাই করে একটি অ্যালবাম করতে চাই। আর এই দুই অ্যালবামের অন্তত দুই-তিনটি গান নিয়ে প্রকাশ করতে চাই মিউজিক ভিডিও। ২০১৪ সাল আমার পরিকল্পনা আপাতত এটুকুই।
বাপ্পা মজুমদার২০১৪ সম্পর্কে এই মুহূর্তে কী করে বলি। আসলে পরিকল্পনা তো থাকে অনেক রকম। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চাই উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতি। দেশের পরিস্থিতির ওপর শুধু আমার নয়, আমি মনে করি, আমাদের সবার পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নির্ভর করছে।২০১৪ সালে বেস্টঅব বাপ্পানামে নিজের একটি অ্যালবাম করার ইচ্ছা আছে আমার। আমাদের গানের দল দলছুটের শেষ অ্যালবাম আহআমন্ত্রণ বেরিয়েছিল২০১২ সালে। এ বছর দলছুটের নতুন অ্যালবাম নিয়েও কাজ করব। এ ছাড়া আর কী পরিকল্পনা...স্টেজে গান তো গাইবই। এখানে একটা কথা বলি, আসলে একটা অ্যালবাম করার পর শিল্পী হিসাবে অর্থনৈতিকভাবে আমরা খুব বেশি লাভবান হই না; ওই স্টেজ প্রোগ্রামগুলোই কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। স্টেজ প্রোগ্রাম কারার ইচ্ছা আছে। এবার শেষ কথা, আমি খুব পরিকল্পনা করে চলা মানুষ নই। তাই ভবিষ্যতের ভাবনা ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে দেওয়াই ভালো। | null |
131f0086f0 | : ন্যান্সি, আপনি এখন কোথায় আছেন?: ময়মনসিংহে, শ্বশুরবাড়িতে।: নতুন জীবন। কেমন লাগছে?: ভালো। জায়েদ (ন্যান্সির স্বামী) পৌরসভায় চাকরি করছে, ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। ওদের একান্নবর্তী পরিবার। ১১ জন চাচা। চারজন চাচা আর তাঁদের পুরো পরিবার এই বাড়িতেই আছে। বাড়িভর্তি মানুষ।: নেত্রকোনার কথা মনে পড়ে?: নেত্রকোনার সঙ্গে কোনো জায়গার তুলনা হয় না। সেই চার বছর বয়স থেকে ওখানে ছিলাম। ওখানে আমার স্কুল, বড় হওয়া, গান শেখা। বাতাসের গন্ধটাই অন্য রকম। আমাদের বাড়ি নেত্রকোনার সাতপাইতে। একেবারে শেষ সীমানায়। দোতলা বাড়ির ছাদে গিয়ে যখন দাঁড়াই, যত দূর চোখ যায়, শুধু ধানখেত। দূরে ছোট ছোট কিছু ঘর।: আপনি তো নেত্রকোনায় বাড়ি করেছেন।: হ্যাঁ। পড়ে আছে। আমাদের বাড়িটা ঘিরে অসংখ্য স্মৃতি জমা হয়ে আছে। আম্মার স্মৃতি। আম্মার কথা খুব মনে পড়ে। আম্মাকে সবচেয়ে বেশি মিস করছি।ন্যান্সির কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে। কিছুক্ষণ নীরবতা। গত একটা বছরে ন্যান্সির জীবনে ঘটেছে অনেক ঘটনা। তার কোনোটাই এখন আর মনে করতে চান না তিনি। কিন্তু মায়ের মৃত্যু তাঁকে বেশি নাড়া দেয়। ন্যান্সি বলেন, ‘আম্মা যে আমার কত বড় অবলম্বন ছিলেন, তা বুঝতে পেরেছি আম্মার মৃত্যুর পর।’গত রোববার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে কথা হলো ন্যান্সির সঙ্গে। এ বছরের ৪ মার্চ জায়েদের সঙ্গে বিয়ে হয় ন্যান্সির। এর পর থেকে তিনি ময়মনসিংহেই আছেন।: সবাই ঢাকায় আসে। আর আপনি ঢাকা ছেড়ে চলে গেলেন নেত্রকোনায়। এখন আছেন ময়মনসিংহে।আবারও ন্যান্সির সঙ্গে কথোপকথন—: আমার কিন্তু কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। যখন কোনো শো থাকে, টিভিতে অনুষ্ঠান থাকে কিংবা গান রেকর্ডিং—আমি ঢাকায় চলে যাই। যাঁদের সঙ্গে কাজ করছি, তাঁরা আমার সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। আর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ।: কিন্তু সবাই তো ঢাকাতেই থাকতে চায়।: আমিও চেয়েছি। ঢাকার উত্তরায় বাসা ভাড়া নিয়েছি। কিন্তু একা গেলে ওখানে থাকা হয় না। কেমন যেন ভয়-ভয় লাগে। আত্মীয়দের বাসায় থাকি।: ময়মনসিংহ কেমন লাগছে?: আমাদের বাসা নতুন বাজারে। বুঝতেই পারছেন, সারা দিন মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচি। পাশেই পার্টি অফিস। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। বাড়ির বাইরে ডায়াবেটিক সমিতি। এরপর উদীচী, মহিলা কল্যাণ সমিতি, শিশু একাডেমী, নজরুল একাডেমী। বারান্দায় দাঁড়ালে অনেক বছরের পুরোনো একটি বড় হাঁড়ি চোখে পড়ে। তার পাশেই টিচার্স ট্রেনিং কলেজ। রেওয়াজ করার কোনো পরিবেশ নেই। তার পরও চেষ্টা করছি।গত এক বছরে ন্যান্সির জন্য খুব ভালো খবরের একটি হলো ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’ পাওয়া। ২০০৯, ২০১০, ২০১১ আর ২০১২—পর পর চারবার তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। তাই পুরস্কারের কথা উঠতেই ন্যান্সির কণ্ঠ বদলে যায়। যেন খুশির ছোঁয়া লেগেছে। জানালেন, এবার তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন দেহরক্ষী ছবির ‘ভালোবাসি তোমায়’ গানটির জন্য। ধন্যবাদ জানালেন গানটির সুরকার ও সংগীত পরিচালক অদিতকে। ন্যান্সি বলেন, ‘এর আগে গানটি আরেকজন শিল্পীকে দিয়ে অদিত রেকর্ড করিয়েছিলেন। পরে তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানান।’: এরপর?এবার ন্যান্সির কণ্ঠে হতাশা। ‘অনেক দিন কোনো ভালো গান পাচ্ছি না। আমি তো খুব বেছে বেছে গান গাই। সামনের বছর এই প্রতিযোগিতায় আমার কোনো গান থাকবে কি না, জানি না। আমি যাঁদের সঙ্গে গান করি, তাঁদের প্রায় সবাই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। সামনের দিনগুলোয় কী হবে—ভাবতে পারছি না!’এর মাঝেও ন্যান্সির গান গাওয়া থেমে নেই। জানালেন, এবার ঈদে দেশ টিভিতে লাইভ শো করবেন। ঈদে তাঁর কোনো একক অ্যালবাম বের হচ্ছে না, কিন্তু গান থাকছে। মিশ্র শিল্পীর কয়েকটি অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি। বলেন, ‘এবার ঈদে শ্রোতারা সব মিলিয়ে আমার কাছ থেকে অন্তত ১০টি নতুন গান পাবেন। এবার একটি দেশের গান গেয়েছি। প্রিন্স মাহমুদের সুর ও সংগীতে। কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে তিনি একটি অ্যালবাম করছেন। তাতে আমার গাওয়া দুটি গান থাকছে। আম্মাকে নিয়ে আমি একটি গান গেয়েছি, এই গানটিও এবার ঈদে শ্রোতারা পাবেন। তপুর সঙ্গে একটি দ্বৈত কণ্ঠের গান গেয়েছি। কয়েকটি ছবিতেও গান গেয়েছি। সেগুলোও আসবে এবার ঈদে।’রাত বাড়ছে। ন্যান্সি কথা থামালেন। রোদেলাকে (ন্যান্সির মেয়ে) বললেন দাদুর কাছে গিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। রোদেলা এখন তাঁর কাছেই আছে।শেষে বলেন, ‘দোয়া করবেন, আমি আবারও যেন মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়ন পেতে পারি।’ | null |
50fe2760e8 | দিবারাত্রির টেস্ট খেলা থেকে নিজেদের এতদিন দূরে রেখেছিল ভারত। আগামী শুক্রবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দলটির অভিষেক হচ্ছে গোলাপি বলের টেস্টে। গত কয়েকদিন ধরেই তাই দিবারাত্রির টেস্টের ভালো দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। আগের দিন বিসিসিআই সভাপতি ও সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছেন, গোলাপি বলের ম্যাচ ক্রিকেটকে নতুন যৌবন দান করবে। কাল তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির প্রধান ও সাবেক ব্যাটসম্যান রাহুল দ্রাবিড় আশা করেছেন, গোলাপি বলের ম্যাচ টেস্ট ক্রিকেটে দর্শক ফেরাবে। তিনি মনে করেন গোলাপি বলের ক্রিকেটে যে নতুনত্ব আসবে, সেটিই দর্শকদের আকর্ষণ করবে।
দ্রাবিড় গতকাল কথা বলেছেন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে তিনি বলেছেন দর্শক বেশি হবে ঠিক, কিন্তু কৃত্রিম আলোর নিচে গোলাপি বল দিয়ে টেস্ট খেলাটা খেলোয়াড়দের জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের জন্য। ভারত দল এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কীভাবে নিজেদের প্রস্তুত করছে সেটাও বলেছেন দ্রাবিড়, ‘আমরা সন্ধ্যা ৬টায় অনুশীলন করেছি। প্রথম ঘণ্টা সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। সাড়ে সাতটার দিকে শিশির পড়া শুরু করে। এটাই আমার দুশ্চিন্তা।’
দ্রাবিড় এরপর যোগ করেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে দর্শক মাঠে ফেরানোর জন্য গোলাপি বল খুব ভালো সংযোজন। এটাই একমাত্র সমাধান নয়। তবে এটা অনেকগুলো জিনিসের মধ্যে এটাও আমাদের করার বিষয়। শুধুমাত্র যদি আমরা শিশির নিয়ন্ত্রণ করতে পারি গোলাপি বলের টেস্ট ভারতে প্রতি বছরই হতে পারে।’ দ্রাবিড় মনে করেন শিশিরে বল ভিজে গেলে বোলারদের জন্য পরিস্থিতিটা কঠিন হয়ে যেতে পারে, ‘বল ভারী হয়ে গেলে বোলারদের জন্য বিষয়টা কঠিন হয়ে যাবে। তখন তো বল সুইংও করবে না...গোলাপি বলে নতুনত্ব আছে। এটা দর্শককে স্টেডিয়ামে আসতে আকৃষ্ট করবে। এই কারণেই এটা দিয়ে মাঠে দর্শক টানার চেষ্টা করতে হবে।’
একটা সময় ছিল ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ হলে তিল ধারণের জায়গা থাকত না। ২০০১ সালে একবার একটি ম্যাচে তো ১ লাখ দর্শক হয়েছিল। তবে এত দর্শক এখন আর মাঠে আনা সম্ভব নয় বলে মনে করেন দ্রাবিড়। কেন, সেটাও বলেছেন ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান, ‘আমরা যখন বলি ২০০১ সালে ইডেন গার্ডেনে ১ লাখ দর্শক হয়েছিল,তখন একটা বিষয় এড়িয়ে যাই। সেই সময় কোনো এইচডি টেলিভিশন ছিল না। তাই বাড়িতে বসে খুব ভালোভাবে খেলা দেখতে পেত না মানুষ। মোবাইলেও তখন ক্রিকেট দেখা যেত না। তখন খেলার তাজা অ্যাকশন দেখতে হলে আপনাকে মাঠে যেতে হতো।’ইডেন গার্ডেনে গোলাপি বলের টেস্ট সত্যই টানছে দর্শকদের। এরই মধ্যে কলকাতা টেস্টের প্রথম তিন দিনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। | null |
bcdeecd734 | বাংলাদেশে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ঢাকার শাহবাগে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে এবার একাত্মতা ঘোষণা করেছেন কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা। আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে কলকাতার একাডেমি অব আইন আর্টস প্রাঙ্গণের মেহগনি চত্বরে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে আলোচনা ও সংগীতের মধ্য দিয়ে শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করা হয়। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কেও স্বাগত জানানো হয়।সমাবেশে প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় শাহবাগ নিয়ে নিজের লেখা ও সুরের একটি গান গেয়ে শোনান । গানটি হলো:‘শাহবাগ আজ শাহবাগে নেই, এখন সে নওজোয়ানবাগ এই ফাগুনে দেখো সেখানে, তাজা ফুলের রক্তবাগ।’এর আগে গত বুধবার আরেক মঞ্চে তিনি শাহবাগ নিয়ে আরেকটি গান শোনান। সেটি ছিল—‘ধর্মের নামে নিপীড়ন,আর ধর্মের নামে খুন রুখতে দাঁড়াল বাংলাদেশের তরুণী আর তরুণ শোকে হয়ে ওঠে ঘৃণার আগুন,পবিত্র শাহবাগে তাঁদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলাতে এখনো ইচ্ছা জাগে...।’কলকাতার নাগরিক সমাজ এই সমাবেশের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আলোচনা ও সংগীতে অংশ নেন মীরাতুন্নাহার, ইমানুল হক, লোকসংগীত শিল্পী সুখবিলাস বর্মা, শক্তিমান ঘোষ, মানিক সমজদার প্রমুখ। | null |
74d7e5f4ea | রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় সাংসদপুত্র বখতিয়ার আলম রনিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সংশিষ্ট সাধারণ শাখায় (জিআরও) মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস।
দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে এক ব্রিফিংয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, এই মামলায় রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। কিন্তু যে সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে তাতে তাঁর জবানবন্দি না হলেও মামলার কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে যে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি রনির মা সাংসদ পিনু খানের গাড়ি। এই বাহনটি অপরাধের বাহনটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এমন প্রমাণ মেলেনি। কারণ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যে ওই গাড়িটি বের করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডটি আকস্মিকভাবে হয়েছে। এই গাড়ির কী হবে, এ ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাডো গাড়ির চালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। এ কারণে তাঁকে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে। এ মামলায় মোট ৩০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তাঁদের মধ্যে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুজনের সাক্ষ্য আছে।
বখতিয়ারের মা পিনু খান সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দীপক কুমার দাসআদালতে গাড়ির চালক ইমরানের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিকে সাক্ষীর জবানবন্দি হিসেবে গ্রহণ করতে আদালতে আবেদন করবেন।মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ গত বুধবার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করার এবং বখতিয়ারকে একমাত্র আসামি করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইমরান ফকির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। এতে তিনি জড়িত নন। তাই তাঁকে মামলার প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বখতিয়ারকে (৪২) তিন দফায় মোট ১১ দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি। ডিবি সূত্র বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গুলি করার কথা জানালেও আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। বর্তমানে তিনি কারাগারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সূত্রবিহীন ও আলোচিত এই মামলার খুঁটিনাটি ও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তিন মাসেরও কম সময়ে তদন্ত শেষ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে জানানো হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া গাড়িচালক ইমরান ফকির গত ১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে (পৌনে দুইটা) বখতিয়ারকে বহন করা প্রাডো গাড়িটি নিউ ইস্কাটন রোডে যানজটে আটকে পড়ে। এতে চালকের পাশের আসনে বসা নেশাগ্রস্ত বখতিয়ার বিরক্ত হয়ে তাঁর লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে চার-পাঁচটি গুলি করেন। বখতিয়ারের বন্ধু আবাসন ব্যবসায়ী কামাল মাহমুদ ও মো. কামাল ওরফে টাইগার কামাল ঘটনার সময় গাড়িটির পেছনের আসনে বসা ছিলেন। তাঁরা আদালতে জবানবন্দিতে বলেন, বখতিয়ার তাঁর পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন। ঘটনার আগে বখতিয়ারের সঙ্গে থাকা তাঁর আরেক বন্ধু জাহাঙ্গীর আলমও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ব্যালাস্টিক প্রতিবেদন, প্রত্যক্ষদর্শীদের আদালতে জবানবন্দি, বস্তুগত প্রমাণ, তদন্ত ও অন্যান্য সূত্র থেকে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, বখতিয়ারের এলোপাতাড়ি গুলিতে দৈনিক জনকণ্ঠের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী (৪০) ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম (২৫) আহত হন। পরে তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
হাকিম ১৫ এপ্রিল বিকেলে মারা যান। সেদিন রাতে হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম রমনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, গাড়ির জানালা খুলে একজন লোক এলোপাতাড়ি চার-পাঁচটি গুলি ছুড়েছে।
ইয়াকুব ২৩ এপ্রিল রাতে মারা যান। ইয়াকুবের বুকে গুলি বিদ্ধ হয় এবং হাকিমের পেছনের অংশে গুলি ঢুকে নাভির নিচ দিয়ে বেরিয়ে যায়। নির্মাণাধীন ভবন এলএমজি টাওয়ারের সামনে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, জোড়া খুনের এই মামলার তদন্তভার রমনা থানার পুলিশের কাছ থেকে ২৪ মে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে ন্যস্ত হয়। সূত্রবিহীন এ মামলা তদন্তের একপর্যায়ে ডিবি জনকণ্ঠ ভবনে স্থাপিত ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজে ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে ওই সড়কে দুবার কালো রঙের একটি প্রাডো গাড়ির (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩-৬২৩৯) বেপরোয়া চলাচল দেখে। ডিবি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নথিপত্র দেখে নিশ্চিত হয়, ওই গাড়িটি সাংসদ পিনু খানের। একই সঙ্গে ডিবি তদন্ত, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও অন্য সূত্রের মাধ্যমে নিউ ইস্কাটনে ঘটনার আগে ও পরে বখতিয়ার ও ইমরানের অবস্থানও নিশ্চিত হয়। বখতিয়ার তাঁর মায়ের ওই গাড়িটি ব্যবহার করতেন।
পরে তদন্ত কর্মকর্তা গাড়িচালক ইমরানকে শনাক্ত করেন এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। ডিবি ৩১ মে ইমরানকে আটক করে। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে ধানমন্ডির বাসা থেকে বখতিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই বখতিয়ারের লাইসেন্স করা পিস্তলটি জব্দ করা হয়। ৪ জুন ডিবি ব্যালাস্টিক পরীক্ষার জন্য পিস্তলটি সিআইডির আগ্নেয়াস্ত্র পরীক্ষা শাখায় পাঠায়। এই পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই পিস্তল থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে এবং নিহত ইয়াকুবের শরীরে পাওয়া গুলি ও ওই পিস্তলের গুলির ধরন এক, পয়েন্ট ৩২ বোরের। ১৪ জুন প্রাডো গাড়িটি জব্দ করা হয়। ৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে বখতিয়ারের পিস্তলের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করেন।
সাংসদপুত্র বখতিয়ারকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে-এ কথা জানালে নিহত রিকশাচালক হাকিমের মা ও মামলার বাদী মনোয়ারা বেগম গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জানি, ছেলে ফেরত পামু না, তবুও হত্যার বিচার হইলে মনে কিছুটা শান্তি পামু।’ তিনি বলেন, ‘বিচারের ভার আল্লাহর ওপর ছাইড়া দিছিলাম। এত দিন মনে করছিলাম গরিবের জন্য বিচার নাই, কিন্তু এহন দেখলাম গরিবের পাশেও মানুষ দাঁড়ায়।’ তিনি ডিবি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন:
নেশাগ্রস্ত যুবকের গুলিতে ঢাকায় জোড়া খুনসাংসদপুত্র বখতিয়ারকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে আজসাংসদপুত্রের আরও দুই বন্ধু জবানবন্দি দিচ্ছেনসাংসদপুত্র হওয়ায় সুবিধা নিচ্ছেন বখতিয়ার | null |
f0a39b85bf | বলিউডে যৌন হয়রানির যতগুলো অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত ছিল ইরানি মডেল ও অভিনেত্রী এলনাজ নরোজির ঘটনাটি। চলচ্চিত্রকার বিপুল অমৃতলাল শাহর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই অভিযোগের শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল। নরোজির মুখোমুখি হয়ে অভিযোগ শুনতে সম্মত হয়েছিলেন পরিচালক। এমনকি অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারের মুখোমুখি হতেও রাজি ছিলেন তিনি। তবে যৌন হয়রানির ব্যাখ্যা দিতে পারেননি অভিনেত্রী। এমনকি শুনানিতে হাজিরই হননি তিনি।
বলিউডে প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্ট (পিওএসএইচ) গঠিত এক কমিটি চিঠি দিয়ে অভিনেত্রী এলনাজ নরোজিকে শুনানির জন্য আহ্বান করে। ১১ দিন পর গত ২৬ জানুয়ারি ফিরতি এক ই-মেইলে নরোজি লেখেন, ‘এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। বিপুল শাহর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পর আপনাদের সহযোগিতা আমার দরকার হবে। আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা না বলে এই মুহূর্তে আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারছি না।’
ইরানি মডেল ও অভিনেত্রী এলনাজ নরোজির অভিযোগ তদন্তের জন্য পিওএসএইচ কমিটি ‘নমস্তে ইংল্যান্ড’ ছবির পরিচালক বিপুল শাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আইএফটিডিএ) অব্যাহতি দিয়েছে তাঁকে। আইএফটিডিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মামলার শুনানির সময়ে এলনাজ কোনো রকম সহযোগিতা করেননি। কোথায় কীভাবে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, সেসব প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারেননি। তবে এলনাজের মুখোমুখি হতে এবং কমিটির বিচার মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত ছিলেন বিপুল শাহ।
#মি টু আন্দোলন চলাকালীন গত বছরের অক্টোবরে এলনাজ নরোজি অভিযোগ করেছিলেন বলিউড পরিচালক বিপুল শাহর বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ ছিল, একটি ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজ দেওয়ার কথা বলে বিপুল একাধিকবার তাঁর অডিশন নিয়েছিলেন। অডিশন চলাকালীন নানাভাবে তাঁকে হয়রানি করেন তিনি।সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া | null |
5c244cf546 | রাজধানীতে যানজট নিরসনে সরকারের নেওয়া প্রায় সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকার শুরু থেকেই ব্যস্ত মেট্রোরেল ও উড়াল সড়কের মতো বড় বড় প্রকল্প নিয়ে। কিন্তু গত চার বছরে তারা এসব প্রকল্পের কোনো কিনারা করতে পারেনি। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশ বিভিন্ন ব্যস্ত সড়কে দড়ি-বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে যানজট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশের এ রকম অন্তত ১০টি জোড়াতালির উদ্যোগ যানজট কমাতে পারেনি। বরং যতই দিন যাচ্ছে, এ সমস্যা আরও তীব্র হচ্ছে। এর মধ্যে নগরে কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের মিছিল-সমাবেশ বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচল বেশি হলে ওই দিন ঢাকা অনেকটা অচল হয়ে পড়ে।গত ৬ আগস্ট বিকেলে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘটা করে রাজধানীর বাংলামোটর, কারওয়ানবাজর ও ফার্মগেট এলাকার যানজট পরিদর্শনে নামেন। সে সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে যানজট সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। এরই মধ্যে দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। মন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে কি না, গতকাল তা জানতে চাইলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে কিছু জানাতে পারেনি। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ সমস্যা তো আমি একা সমাধান করতে পারব না। স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই মাঠে নেমে, কোথায়, কী কারণে যানজট হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প: যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বর্তমানে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান, মিরপুর-বনানী ও কুড়িলে তিনটি উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। এই তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে সিটি করপোরেশন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও রাজউকের অধীন বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তারা আশাবাদী। কিন্তু ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, এসব উড়াল সড়কে ঢাকার যানজট কমবে না, বরং বাড়াবে। আর, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উড়াল সড়কসংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে কিছুটা সুবিধা হতে পারে। তবে পুরো রাজধানীর বিরাজমান যানজটে কোনো প্রভাব পড়বে না।এর বাইরে মেট্রোরেল, উড়াল সড়ক ও বাসের বিশেষ লেনের নির্মাণকাজ অনেক দিন ধরে ঝুলে আছে। গণপরিবহনবান্ধব এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যানজট কমানোর ক্ষেত্রে ভালো প্রভাব পড়বে বলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন। এই তিন প্রকল্প সম্পর্কে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বসে নেই, আশা করি এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব।’পুলিশের উদ্যোগ: বর্তমান সরকারের আমলে ঢাকা মহানগর পুলিশ যানজট নিরসনে অন্তত ১০টি উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো হলো: মূল সড়কগুলোকে তিন লেনে ভাগ করে প্রতিটি যানবাহনকে লেন ও সংকেত (সিগন্যাল) বাতি মেনে চলতে বাধ্য করা, ১৫ বছরের পুরোনো গাড়ি তুলে দেওয়া, যত্রতত্র ‘ইউটার্ন’ ও সংকেত উপেক্ষা করে বেপরোয়া চলাচল বন্ধ করতে মোড়গুলোতে দড়ি-বাঁশ, লোহার রড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি; নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে বাস থামতে না দেওয়া, চলন্ত অবস্থায় চালকদের সিটবেল্ট বাঁধা বাধ্যতামূলক ও মুঠোফোনে কথা বলা বন্ধকরণ; পথচারীদের ফুটপাত, উড়াল সেতু ও পাতাল পথ ব্যবহারে বাধ্য করা; কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল প্রদর্শনী বোর্ডের মাধ্যমে রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশনার ব্যবস্থা ও বিভিন্ন এলাকার মার্কেটের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন নির্দিষ্ট করে দেওয়া। কিন্তু এসবেও খুব বড় কোনো ফল পাওয়া যায়নি। অবশ্য মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, পুলিশের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়নি। পুলিশ যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে সেগুলো কেবল স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে। পুরোপুরি যানজট সমস্যা সমাধান করতে হলে গণপরিবহনব্যবস্থা চালু করতে হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত যানজট নিরসনে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সবগুলোই এলাকাভিত্তিক। কুড়িল, যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ও মিরপুর-বনানী উড়াল সড়ক পুরো ঢাকার সমস্যা সমাধান করবে না। তিনি বলেন, ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ঢাকার পূর্ব ও পশ্চিম পাশে অন্তত ৫০টি নতুন সড়ক ও সংযোগ নির্মাণের জন্য অনেক আগে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো করা হয়নি। অথচ ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ১৯০টি নতুন যানবাহন নামছে, মানুষ যোগ হচ্ছে আড়াই হাজারের মতো। এ অবস্থায় পূর্ব ও পশ্চিম দিকে যে হারে অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘর নির্মিত হচ্ছে, পরে সড়ক করার সুযোগ থাকবে না। তাঁর মতে, এখনই পূর্ব-পশ্চিমে সড়ক তৈরি, মেট্রোরেল ও বাসের বিশেষ লেনের মতো গণপরিবহন চালু না করা গেলে ঢাকার যানজট নিরসন হবে না। | null |
144bbfc95f | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শোক বই খোলা হয়েছে। শোক বইয়ে ২১ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব মান কি মুনসহ স্বাক্ষর করেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি, শ্রীলঙ্কার স্থায়ী প্রতিনিধি, ভুটান মিশনের ডিপিআর, মালদ্বীপের স্থায়ী প্রতিনিধি, বেলারুশের স্থায়ী প্রতিনিধি, তানজানিয়ার ডিপিআর, সিঙ্গাপুরের স্থায়ী প্রতিনিধি, কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি, বারবাডোসের স্থায়ী প্রতিনিধি, সোয়াজিল্যান্ড মিশনের প্রথম সচিব, ইতালির স্থায়ী প্রতিনিধি, বাহরাইনের স্থায়ী প্রতিনিধি, রুমানিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি, বতসোয়ানার স্থায়ী প্রতিনিধি ও ব্রাজিলের স্থায়ী প্রতিনিধি। ২২ মার্চ স্বাক্ষর করেন হাঙ্গেরি মিশনের ডিপিআর, লুক্সেমবার্গের স্থায়ী প্রতিনিধি, জাপানের ডিপিআর, কম্বোডিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি, মিসরের স্থায়ী প্রতিনিধি, সাইপ্রাস মিশনের প্রতিনিধি, উরুগুয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি, পাকিস্তান মিশনের মিনিস্টার, কঙ্গো মিশনের প্রথম সচিব, ব্রুনাই মিশনের ডিপিআর, চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি, আলজেরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি, স্লোভেনিয়ার ডিপিআর, সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি, কেনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি, লেসেথোর ডিপিআর, ইউক্রেনের ডিপিআর, নেপালের স্থায়ী প্রতিনিধি, জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্টের প্রতিনিধি, ইউএস মিশনের প্রতিনিধি, ক্রোয়েশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি, ফিজির স্থায়ী প্রতিনিধি, কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি, মাদাগাস্কারের স্থায়ী প্রতিনিধি, চেক রিপাবলিকের মিশন-প্রধান, সৌদি মিশনের প্রতিনিধি ও অ্যাম্বাসেডর অ্যান্ড ডিপিআর অব সিয়েরালিয়ন। তথ্যবিবরণী। | null |
2dc951e0bd | স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়েই এই ইনিংস। ধারাভাষ্যকারেরা বললেন, ‘জয় টু ওয়াচ’। আসলেই চোখের জন্য আনন্দদায়ী এক ইনিংস খেললেন আজ লিটন দাস। বিদেশের মাটিতে প্রথম শতরানটি করে ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের ইনিংস ব্যবধানে হারের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিলেন তিনি।
আজ তৃতীয় দিন সকালে ফলোঅন এড়াতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েনি বাংলাদেশ। কিছুটা লড়াই অন্তত করতে পেরেছে। কিন্তু কোনো জুটিই থিতু হতে পারেনি। সাদমান ইসরাম, মোহাম্মদ নাঈমের উদ্বোধনী জুটি প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছিল, কিন্তু সেটি পুরোপুরি রক্ষা করতে পারেনি। ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটির পর বাকি জুটিগুলোও খুব বড় হতে পারেনি। সাদমান, নাঈম, নাজমুল, মুমিনুলরা নিজেদের ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার পরিণতি দিতে পারেননি।
কিন্তু এর মধ্যেই লিটন দাস নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে পাল্টা-আক্রমণ শুরু করলেন। নুরুল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে গড়লেন ১০২ রানের জুটি। প্রথম দিকে কিছুটা দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করলেও পরের দিকে ওয়ানডে স্টাইলেই ব্যাট চালিয়েছেন। আর সেই শটগুলোও ছিল দেখার মতো। কয়েকটি কাভার ড্রাইভ খেলেছেন, অসাধারণ! উইকেটের চারদিকে খেলে ৬৯ বলে পেয়ে যান পঞ্চাশ। কিন্তু বাকি পঞ্চাশ করতে তিনি খেলেছেন মাত্র ৩৭ বল। বোল্ট, সাউদি, জেমিসনদের বিপক্ষে কীভাবে পাল্টা-আক্রমণ করেছেন লিটন—এ পরিসংখ্যানই তাঁর প্রমাণ।
গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শতকটি পেয়েছিলেন লিটন দাস। সেটি ছিল অনেক অপেক্ষার পর। এর আগে যে দুবার নড়বড়ে নব্বইয়ে আউট হয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ইনিংসে শতরানের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও করেন ৫৯। এরপর মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফেরেন ৮৬ রানে। ক্রাইস্টচার্চেও প্রথম ইনিংসে ছিলেন ব্যর্থ। তবে আজ দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন আবারও স্বরূপে।
ধারাভাষ্যকারেরা বারবারই বলছিলেন তাঁর ইনিংসের সৌন্দর্যের কথা। তাঁরা প্রশংসা করেছেন লিটনের ব্যাট যে পরিস্থিতিতে হাসল, সেটি নিয়েও। অসম্ভব চাপের মুখে এমন ব্যাটিং করা যে সহজ কিছু নয়, সেটিও তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
লিটন আজ দেখিয়ে দিলেন ব্যাটিংটা তাঁর কাছে খুব সহজ একটি ব্যাপারই। | 2,138 |
d2zz5rzsyo | জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই মামলায় মিজানুর রহমানের স্ত্রী, ভাই ও ভাগনেকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার আগে মিজানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার (রত্না) পলাতক। মিজানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান এবং ভাগনে মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা জামিনে ছিলেন।
রায়ে আদালত বলেন, মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দণ্ডিত আসামি মিজানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় মিজানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার আরেকটি আদালত।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুদকের পক্ষ থেকে ২৭ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার বাদী দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে বলেছিলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তাঁকে সম্পদের হিসাব দিতে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ১ আগস্ট তিনি দুদকে সম্পদের হিসাব জমা দেন। সেখানে তিনি মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৪২ হাজার ২৬০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৫২ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেখান।
মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে আরও বলেন, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ডিআইজি মিজান অবৈধ অর্থ দিয়ে নিকটাত্মীয়দের নামে সম্পদ কিনে তা কৌশলে ভোগদখল করেন। মিজান তাঁর ভাগনে মাহমুদুল হাসানের নামে ২০০২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকা দিয়ে গুলশান-১-এর পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে একটি দোকান বরাদ্দ নেন। ওই দোকান তাঁর স্ত্রীর নামে ভাড়া নিয়ে নিজের দখলে রাখেন।
এ ছাড়া মাহমুদুলের নামে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় একটি স্থায়ী আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট) হিসাব খোলেন। সেখানে ৩০ লাখ টাকা জমা রাখেন তিনি।
দুদক অনুসন্ধান শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই মিজান সেই টাকা তুলে নেন জানিয়ে মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে বলেন, সুদসহ টাকার পরিমাণ ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭ টাকা, যা তিনি তাঁর সম্পদের বিবরণীতে জমা দেননি।
এ ছাড়া মিজান তাঁর ভাই মাহবুবুর রহমানের নামে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ ৬৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১৯ টাকা দিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ফ্ল্যাট কেনেন। মাহবুবুরের ফ্ল্যাট কেনার বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। ওই ফ্ল্যাটও মিজানের দখলে আছে।
মিজান ২০১১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রীর নামে একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট কেনেন, যার দাম ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ টাকা। এভাবে আসামি মিজান অপরাধলব্ধ অর্থ দিয়ে নিজের আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ কিনেছেন, যে তথ্য তিনি গোপন করেছেন বলে আদালতকে জানান মামলার বাদী মঞ্জুর মোর্শেদ। | null |
15f48dccae | ‘সরকার গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে বিএনএফ (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট) নামে একটি চিজ দাঁড় করিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া।গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় রফিকুল ইসলাম মিয়া এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। যাতে নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়।রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে সংকট সৃষ্টি করেছে। এ সংকটের সমাধান তাদেরই করতে হবে। একতরফা নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করা হবে।জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি টাকা খরচ করে দ্বারে দ্বারে নৌকায় ভোট চাচ্ছেন। ভোট চেয়ে লাভ হবে না। ভোটের বাক্স কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেওয়া হবে না। সংগঠনের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. হানিফ, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ। | null |
1d3cdf5270 | আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জোট গঠনের মধ্য দিয়ে দলকে শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ সোমবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার কলাগাছিয়ায় সুরেন্দ্রনাথ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন এরশাদ। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতের সঙ্গে কী চুক্তি হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘কী চুক্তি হবে, সেটা আমরা চুক্তির আগে কী করে জানব। চুক্তির পরে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে, ভারতের সঙ্গে যে চুক্তিই হোক না কেন, তাতে দেশের মানুষের কল্যাণ হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সংখ্যালঘুবিষয়ক উপদেষ্টা সোমনাথ দে, মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন দেব, খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস, কেন্দুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমানসহ অনেকে। | null |
ad7501024b | ‘জয় হো’ ছবিতে সালমান খানের বিপরীতে অভিনয়ের কল্যাণে আলোচিত হয়েছেন মডেল, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী ডেইজি শাহ। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা-চেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা ঠুকে দিয়েছেন ভোজপুরি অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ সত্যেন্দ্র সিং।নির্মিতব্য ‘সোডা’ ছবির একটি গানের দৃশ্যের শুটিং শেষ করেছেন ২৩ বছর বয়সী ডেইজি। ছবিটির নৃত্য পরিচালক গণেশ আচার্য, পরিচালক ভি কে সিংসহ ছবির দলের ১৮ সদস্যের বিরুদ্ধেও হত্যা-চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া একটি রাজনৈতিক দলের প্রেসিডেন্ট সত্যেন্দ্র। তিনি মামলাটি করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মনিপুরী শহরে। সম্প্রতি এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে মিড-ডে ডটকম।এ প্রসঙ্গে সত্যেন্দ্রর ভাষ্য, ‘আমি ‘‘সোডা’’ ছবির চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি এতে অভিনয়ও করছিলাম। গণেশ আচার্যের নৃত্য পরিচালনায় আমার সঙ্গে একটি গানের দৃশ্যের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন ডেইজি। কমলিস্তান স্টুডিওতে দুই দিন শুটিং করার পর ছবিটি থেকে আমাকে বাদ দেওয়ার পাঁয়তারা করেন নির্মাতারা। আমাকে জানানো হয়, ডেইজি আমার পরিবর্তে জনপ্রিয় কোনো অভিনেতার সঙ্গে অভিনয়ে আগ্রহী। তিনি চান, আমাকে যেন ছবিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়।’সত্যেন্দ্র আরও বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে আমি সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলাম। শুরুতে ভেবেছিলাম নেহাতই দুর্ঘটনা এটা। কিন্তু পরে বুঝলাম, আরেকটি গাড়ি ওভারটেক করার সময় ধাক্কা দিয়ে আমার গাড়িটিকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছিল।’এদিকে বলিউডের প্রখ্যাত নৃত্য পরিচালক গণেশ আচার্যর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি এমন কোনো অভিযোগের কথা শুনিনি। যে লোকটি অভিযোগ তুলেছেন তাঁকে আমি চিনিও না।’
আর ডেইজি শাহ দাবি করেছেন, ‘প্রায় ১৬ মাস আগে গানটির শুটিং করেছিলাম। এরপর আমি আমার অন্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ছবিটির সঙ্গে এই মুহূর্তে আমার কোনো রকম সম্পৃক্ততা নেই।’
ডেইজি শাহ অভিনয় শুরুর আগে নৃত্য পরিচালক গণেশ আচার্যর সহকারী হিসেবে তিন বছর কাজ করেছেন। ২০১০ সালে তামিল ‘বন্দে মাতরম’ ছবির আইটেম গানের মাধ্যমে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। পরবর্তী সময়ে কানাড়া চলচ্চিত্র শিল্পে কাজের সুযোগ মেলে তাঁর। মালয়লাম ভাষায় নির্মিত তুমুল জনপ্রিয় ‘বডিগার্ড’ ছবির কানাড়া সংস্করণে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ডেইজি। ছবিটি মুক্তি পায় ২০১১ সালে। পরবর্তী সময়ে ‘ভাদ্র’, ‘গজেন্দ্র’, ‘বচ্চন’সহ আরও কয়েকটি কানাড়া ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
২০১৩ সালে বলিউডের ‘ব্লাডি ইশক’ ছবির একটি আইটেম গানে অংশ নেন ডেইজি। বলিউডের ছবিতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয়ের প্রথম সুযোগ তিনি পান ‘জয় হো’ ছবির মাধ্যমে। ছবিটিতে সালমান খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। সোহেল খান প্রযোজিত ও পরিচালিত ‘জয় হো’ মুক্তি পেয়েছে গত ২৪ জানুয়ারি। একের পর এক বক্স অফিস কাঁপানো ছবি উপহার দিলেও সালমানের ‘জয় হো’ বক্স অফিসে আশানুরূপ সাড়া ফেলতে পারেনি। | null |
63f644f032 | ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে তিস্তা চুক্তি করা হলে তা মানবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ভারতের লোকসভায় গতকাল সোমবার তিনি এ কথা বলেছেন।সৌগত রায় বলেন, ‘রাজ্য সরকারকে কিছুই না জানিয়ে যদি তিস্তা চুক্তির শর্তাবলি চূড়ান্ত হয়ে থাকে, তাহলে সেই চুক্তিতে কোনোভাবেই সম্মতি জানাবেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’গত ২৩ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘শুনছি ২৫ মে বাংলাদেশে গিয়ে তিস্তা চুক্তি হবে। অথচ আমি এখনো কিচ্ছু জানি না।’ | null |
3a9826a2ca | ৭সালামত এসেছে। ভাইয়ার ঘরে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আছে। সালামতকে ভয়ংকর দেখাচ্ছে। চোখ টকটকে লাল। দুটা চোখেই ময়লা। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। সালামতের মাথা কামানো। মুখ ভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি।ভাইয়া বলল, আপনার ঘটনা কী? দশ দিন পরে আসবেন বলে গেলেন। এক মাস পার করে এসেছেন।সালামত বলল, মরতে বসেছিলাম, ভাইসাহেব। প্রথমে হলো টাইফয়েড, তারপর জন্ডিস। এখন চোখ-ওঠা রোগ হয়েছে। সানগ্লাস খরিদ করেছিলাম; সানগ্লাস পরলে চোখে দেখি না বলে রেখে দিয়েছি।পদ্মকে নিতে এসেছেন?জি।আপনার চোখের দিকে তাকালে পদ্ম যাবে না। সানগ্লাস পরুন। পদ্মকে ডাকি।সালামত সানগ্লাস পরে বাড়ি কাঁপিয়ে কাশতে লাগল। ভাইয়া বলল, যক্ষ্মাও বাঁধিয়েছেন নাকি?সালামত বলল, জি না। বৃষ্টিতে ভিজে বুকে কফ জমেছে। পদ্মকে ডেকে দেন, ভাইসাহেব। অধিক কথা বলা মানে সময় নষ্ট।পদ্ম যেতে রাজি না হলে কী করবেন?জোর করে তুলে নিয়ে যাব। লোকজন সঙ্গে করে এনেছি। এরা গাড়িতে বসা। আজ উনিশ বিশ যা হবার হবে। তবে...বিকট কাশি শুরু হয় সালামতের, বাকি কথা শোনা গেল না।পদ্ম এসেছে। সে সালামতের দিকে তাকিয়ে বলল, নিতে এসেছ?সালামত বলল, হুঁ।ট্রাক নিয়ে এসেছ?না। নোয়া মাইক্রোবাস নিয়ে আসছি।আমরা যাব কই?প্রথমে আমার নানার বাড়িতে যাব। সুসং দুর্গাপুর। আমার বিশ্রাম দরকার।পদ্ম বলল, চলো, রওনা দেই। মা বাড়িতে নাই। চলে যাওয়ার এখনই সময়। মা থাকলে নানা ঝামেলা করবে। যেতে দেবে না।সালামত বলল, ব্যাগ-সুটকেস নেবে না?পদ্ম বলল, ব্যাগ-সুটকেট গোছাতে গেলে দেরি হবে। মা চলে আসবে। আমার আর যাওয়া হবে না। চলো, চলো।আমি বিস্মিত হয়ে দেখলাম, পদ্ম সত্যি সত্যি মাইক্রোবাসে উঠে চলে গেল। মাইক্রোবাস ভর্তি সন্দেহজনক চেহারার লোকজন। একজন আমার পরিচিত। আগারগাঁও বস্তিতে তাকে দেখেছি। সেদিনও তার গায়ে নীল গেঞ্জি ছিল, আজও ক খ গ লেখা নীল গেঞ্জি। তার মনে হয় একটাই গেঞ্জি।এমন এক ঘটনা ঘটেছে, ভাইয়া নির্বিকার। যেন কিছুই হয়নি। সে তার বিশেষ ভঙ্গিতে শোয়া। চোখ বন্ধ। কোলের ওপর বই। আমি ঘরে ঢুকে বললাম, ভাইয়া, কাণ্ডটা দেখেছ?ভাইয়া বলল, হুঁ। ইন্টারেস্টিং মেয়ে।আমি বললাম, এক বস্ত্রে লাফ দিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেল।ভাইয়া বলল, ফিরে আসবে বলেই এক বস্ত্রে গেছে। পৃথিবীর কোনো মেয়েই এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়ে না। সীতাকে যখন রাবণ হরণ করে, তখনো সীতার হাতে পানের বাটা ছিল।ভাইয়া বুকের ওপর থেকে বই নিয়ে পাশ ফিরল, এর অর্থ এখন সে ঘুমাবে। ভাইয়ার হচ্ছে ইচ্ছাঘুম, সে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে মাথার নিচে হাত রেখে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়তে পারে।সালামত এসে ভাইয়ার ঘুম ভাঙাল। সালামত ভীষণ উত্তেজিত। তার সঙ্গে নীলগেঞ্জিও এসেছে। নীলগেঞ্জি চোখ-মুখ শক্ত করে রেখেছে।ভাইয়া হাই তুলতে তুলতে বলল, কী সমস্যা?সালামত বলল, পদ্ম কোথায়?ভাইয়া বলল, এই প্রশ্ন আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করব। আপনি তাকে নিয়ে গেছেন, এখন আপনি বলছেন পদ্ম কোথায়। কিছু কিছু জিনিস আমি অপছন্দ করি, তার মধ্যে একটা হলো টালটুবাজি। আপনি টালটুবাজি করছেন।সালামত বলল, আমি কোনো টালটুবাজি করছি না। অস্থির হয়ে আপনার কাছে এসেছি। ঘটনা বললেই বুঝবেন। আমরা শ্যামলী পর্যন্ত গিয়েছি, তখন পদ্ম বলল, ‘আমাকে পঞ্চাশটা টাকা দাও, আমি একটা জিনিস কিনব।’ আমি বললাম, ‘কী জিনিস বলো, আমি নিয়ে আসি।’ সে বলল, ‘উহুঁ, আমি আনব।’ গাড়ি থেকে নেমে একটা দোকানে ঢুকল, আর দেখা নাই। পালায়ে গেছে।ভাইয়া বলল, পালিয়ে গেছে, নাকি কোথাও বেচে দিয়েছেন?এই সব কী বলেন? নিজের বউ বেচব কীভাবে?পরের বউ বেচার চেয়ে নিজের বউ বেচা সহজ না? আপনাকে চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিলাম, এর মধ্যে পদ্মকে হাজির করবেন। চব্বিশ ঘণ্টা পর আমি ব্যবস্থা নিব।নীলগেঞ্জি বলল, কী ব্যবস্থা নিবেন?ভাইয়া নীলগেঞ্জির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে নির্বিকার গলায় বলল, তোমাকে খাসি করে দেব।কী বললেন?কী বললাম একবার শুনেছ, তোমাকে খাসি করা হবে। অণ্ডকোষ থেকে বিচি ফেলে দেওয়া হবে। একজন পাস করা ডাক্তার এই কাজটা করবেন, কাজেই ভয়ের কিছু নেই। আগে এনেসথেসিয়া করা হবে বলে ব্যথাও পাবে না। নীলগেঞ্জির শক্ত চোখ-মুখ হঠাৎ লুজ হয়ে গেল। থুতনি খানিকটা ঝুলে গেল। সালামতের মুখ হয়ে গেল শক্ত। সালামত বিড়বিড় করে বলল, ভাইসাহেব, আমি আপনার সঙ্গে কোনো ঝামেলায় যাব না। আমি ঝামেলা পছন্দ করি না।ভাইয়া বলল, আপনার সঙ্গে আমি ঝামেলায় যাচ্ছি না। আমি শুধু এই নীলগেঞ্জিকে খাসি করব। এ শামসুর লোক। শামসু নতুন করে ঝামেলা শুরু করেছে। একে খাসি করে দিলে শামসুর খবর হবে। শামসুর খবর হওয়া দরকার। এক দিনে অনেক কথা বলে ফেলেছি, এখন বিদায়। পদ্মর খোঁজে বের হয়ে যান। হাতে সময় বেশি নাই।দুজন চলে যাওয়ার এক ঘণ্টা পর পদ্ম বাড়িতে ফিরল। তার হাতে আটটা হাওয়াই মিঠাই। তার ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে কিছুই হয়নি। সে আমাকে বলল, হাওয়াই মিঠাই খাবেন?আমি বললাম, না।আপনার ভাই কি খাবে?সেটা আমার ভাই জানে।পদ্ম বলল, এই বাড়ির সবার জন্যে আমি একটা করে হাওয়াই মিঠাই কিনেছি। আপনি খাবেন না, বাকি সবাই কিন্তু খাবে। আমি মিষ্টি করে যখন বলব, তখন কেউ ‘না’ করবে না।ভালো কথা, সবাইকে হাওয়াই মিঠাই খাইয়ে বেড়াও।প্লিজ, একটা নেন না। এমন করেন কেন?আমি হাত বাড়িয়ে নিলাম। পদ্ম খিলখিল করে হাসতে হাসতে বলল, দেখলেন, আপনি কিন্তু নিয়ে নিয়েছেন।আমি বললাম, তুমি আগ্রহ করে স্বামীর সঙ্গে গেলে আবার চলে এলে, এর মানে কী?পদ্ম বলল, ও আমার স্বামী আপনাকে কে বলল?তুমিই বলেছ।আপনাকে রাগানোর জন্যে বলেছি। আমার আশপাশে যারা থাকে, তাদের রাগিয়ে দিতে আমার ভালো লাগে।সালামত যদি আবার তোমাকে নিতে আসে, তুমি কী করবে?তার সঙ্গে আবার যাব।পরেরবার সে তোমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাবে। পদ্ম হাওয়াই মিঠাইয়ে কামড় দিতে দিতে বলল, তার উচিত আমাকে শিকল দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া।সালামত রাত দশটায় আবার এল। তার চিমশে যাওয়া চেহারা আরও চিমশেছে। আগে চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল, এখন নাক দিয়েও পড়ছে। সালামত ফ্যাসফেসে গলায় ভাইয়াকে বলল, জনাব, মাফ করে দেন। হানিফকে রিলিজ দিয়ে দেন।ভাইয়া বলল, হানিফটা কে?শামসুর নিজের লোক।নীলগেঞ্জি?জি, জনাব। তারে রিলিজ দিয়ে দিলে শামসু ভাই আপনার সঙ্গে আর ঝামেলায় যাবে না।ভাইয়া হাই তুলতে তুলতে বলল, ঝামেলায় কেন যাবে না? আমি তো ঝামেলা পছন্দ করি।ভাইসাহেব, আমি আপনার পায়ে ধরি।সালামত সত্যি সত্যি ভাইয়ার পা ধরতে এগিয়ে এল। ভাইয়া বলল, আপনার হাত ময়লা-জীবাণুতে ভর্তি। এই হাতে পায়ে ধরবেন না। আগে সাবান দিয়ে ভালোমতো হাত ধুয়ে আসুন। বিজ্ঞাপনে দেখেছি, লাইফবয় সাবান জীবাণু ধ্বংস করে। পদ্ম ঘরে আছে, তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন লাইফবয় সাবান আছে কি না। না থাকলে ড্রাইভার ইসমাইলকে বলুন, বাজার থেকে কিনে এনে দেবে।সালামত বলল, আপনি একটা জিনিস বুঝেন, ভাইসাহেব। হানিফের কিছু হলে আপনি বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়বেন।ভাইয়া হাসি-হাসি মুখে বলল, পৃথিবী বিশৃঙ্খলা চায়। শুধু পৃথিবী না, ইউনিভার্স বিশৃঙ্খলা চায়। এটা একটা বৈজ্ঞানিক সত্য। সেকেন্ড ল অব থার্মডিনামিকস বলে এনট্রপি বাড়বে। ডেলটা এস সমান সমান কিউ বাই টি। কিছু বুঝেছেন?সালামত বলল, একটা জিনিস বুঝেছি, শামসু ভাইয়ের সঙ্গে আপনি ডাইরেক্ট অ্যাকশনে যেতে চান। ওনাকে সেটাই বলব। ভাইসাহেব, গেলাম।পদ্মর সঙ্গে দেখা করে যাবেন না?সালামত কোনো উত্তর না দিয়েই বের হয়ে গেল। আমি ভাইয়াকে বললাম, নীলগেঞ্জিকে সত্যি সত্যি খাসি করা হচ্ছে?ভাইয়া বলল, জানি না। অপারেশন হয়ে গেলে রহিমার মায়ের মোবাইলে খবর দিতে বলেছি। এখনো কোনো খবর আসেনি।আমি বললাম, তোমার ব্যাপারটা কী, আমাকে বুঝিয়ে বলো তো।ভাইয়া বলল, রগট ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমি জানি ‘শৃঙ্খলা’ একটি অস্বাভাবিক অবস্থা। প্রকৃতি বিশৃঙ্খলা চায় বলেই বিশৃঙ্খলা একটি স্বাভাবিক ব্যবস্থা। কিছু বোঝা গেল?না।বিশৃঙ্খলা হলো এনট্রপির বৃদ্ধি। প্রকৃতি তা-ই চায়। এখন বুঝেছিস? না।ভাইয়া হয়তো আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করত, তার আগেই রহিমার মা ঢুকে বলল, ভাইজান, টেলিফোনে বলছে অপারেশন সাকসেস হইছে।ভাইয়া বলল, গুড। বিশৃঙ্খলা হচ্ছে, এনট্রপি বাড়ছে।রহিমার মা বলল, খালুজান আপনাদের দুইজনরে ডাকে।ভাইয়া বলল, আবার মিটিং?রহিমার মা বলল, জানি না। খালুজান খুব অস্থির।বাবাকে যথেষ্টই অস্থির দেখাচ্ছে। সালামতের মতোই অস্থির। অস্থিরতার কারণ, ডাক্তাররা বলছে মায়ের পেটে ক্যানসার।ভাইয়া বলল, ডাক্তার কখন বলল?রাত আটটার সময় রিপোর্ট আনতে গিয়েছিলাম, তখন বলল। তোমার মাকে এখনো কিছু বলিনি। বলব কি না বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয় বলা উচিত। টগর, তুমি কী বলো?ভাইয়া বলল, বলা উচিত।তাহলে তুমি তোমার মাকে বুঝিয়ে বলো, যাতে ভয় না পায়। চিকিৎসার আমি ত্রুটি করব না। প্রয়োজনে ঘরবাড়ি, জমি—সব বেচে দিব।ভাইয়া বলল, কীভাবে বেচবে? সব তো পদ্মর মার নামে। অবশ্যি নকল দলিল। বাবা বললেন, এই ঝামেলা তুমি বাজিয়েছ, তুমি ঠিক করো। It is an order.ভাইয়া বলল, একদিকে ঝামেলা ঠিক করলে অন্যদিকে ডাবল ঝামেলা দেখা যায়, কাজেই ঝামেলা ঠিক করা অনুচিত।বাবা হতাশ গলায় বললেন, আমি তাহলে কী করব? তুমি কি জানো, পদ্মর মা আমাকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে?জানি। ঝামেলা না বাড়িয়ে তোমার উচিত বাড়ি ছেড়ে দেওয়া।আমি কোথায় থাকব?পথেঘাটে থাকবে। ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে ইংরেজিতে ভিক্ষা করবে। রাতে ঘুমাবার জন্যে চলে যাবে কমলাপুর রেলস্টেশনে। ভবঘুরেদের জন্যে সেখানে ঘুমাবার ভালো ব্যবস্থা আছে।বাবা তাকিয়ে আছেন। মায়ের ক্যানসারের খবরে তার মধ্যে যে প্রবল হতাশা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গেছে। এখন তিনি বিস্মিত।বাবা চাপা গলায় বললেন, আমি ইংরেজিতে ভিক্ষা করব আর রাতে কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘুমাব?ভাইয়া বলল, তুমি একা মানুষ। যেকোনো জায়গায় ঘুমাতে পারো।আমি একা?মা তো ক্যানসারে মারাই যাচ্ছে। মায়ের মৃত্যুর পর তুমি একা হয়ে যাচ্ছ। আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে তোমার উচিত পদ্মর মায়ের কাছ থেকে গ্রেসপিরিয়ড নেওয়া। মায়ের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তুমি এ বাড়িতে থাকবে। মৃত্যুর পর কুলখানির দিন গৃহত্যাগ করবে।তুমি এই ধরনের কথা বলতে পারছ? তোমার জন্মদাতা মা। মা নিয়ে বিকট কথা! আর আমি তোমার বাবা।ভাইয়া হেসে ফেলল।বাবা অবাক হয়ে বললেন, তুমি হাসছ?হাসি এলে কী করব, বলো। হাসি চেপে রাখব? তুমি বোধহয় জানো না, হাসি চেপে রাখতে প্রচণ্ড এক শারীরিক প্রেশার হয়। এই প্রেশারে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। থ্রম্বসিস হতে পারে।ইউ গেট লস্ট।ভাইয়া উঠে দাঁড়াল। আমি অবাক হয়ে দেখি, তার ঠোঁটের কোনায় এখনো হাসি লেগে আছে।বাবাও অবাক হয়ে ভাইয়ার ঠোঁটের হাসি দেখছেন। বাবা বললেন, তোমার মাকে তুমি কিছু বলতে যাবে না। তুমি মস্তিষ্কবিকৃত একজন মানুষ। কী বলতে কী বলবে, তার নেই ঠিক।মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারব?বাবা জবাব দিলেন না। ভাইয়া রওনা হলেন মায়ের শোবার ঘরের দিকে। পেছনে পেছনে আমি।ভাইয়া বলল, কেমন আছ, মা?মা বলল, ভালো। আজ ব্যথা নাই।ভাইয়া বলল, মা, তোমাকে একটা প্রশ্ন করছি, ভেবেচিন্তে জবাব দিবে। বলো তো তোমার গায়ের রক্ত আছে, এমন কাউকে কি তুমি খুন করতে পারবে?তুই কি পাগল হয়ে গেলি? আমার শরীরে রক্ত আছে এমন কাউকে আমি কীভাবে খুন করব?ভাইয়া বলল, ঘরে ঢুকতেই দেখলাম তুমি একটা মশা মারলে। মশার গায়ে তোমার রক্ত।মা হতাশ চোখে তাকাচ্ছেন। তাঁকে চিন্তিত মনে হচ্ছে। ভাইয়ার ঠোঁটের কোনায় মিটিমিটি হাসি।[চলবে] | null |
34f48bd0a0 | ভাষা নিয়ে বাঙালির আবেগটা এমনই যে, ফেব্রুয়ারি মাসের শুধু একটি দিন—২১ ফেব্রুয়ারি নয়, এখন মাসজুড়েই থাকে এর প্রকাশ। ফেব্রুয়ারি এখন ভাষার মাস, বইমেলার মাস। একুশে এখন শুধু শোকে মোড়া একটি দিন নয়, একুশে এখন একটি কালজয়ী চেতনার নাম, যাকে উদ্যাপন করতে হয়, যা থেকে সারা বছর শক্তি সংগ্রহ করতে হয়। ভাষা নিয়ে আমাদের আবেগ স্বাধীনতার পক্ষে এগিয়ে যাওয়ার যেমন প্রেরণা দিয়েছে, স্বাধীনতার পর জাতি গঠনে, দেশ-বিকাশে তেমনি শক্তি জুগিয়েছে। একাত্তরে যে দেশটি আত্মপ্রকাশ করেছিল এক ভয়ানক প্রতিকূল বিশ্বে, প্রায় চার দশকের পথচলায় সে দেশটি এখন সংহত, আত্মপ্রত্যয়ী। আমাদের কৃষক, শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষ দেশটিকে ডুবতে দেননি; দেশটিকে পানির ওপর ভাসিয়ে রাখার জন্য তাঁরা কঠিন সংগ্রাম করছেন। সেই সংগ্রামে তাঁদের প্রতিপক্ষ যে শুধু দারিদ্র্য, অপুষ্টি, বৈরী আবহাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা বিশ্বমন্দার মতো অপ্রতিরোধ্য শক্তি, তা-ই নয়; সেই তালিকায় আরও আছেন স্বার্থোন্মত্ত বুর্জোয়া, আদর্শহীন রাজনীতিবিদ, উচ্চাভিলাষী সমরবিদ, ধর্মান্ধ মৌলবাদী, বিবেকহীন আমলা ও বুদ্ধিজীবী। তাঁরা সবাই নিজের স্বার্থে এ দেশকে চোবানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁরা দেশের মঙ্গল কখনো চান না, চান নিজের উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন। তাঁরা দেশের মিত্র নন, ভাষারও মিত্র নন। তাঁরা যে ভাষা ব্যবহার করেন, তাতে সুস্পষ্টতা নেই—যেহেতু তাঁদের ভাবনাতে স্পষ্টতা নেই, সততা নেই। তাঁদের হাতে ভাষা মার খায়। ভাষার ঘরের শত্রুদের সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছে বিশ্বায়নের দুই দানবসন্তান—পণ্যসংস্কৃতি ও মিডিয়াসংস্কৃতি। এরাও আঘাত হানছে বাংলা ভাষার ওপর। এই আঘাত সামলে বাংলা ভাষাকে বিকশিত হতে হবে। দেশের অর্থনীতিবিদেরা শুধু নন, বিদেশের এমনকি বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের অর্থনীতির ঠাকুরেরাও বলেন, বাংলাদেশের সামনে সুদিন আসছে। পিঠে জনসংখ্যার এক বিশাল বোঝা নিয়েও বাংলাদেশ ওপরে ওঠার মইতে পা রেখেছে। বাংলাদেশকে আরও দৃঢ়চেতা হতে হবে। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে এবং ওপরে ওঠার পরিশ্রমটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হবে। এই কৃতসংকল্প জাতির ভাষাকে তাই হতে হবে তার সংকল্পের, সততার এবং তার স্বপ্নের সমান্তরাল। সেই ভাষাকে আরও স্পষ্ট ও বলিষ্ঠভাবে প্রকাশ করতে হবে এই সংকল্প, সত্য ও স্বপ্নকে। দেশ তৈরি হচ্ছে, জাতি তৈরি হচ্ছে, কিন্তু ভাষা কি তৈরি হচ্ছে এই নতুন যুগের জন্য, যে যুগটি হবে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অস্বাস্থ্য ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও বিজয়ের, যে যুগটি বাংলাদেশকে পৌঁছে দেবে সম্ভাবনার সদর রাস্তায়—১০০ রকমের প্রতিকূলতা ও প্রতিক্রিয়াশীলের বিরুদ্ধাচরণ সত্ত্বেও? আমার ভয়, ভাষার অঞ্চলে জাগরণের লক্ষণ এখনো অনুপস্থিত। ভাষা পিছলে পড়ছে কিছু সহজ অপভাষার ফাঁদে, ভাষার প্রকাশসম্ভাবনা খর্ব হচ্ছে পণ্য ও মিডিয়াসংস্কৃতির কাছে আমাদের আত্মসমর্পণের কারণে।আমার ভয়ের উত্স বাস্তব অভিজ্ঞতা। সাড়ে তিন দশক ধরে আমি শিক্ষকতা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং খুব কাছে থেকে যুবসমাজের পরিবর্তনগুলো দেখেছি। আমি তাদের আবেগ, ক্রোধ, হতাশা ও আনন্দ বুঝতে পারি, তাদের জন্য সহমর্মিতা অনুভব করি। সমাজ গতিশীল হচ্ছে, নতুন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা অনেক নতুন সম্ভাবনা ও সমস্যাও সৃষ্টি করছে; সেগুলো আমি বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, শিক্ষার বিস্তার ঘটলেও মান কমছে; জ্ঞানমুখী না হয়ে সনদমুখী হচ্ছে শিক্ষা। পড়ার সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে, দৃশ্যমাধ্যমের প্রতি আগ্রহ ও আনুগত্য এখন ব্যাপক। কিন্তু যে বিষয়টি আমাকে কষ্ট দেয়, তা হচ্ছে, ভাষার প্রতি এক বিশাল অনীহা। ভাষা যে শুধু একটি সহজ অর্জনের বিষয় নয়, একে যে পরিমার্জন করতে হয়, এর উত্কর্ষের পথগুলো নিরন্তর তৈরি করতে হয় এবং এর প্রকাশের শক্তি ও সম্ভাবনাকে বাড়াতে হয়, এ বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তার অভাব আমি লক্ষ করি। বাংলা ভাষার একটি বর্ণমালা আছে, এর ধ্বনিগুলো উচ্চারণের কিছু সূত্র আছে এবং এর একটি সমৃদ্ধ শব্দভান্ডার আছে, কিন্তু বাস্তব ব্যবহারে এসব সত্যকে ক্রমাগত অবহেলিত হতে দেখি। এখন তো দেখতে পাচ্ছি, কেউ কেউ এ রকমও বলেন, মানভাষা হলো প্রতিক্রিয়াশীলতার ভাষা; যিনি মানভাষার কথা বলেন, তিনি প্রতিক্রিয়াশীল। তাঁরা বিশ্বাস করেন, মিডিয়ার ভাষাটাই সবার ভাষা। একজন আমাকে জানিয়েছিলেন, প্রতিক্রিয়াশীলেরা ‘আপামর ভাষাকে নেগলেক্ট করেন’। ‘আপামর’ কথাটি আমি ব্যবহার করি না—এটি একটি প্রতিক্রিয়াশীল শব্দ—আমি সমাজের উচ্চ-নিচ (পামর), আশরাফ-আতরাফ বিভাজনে বিশ্বাস করি না, সেজন্য। আমি কথ্য ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করি, কিন্তু প্রমিত ভাষার গুরুত্বের ক্ষেত্রে আস্থাবান। আমি বিশ্বাস করি, সব ভাষার একটি প্রমিত রূপ আছে, যা ওই ভাষার শ্রেষ্ঠ চিন্তা ও কল্পনাগুলো প্রকাশ করতে পারে। ওই ভাষাভাষীর বিজ্ঞান-দর্শন-সাহিত্য ও নান্দনিকতার অভিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতাগুলো অনেক গভীরতায় বাঙ্ময় করতে পারে। কিছুদিন থেকে একটা বিতর্ক চলতে দেখছি, যে বিতর্কটি মানভাষা বনাম মিডিয়াভাষা নিয়ে, যে বিতর্কে তরুণের ভাষার বিপরীতে প্রবীণের ভাষাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এটি একটি অহেতুক বিতর্ক। কিন্তু একে আমলে আনতে হয়, যেহেতু অনেক তরুণের এ রকম একটি ধারণা জন্মেছে যে মিডিয়ার ভাষা—আরও স্পষ্ট করে বললে, মিডিয়ার, নাটকের ও বিজ্ঞাপনের ভাষাই হচ্ছে এ সময়ের, তরুণদের প্রমিত ভাষা। এই ভাষাই ‘আপামর’ জনসাধারণের, এটিই মায়ের ভাষা, আটপৌরে ভাষা। কেউ কেউ যুক্তি দেখান, আমাদের মুখের ভাষাই তো হওয়া উচিত মানভাষা।এই বিতর্ক যখন শুরু হয়েছে, এটি নিশ্চয় অনেক দিন চলবে। কিন্তু এর এক পক্ষে যখন নিজেকে দেখতে পাই, তখন এই ‘বিপক্ষের’ অবস্থানটা পরিষ্কার করে নেওয়াই সংগত। আমি নিশ্চিত, অনেকেই মিডিয়া-নাটকের ভাষায় আস্থা স্থাপন করেন, এফএম রেডিওর ভাষাকে ‘স্মার্ট’ ভেবে সেটি ব্যবহার করেন এবং এ রকম ভাষাকে তরুণের সহজাত ভাষা হিসেবে দেখেন। কিন্তু শুধু এই জায়গাটিতে যদি তাঁরা আটকে থাকেন, তাহলে বাংলা ভাষার অনেক সম্পদশালী অঞ্চল, এর প্রকৃত শক্তি ও সৌন্দর্য তাদের অগোচরেই রয়ে যাবে। এটি কাম্য নয়।২.শুরুতেই একটি বিষয় নিশ্চিত করা উচিত, যাঁরা মানভাষার বিরোধিতা করেন, তাঁরা বলেন, এটি নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলের ভাষা নয়, এটি নির্মিত ভাষা। কথাটি খুবই খাঁটি। পৃথিবীর প্রায় সব ভাষার যে প্রমিত রূপ, তা বহুদিন ধরে অল্প অল্প করে নির্মিত হয়ে আসছে; জারিত, নিকষিত ও পরিশীলিত হয়ে আসছে। এই ভাষা-নির্মাণ ভাষার গভীরতা বাড়ানোর জ্ঞান প্রকাশ ও ধারণে এর পারঙ্গমতা বৃদ্ধির একটি সমন্বিত সর্বজনীন প্রকাশ। ফলে এটি কোনো বিশেষ অঞ্চলে নয়, সময়ান্তরে এর রূপ পাল্টায়, কিন্তু মূল বা সারবস্তু, এর আন্তরিক অবস্থান এবং এর সংকলিত জ্ঞানসামগ্রী পাল্টায় না; বরং আরও গভীরতা ও দার্ঢ্য পায়। প্রমিত ভাষার সঙ্গে কথ্য ভাষার অথবা আঞ্চলিক ভাষার বিরোধ নেই। এরা একে অপর থেকে গ্রহণ করে, সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু কথ্য ভাষা জ্ঞান-বিজ্ঞান বা দর্শনচর্চার ভাষা হতে সক্ষম হয় না, যেহেতু কথ্য ভাষার অঞ্চলটি সীমিত। বস্তুত, এক অঞ্চলের কথ্য ভাষা অন্য অঞ্চলের মানুষ বলতে বা বুঝতেও পুরোপুরি সক্ষম হয় না। আঞ্চলিক ভাষাও তাই। এগুলোর শক্তি তাদের প্রাত্যহিকতায়, তাদের ভৌগোলিকতায়। বাংলা ভাষাকে যখন আমরা উদ্যাপন করি, তখন আঞ্চলিক ভাষা অথবা বিভিন্ন অঞ্চলের কথ্য ভাষাকেও আমরা উদ্যাপন করি, যেহেতু এগুলোয় জীবনের উত্তাপ থাকে। যেসব সাহিত্যে মুখের ভাষাটি মুখেই বলা হয়—যেমন, নাটকে অথবা গল্প-উপন্যাসের কথোপকথন অংশে—সেসব সাহিত্যে কথ্য বা আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার স্বাভাবিক এবং এর একটি দীর্ঘ ঐতিহ্যও রয়েছে। কিন্তু মিডিয়া-ভাষা? এটিও কি নির্মিত নয়? মিডিয়া-নাটক ও বিজ্ঞাপনের যে ভাষা, তা বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের? এ ভাষা প্রসারে মিডিয়া কেন এত আগ্রহী? এই ভাষায় কি বৈচিত্র্য সন্ধানের আগ্রহ আছে, নাকি আছে সামান্যীকরণের প্রবণতা? আমাকে অনেকে বলেন, এই ভাষা এখন সবাই বলতে শুরু করেছে। আমার তাতে আপত্তি নেই, যদি সেটি বাংলা হতো। কিন্তু একটি বাক্যে যদি চারটি ইংরেজি শব্দ জুড়ে দেওয়া হয়, যেগুলো টেবিল-চেয়ারের মতো নির্বিকল্প নয়, যেগুলোর সহজ চালু ও সুন্দর বাংলা প্রতিশব্দ আছে। যেমন—‘বাট’ ‘লাইক’ ‘সো’। তাহলে আমার একটা আপত্তি থেকেই যাবে।৩.কয়েক তরুণ আমাকে ভাষা নিয়ে বাহাস করার আমন্ত্রণ জানালেন। তাঁরা মিডিয়া-ভাষার সমর্থক এবং প্রমিত ভাষাকে প্রতিক্রিয়াশীল বলে ভাবেন। তাঁরা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কেন এই মিডিয়া-ভাষা অপছন্দ করি। একজন বললেন, তাঁদের ভাষাটা আটপৌরে। এটিই তো মায়ের ভাষা। এই ভাষা সহজাত, স্বতঃস্ফূর্ত। একে কেন আমি মূল্য দিই না ইত্যাদি।আমি তাঁদের কয়েকটি প্রশ্ন করলাম। এর একটি ছিল, পৃথিবীর আর কোনো ভাষাভাষী (এই উপমহাদেশ ছাড়া, যার উপনিবেশি ইতিহাসটি দীর্ঘ ও গ্লানিময়) তার নিজের ভাষায় অন্য ভাষার অকারণ অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ব্যবহার করে এবং গঠিত হয়? কোনো ইংরেজ কি বাংলা শব্দ ঢোকায় তার ভাষায়? ‘বাট’-এর জায়গায় ‘কিন্তু’ লাগায়? ‘সো’ না বলে ‘কাজেই’ বলে? কোনো চীনা করে? আমি তাঁদের বললাম, চীনের রেডিও পৃথিবীর সব জায়গা থেকেই প্রায় শোনা যায়। একদিন ১৫ মিনিট কোনো চীনা অনুষ্ঠান শুনে আমাকে যেন তাঁরা জানান, কতগুলো ইংরেজি শব্দ সেখানে ব্যবহূত হয়েছে। আমাদের এফএম রেডিওতে বাংলাকে বিকৃত করে উচ্চারণ করা হয় এবং এটি বেশ গর্বের সঙ্গেই করা হয়; অথচ নেপালের এফএম রেডিওগুলো শুদ্ধ নেপালিতে অনুষ্ঠান করে। তাদের শ্রোতারাও তরুণ; তারা আমাদের শ্রোতাদের চেয়ে কম স্মার্ট নয়।আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল এক তরুণকে, যে বলছিল প্রমিত ভাষা একটা চাপিয়ে দেওয়া ভাষা। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, পৃথিবীর কোন জাতি তার সাহিত্য, দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের চিন্তাগুলো মিডিয়া বা কথ্য বা আঞ্চলিক ভাষায় লিখে রেখেছে। বাংলা ভাষার রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জীবনানন্দের কথা ছেড়েই দিলাম, যেহেতু তাঁরা মিডিয়া-সংস্কৃতির আগের মানুষ, একেবারে হাল সময়ের শ্রেষ্ঠ কয়টি কবিতা, গল্প বা প্রবন্ধ লেখা হয়েছে সম্পূর্ণ কথ্য বা মিডিয়া-ভাষায়?আর তৃতীয় প্রশ্নটি ছিল তাদের, যারা মিডিয়া-নাটকের ভাষাকে স্বাভাবিক, আটপৌরে আর মায়ের ভাষা দাবি করে এর পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিচ্ছিল। তারা যেহেতু মায়ের উপমা দিয়েছিল, আমি আমাদের মায়েদের আটপৌরে জীবন থেকেই শুরু করেছিলাম। একজন মা, যিনি সারা দিন ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, সাধারণ একটা শাড়ি পারেন, হয়তো আঁচলে হলুদের দাগ লেগে থাকে ইত্যাদি, তিনিই কি সন্ধ্যায় একটা পোশাকি অনুষ্ঠানে, যেমন কোনো বিয়েতে যাওয়ার সময় একটুখানি সাজেন না, প্রসাধন করেন না, পোশাক পাল্টান না—অন্য কথায় একটুখানি প্রমিত বা পোশাকি রূপ নেন না? তাহলে ভাষার ক্ষেত্রে আপত্তিটা কোথায়?৪.পণ্য আর মিডিয়াসংস্কৃতি বাংলা ভাষাকে যেভাবে চেপে ধরেছে, তাতে ফেব্রুয়ারিজুড়ে আমরা যত হইচই করি না কেন, এই ভাষা পঙ্গু হতে থাকবে। টিভিতে ‘টক শো’গুলো শুনুন—বক্তারা প্রতি তিন শব্দে একটি ইংরেজি বলবেন। সেদিন একজনকে বলতে শুনলাম, বঙ্গবন্ধু মার্ডার ট্রায়ালের যে ভার্ডিক্ট আমরা পেলাম, তাতে রুল অব জাস্টিস উইন করল। এর চেয়ে একটু কষ্ট করে ইংরেজিতে বলে ফেললেই তো হতো, তিন-চারটি হতভাগা বাংলা শব্দ অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচত। ইংরেজিটা আমরা শিখব, নিশ্চয়ই শিখব; কিন্তু খণ্ড খণ্ড শিখে সেই খণ্ডগুলোর আঘাতে বাংলার বারোটা বাজাব, তা তো উচিত নয়। আর উচ্চারণ! কথ্য-মিডিয়া-আঞ্চলিকতার দোহাই দিয়ে উচ্চারণে আমরা এনেছি বৈপ্লবিক অরাজকতা। বাংলায় যে চ-ছ-জ-ঝ এই চারটি আলাদা বর্ণ আছে, এখন সেটি প্রায় বোঝাই যায় না। এখন ‘আসার মাসে, স্কুলে আসার পথে, আসার খেতে খেতে, পথ চলতে গিয়ে কেউ আসার খায়’। কিছুদিন পর বর্ণমালার বোঝা এমনিতেই কমে যাবে। ব ড় ঢ় হবে শুধুই র, ইত্যাদি। তখন আমার দুখিনী বর্ণমালা বোঝা ফেলে সুখিনী হবে। আর উর্দু, হিন্দি বলতে পারলে তো আমরা লেপ্টে যাই। লাহোরে পা দিলেই উর্দু, দিল্লিতে পা দিলেই হিন্দি। নিজের ভাষা নিয়ে এত হীনম্মন্যতা আমি কোথাও দেখিনি।পণ্যসংস্কৃতি তার প্রসারের জন্য এই হীনম্মন্যতাটুকু চায়; মিডিয়াসংস্কৃতি সহজ ও নিরলস বিস্তারের জন্য নির্ভর করে আমাদের হীনম্মন্যতার ওপর। এই ফেব্রুয়ারিতে ভাষা নিয়ে আমাদের আবেগ দেখানো শুরু করার আগে এই হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে আসার একটি শপথ নিলে কেমন হয়?[এই লেখার বিষয়ে আপনাদের মতামত আমরা ছাপতে আগ্রহী।—বিভাগীয় সম্পাদক] সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। | null |
38d2601b1b | মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছ থেকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেওয়াটা তাঁর জন্য নতুন নয়। অপ্রত্যাশিতভাবে মাশরাফির চোট তাঁকে অধিনায়ক বানিয়ে দিয়েছিল সেই আলোচিত ক্যারিবীয় সফরে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও। পরে পূর্ণ অধিনায়কের দায়িত্বেও সাকিব এনে দিয়েছিলেন বেশ সফলতা।
আরও একবার বাংলাদেশের ক্রিকেটে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের প্রত্যাবর্তন হতে যাচ্ছে বলেই খবর। কিন্তু সাকিব কাল ম্যাচ শেষে জানালেন, এ নিয়ে নাকি ভাবছেনই না!
কাল ব্যাটে-বলে নেতৃত্ব দিয়ে মাশরাফিকে ‘স্পেশাল’ উপহার দিয়েছেন। এও যেন ছিল পালাবদলের এক প্রতীক। অনিবার্যভাবে প্রশ্নটা উঠল ম্যাচ শেষে। বিসিবি সভাপতি নিজেই আগে আভাস দিয়ে রেখেছেন টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব সাকিবকে দিতে চায় বোর্ড।
তিন ধরনের ক্রিকেটে তিন অধিনায়কের নেতৃত্বে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সাকিব নিজে অধিনায়কের কাজটি খুব উপভোগ করেন। ফলে তাঁর পক্ষ থেকে ইতিবাচক উত্তরই আসার কথা। তবে কাল এ নিয়ে বেশ কূটনৈতিক অবস্থান নিলেন।
এখনো যেহেতু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, হয়তো এ কারণে সাকিব এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চাইলেন না, ‘অধিনায়কত্বের ব্যাপারে কী হবে তা এখনো আমি জানি না। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দলের সঙ্গে থাকা এবং অবদান রাখা। চেষ্টা করা যে দলের জন্য কতটা ভালো করা যায়।’
সামনে বাংলাদেশ ব্যস্ত হয়ে পড়বে ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে। টি-টোয়েন্টি খেলবে না নিকট ভবিষ্যতে। সাকিবও তাই ধীরেসুস্থে নতুন অধিনায়ক ঘোষণার পক্ষে। বললেন, 'বাংলাদেশের পরের টি-টোয়েন্টি অনেক পরে। তাই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।’
কালকের অমন ম্যাচ, প্রথম উইকেট পেয়ে তেড়েফুঁড়ে ওঠা, অনেক দিন পর সাকিবকে যেন বেশ উজ্জীবিত মনে হলো। মনে হলো, যেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চেয়েছেন খুব করে। ব্যাটিংয়ে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ করার পর বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। কালকের ম্যাচ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে যেন সাকিব ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন, অধিনায়কের দায়িত্ব পেলে তিনি প্রস্তুত, ‘যদি অধিনায়ক হই, তাহলে উজ্জীবিত তো করবেই। অবশ্য এমনিতেও উজ্জীবিত করবে। আমাদের দলটা অনেক ভালো, প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি। আজকের (গতকাল) পারফরম্যান্স দেখে খেলোয়াড়রা নিজেদের মূল্যায়ন করতে পারবে। অধিনায়ক হলে ভবিষ্যতে আমার জন্য এটা সাহায্য করবে।’ | null |
68aee2edb2 | মহেন্দ্র সিং ধোনি কেন ভারত দলে? এ প্রশ্ন গত এক মাসে আর উঠছে না। মাঝে এক বছর ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য ব্যর্থ ধোনিকে নিয়ে গুঞ্জন উঠেছিল। বিশ্বকাপ দলে ধোনির জায়গা পাওয়া ঠিক হবে কি না সে প্রশ্নও উঠে গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া সফর ও অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরে বারবার সেই ধোনিই এমন পারফরম্যান্স দেখালেন যে ওসব গুঞ্জন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। বিরাট কোহলির পর ভারতের বিশ্বকাপ দলে যদি আর কারও জায়গা পাকা হয়ে থাকে তবে সেটা ধোনিই। কেন? উত্তরটা দিয়েছেন বিশ্বকাপ দলে ঢোকার আশায় দিন গোনা সুরেশ রায়না।
ইনিংসের শেষভাগে দলকে প্রত্যাশিত সমাপ্তি এনে দেওয়ার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন মাইকেল বেভান ও মাইকেল হাসিরা। তবে অস্ট্রেলিয়ান দুই সাবেক ব্যাটসম্যানের সেই ‘ফিনিশার’ চরিত্রকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছেন ধোনি। ম্যাচের পর ম্যাচ, বছরের পর বছর একই কাজ করে আসছেন। মহা চাপের মুহূর্তেও মাথা ঠান্ডা রেখে দলকে নিরাপদ একটি স্কোর এনে দিচ্ছেন অথবা প্রতিপক্ষের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করে রান তাড়া করছেন সফলভাবে। ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে বিপদে পড়া ভারতকে টেনে নেওয়া ধোনির সে ইনিংস কিংবা নুয়ান কুলাসেকারাকে ছক্কা মেরে ফাইনাল শেষ করার দৃশ্য হয়তো অধিকাংশ ভারতীয়র স্মৃতিতেই গেঁথে আছে।২০১৮ সাল অবশ্য সে স্মৃতিতে ধুলো জমিয়ে দিচ্ছিল। অনেকের মাঝেই বিশ্বাস জন্মাচ্ছিল ধোনির পক্ষে ওভাবে ছক্কা মেরে আর কখনো ম্যাচ জেতানো সম্ভব হবে না। হাজার হোক বয়স তো কম হয়নি, ৩৭ পেরিয়ে ৩৮ ছুঁচ্ছেন কদিন পরেই। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনো গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে অসাধারণ কিন্তু উইকেটের সামনের অবস্থাই প্রশ্ন জাগাচ্ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই সিরিজেই ধোনি দেখিয়েছেন, এখনো ম্যাচ শেষ করে আসার ক্ষমতা হারাননি। চেন্নাই সুপার কিংসে ধোনির অধীনে প্রায় আট বছর খেলা রায়নাও সেটাই মনে করেন। তাঁর চোখে ধোনির ম্যাচ শেষ করার ক্ষমতা এখনো প্রশ্নাতীত, ‘এমএস এর জন্য পাঁচে বা ছয়ে নামাটাই আদর্শ। সে ম্যাচ খুব ভালো পড়তে পারে এবং অভিজ্ঞতাকে দারুণ কাজে লাগায়। যখন দরকার হয় ইনিংস গড়তে পারে আবার ম্যাচ শেষও করে আসতে পারে। এ দুটো ক্ষমতায় তাঁর ধারে কাছে কেউ নেই।’
ওয়ানডেতে প্রায় ৫১ গড়ে ১০ হাজার রান করেছেন ধোনি। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে তাঁকে তাই একটু নিচেই দেখতে চান রায়না। ঠিক একই কারণে আরেক অভিজ্ঞ কোহলিকেও একটু পরেই দেখতে চান ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী, ‘আমার মতে তিন বা চারই ভালো হবে কোহলির জন্য। টপ অর্ডার দ্রুত শেষ হয়ে গেলে আমাদের কোহলির মতো একজনকে দরকার যে সবকিছু ধরে রাখতে পারে।’
আইপিএল দিয়ে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেওয়ার আশায় আছেন রায়না। তবে ভারত দলের বর্তমান অবস্থায় কাজটা কঠিন সেটাও মানেন। বিশ্বকাপে যদিও স্বাগতিক ইংল্যান্ডকেই এগিয়ে রাখছেন রায়না। ভারতও খুব একটা পিছিয়ে নেই রায়নার কাছে, ‘সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দলটি বিশ্বকাপ জিতবে। ইংলিশ কন্ডিশন পেসারদের জন্য ভালো কিন্তু গত কিছুদিন স্পিনারদেরও ভালো করতে দেখছি। গত বছর আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছি, আমাদের লেগ স্পিনাররা খুব ভালো করেছে। এ দিক থেকে ভারত দল বেশ সুন্দর গুছিয়ে নিচ্ছে। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতা ভালোভাবে মিশেছে। আর যে কোনো কন্ডিশনে আমাদের পেস আক্রমণ দারুণ বল করছে।’ | null |
19v4z0bq1u | চার বছরের শিশুকে ঘরের বারান্দার খুঁটিতে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে মাঠে ঘাস কাটতে যান মা। আর দিনমজুর বাবা গিয়েছিলেন কাজে। এরই মধ্যে রান্নাঘরে লাগে আগুন। সেই আগুনে রান্নাঘরের পাশাপাশি গোয়ালঘরও পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনের তাপ লাগে শিকলে বাঁধা শিশু জিহাদ হোসেনের (৪) শরীরেও। শিশুটির দেহের কিছু অংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
আজ শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে একটি ষাঁড় পুড়ে মারা গেছে।
ওই বাড়ির বাসিন্দা দিনমজুর রুবেল হোসেনের স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন বলেন, ছেলে খুব দুষ্টুমি করে। তাই তিনি বাড়ির বাইরে গেলে শিকলে বেঁধে রেখে যান। আজও বেঁধে রেখে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। আর চুলার আগুন থেকে তাঁর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে তাঁর সন্তানের শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আগুনে ওই পরিবারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আহত শিশুকে চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, লিখিত আবেদন করলে সরকারি বরাদ্দ থেকে সহযোগিতা করা হবে। | null |
2b842b5470 | দুই দিন আগে বার্সেলোনার সংসারে তাঁর ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। উপলক্ষটা স্মরণীয় করতে যা করার দরকার তা-ই করছিলেন লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধটা জুড়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের রক্ষণভাগে ত্রাস ছড়িয়েছেন। চোখ জুড়ানো গোল করে ভিসেন্তে ক্যালদেরনে বার্সেলোনার দীর্ঘকালের খরা কাটানোর পথ তৈরি করে পরের গোলটি বানিয়ে দিয়েছেন। মেসি তো ম্যাচ শেষে করবেন উৎসব!কিসের উৎসব! ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে শুয়ে কাতরাতে হলো আর্জেন্টাইন প্লে-মেকারকে। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে মেসি ও পিকের গোলে ২-১-এ জেতা ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট খানেক আগে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হলো। অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে মেসিকে এভাবে মাঠ ছাড়তে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন কোচ পেপ গার্দিওলাও, হাড়-টাড় ভেঙে যায়নি তো!শেষ পর্যন্ত গার্দিওলাই নিশ্চিত করেছেন, মেসির অ্যাঙ্কেল ভাঙেনি। তবে ক্লাবের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের। এই চোট সামলে আবার মাঠে ফিরতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লাগবে। ফলে লিগে স্পোর্টিং গিজন, রিয়াল মায়োর্কা ও অ্যাথলেটিক বিলবাও এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে রুবিন কাজানের বিপক্ষে ম্যাচে (অ্যাওয়ে) তাঁর খেলা হবে না। অবশ্য বার্সা চিকিৎসকেরা বলছেন, মেসির উন্নতি আশাতীতও হতে পারে। এই মেসি-চোট পাওয়ার আগেই বার্সেলোনা অবশ্য মৌসুম শুরুর চোটটা ভালোমতোই সামলে উঠেছে। মৌসুমের শুরুতেই ফুটবল-বিশ্বকে হকচকিত করে দিয়ে ন্যু ক্যাম্পে হেরে বসেছিল নবাগত দল হারকিউলিসের বিপক্ষে। তারপর চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রিক দল প্যানাথিনাইকসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে ক্ষততে কিছুটা প্রলেপ দিতে পেরেছিল। আর কাল পেপ গার্দিওলা পেলেন কোচিং ক্যারিয়ারের অধরা এক জয়। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ ভিসেন্তে ক্যালদেরনে সর্বশেষ দুই সফর থেকেই হেরে ফিরেছিল বার্সা। গার্দিওলা বার্সাকে নিয়ে এক মৌসুমেই ছয়টাসহ আটটি ট্রফি জিতেছেন। কিন্তু এই ক্যালদেরন থেকে ম্যাচ জিতে ফেরার অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না। সেই অভিজ্ঞতাটা কাল তাঁকে উপহার দিলেন মেসি-পিকে।ম্যাচের ১৩ মিনিটে পেদ্রোর কাছ থেকে বল পেয়ে বুটের পেছন দিক দিয়ে আলতো টোকায় আড়াআড়ি করে মেসি বল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন জালে। ২৫ মিনিটে রাউল গার্সিয়া ম্যাচে সমতা ফিরিয়েছিলেন। সাত মিনিট পরই মেসির কর্নার থেকে আবার বার্সাকে এগিয়ে দেন পিকে।ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে অ্যাটলেটিকো খেলায় ফেরার চেষ্টা করেছিল, জাভি-পেদ্রোও বার দুয়েক গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন; কিন্তু ঘটনাবিহীনই কাটল দ্বিতীয়ার্ধ। ঘটনাবিহীন! যে এক ঘটনা ঘটল, তাতেই বিমূঢ় বার্সেলোনা।ম্যাচের শুরু থেকে বিপজ্জনক সব ট্যাকলের শিকার হতে থাকা মেসিকে কড়া চ্যালেঞ্জ করে ফেলে দেন অ্যাটলেটিকোর চেক ডিফেন্ডার টমাস উফালুসি। সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে উফালুসিকে। আর স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিকে।মেসির এই ইনজুরি ছাপিয়ে গেছে ম্যাচের ফলাফলকেও। অ্যাটলেটিকো কোচ কিকে ফ্লোরেসও দেখতে গিয়েছিলেন মেসিকে, তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনাও করছেন। কিন্তু এসব ভদ্র কথায় মন ভিজছে না গার্দিওলার। মেসি ধারাবাহিকভাবে আক্রমণের শিকার হতে থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন যে রেফারিরা তাঁকে ঠিকমতো সুরক্ষা দিচ্ছেন না, ‘টিভির ফুটেজেই সব বোঝা যাচ্ছে। দুনিয়ায় শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরই সুরক্ষার দরকার আছে, ব্যাপারটা তা নয়। সব খেলোয়াড়কেই রেফারির সুরক্ষা দেওয়া উচিত।’মেসির ওপর অ্যাটলেটিকো খেলোয়াড়দের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি চটেছেন বার্সা ডিফেন্ডার পিকে। তিনি বলছেন, মেসিকে রীতিমতো ধাওয়া করে মারা হয়েছে, ‘আমার দুঃখই লাগছে। এখন মনে হচ্ছে, বিশ্ব ফুটবলে সবকিছুই বৈধ! মেসিকে রীতিমতো ধাওয়া করে মারা হয়েছে। এই মাপের একজন খেলোয়াড়কে আটকাতে ওরা সবকিছুই করেছে।’ এএফপি, ওয়েবসাইট। | null |
tf5wk94key | গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির এক কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দে ভরা। এ কারণে প্রায় দুই বছর ধরে ভুগতে হচ্ছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দাদের। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলা শহর ও দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে।
ভোগান্তির কথা জানিয়ে কলেজ রোড এলাকার ব্যবসায়ী মো. সামসুদ্দিন বলেন, অবহেলিত এ সড়কের মতো কাপাসিয়ার মধ্যে আর কোনো সড়ক নেই। এটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর একটি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির এ অবস্থা। বর্তমানে এ সড়কে ব্যবসায় পণ্য আনা-নেওয়া করতে ব্যাপক সমস্যা হয়। ভাঙনের গর্তে পড়ে মাঝেমধ্যে যানবাহন উল্টে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাপাসিয়া বাজারের কলেজ রোডের মোড় থেকে বলদা বাজারের মোড় পর্যন্ত এ সড়কজুড়ে ১০টি স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে আছে। কলেজ রোডের দুই পাশে রয়েছে কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, হরিমঞ্জুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চবিদ্যালয়, সাবরেজিস্ট্রি, আয়করসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। তবে গতকাল শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সেদিন শিক্ষার্থীদের সড়কে তেমন দেখা যায়নি। এ ছাড়া এ পথে উপজেলার চাঁদপুর, দুর্গাপুর ইউনিয়নের লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার লোকজন নিয়মিত চলাচল করেন।
সড়কটির বিষয়ে গতকাল দুপুরে প্রথম আলোকে কাপাসিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মাঈন উদ্দীন বলেন, মানুষের ভোগান্তি লাগবে দ্রুতই সড়কটি সংস্কারে কার্যাদেশ আহ্বান করা হবে। সড়কটির সংস্কারকাজের অনুমোদন হয়েছে। এ ভোগান্তি বেশি দিন থাকবে না।
এ সড়কে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ বার যাওয়া-আসা করেন মো. হাবিবুল্লা। তিনি বলেন, সড়কটি ভাঙা থাকায় পায়ে হেঁটে আসা-যাওয়া করতে হয়। এ পথে রিকশাচালকেরা যেতে চান না। ভাড়া বেশি দাবি করেন।
কলেজ রোডেই বাড়ি একটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাজউদ্দিন আহমেদের। যেকোনো জায়গা থেকে বাড়িতে ফিরতে হলে এ সড়ক ব্যবহার করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না তাঁর। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। | null |
652eaffae5 | শুরু হচ্ছে তৌকীর আহমেদের ছবি ‘হালদা’র নতুন সফর। জানা গেছে, এ বছর ছবিটি তিনটি উৎসবে দেখানো হবে। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর কসোভোতে অনুষ্ঠিত হবে ১১তম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল দ্য গডেস অন দ্য থ্রোন। ৪ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর রাশিয়ায় হবে ১৪তম কাজান ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব মুসলিম সিনেমা। এই উৎসবে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নেবে ‘হালদা’। আগামী ৪ থেকে ১১ অক্টোবর ইতালিতে আয়োজন করা হয়েছে ২১তম রিলিজিয়ন টুডে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এখানেও প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকছে ছবিটি।
এর আগে গত ২২ থেকে ২৭ মে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত অষ্টম সার্ক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয় ‘হালদা’। উৎসবে ২৬টি চলচ্চিত্র অংশ নেয়। বিচারকদের রায়ে ‘হালদা’ ছবিটি সেরা চলচ্চিত্র, সেরা চিত্রগ্রাহক, সেরা সম্পাদক ও সেরা আবহসংগীতের পুরস্কার পায়। এ ছাড়া গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘হালদা’ ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান তৌকীর আহমেদ।
‘হালদা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মোশাররফ করিম, ফজলুর রহমান বাবু, রুনা খান, শাহেদ আলী, দিলারা জামান, মোমেনা চৌধুরী, কাজী উজ্জ্বল প্রমুখ। এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী আর এর দুই পাড়ের জেলেদের জীবন নিয়ে এই চলচ্চিত্রের গল্প। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল গত বছর ১ ডিসেম্বর। | null |
3b47a98736 | ১০৬, ১৫, ১২৬, ১২১, ৯৬—জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় সিরিজে ফ্যাপ ডু প্লেসির রান। স্বপ্নের মতো এক সিরিজই গেল প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানের। ৫ ম্যাচে ৪৬৪ রান। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অ্যারন ফিঞ্চের রান সেখানে ২৫০! ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তিনটি সেঞ্চুরিই প্রাপ্তি এ সিরিজে। ডু প্লেসির দুরন্ত পারফরম্যান্সে ত্রিদেশীয় সিরিজটা দক্ষিণ আফ্রিকা না জিতলে বরং অন্যায়ই হতো! নিয়তি অবশ্য বিমুখ করেনি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অস্ট্রেলিয়াকে আজ ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে প্রোটিয়ারাই।তবে একটু আক্ষেপ থেকেই গেল ডু প্লেসির। অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি করার সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঢুকে পড়ার সুযোগ। মিচেল জনসনের বলে ফেরার আগে করেছেন ৯৬ রান।অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২১৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার ধাক্কা। দলের ১৪ রানের মাথায় ফিরে যান কুইন্টন ডি কক। এরপর হাশিম আমলা ও ডু প্লেসির দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৯৮। স্মিথের বলে আমলা ৫১ রানে ফিরলে ডু প্লেসি আরেকটি জুটি গড়েন অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে। দুজনের চুতর্থ উইকেট জুটিতে আসে ৯১। প্রোটিয়া অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ৫৭ রানে।
এর আগে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেল স্টেইনের তোপে টালমাটাল অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা। ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় জর্জ বেইলির দল। সর্বোচ্চ ৫৪ আসে ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাট থেকে। স্টেইনের ঝুলিতে ৪ উইকেট। ম্যাচসেরাও তিনি। আর সিরিজসেরা অবধারিতভাবেই ডু প্লেসি। টেন ক্রিকেট। | null |
6ddc6671f9 | আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে প্রকারান্তরে এ ধরনের ঘটনা যে ঘটছে তার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতই অস্বীকার করুক না কেন, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে। সোমবার সিরডাপ মিলনায়তনে পুলিশ সম্পর্কে ১০১টি প্রশ্নোত্তর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানেও বক্তারা একই কথা বলেছেন। আইনমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, আইনের কোনো বিধানেই বিচার ছাড়া কারও প্রাণ নেওয়ার অধিকার নেই। পুলিশ কোনো অবস্থাতেই আইনের ঊর্ধ্বে কাজ করতে পারে না। আইনমন্ত্রী যেদিন সেমিনারে এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন, সেদিনই হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে ডিবি পুলিশের হাতে নূরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর প্রথম আলোতে ছাপা হয়, যাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত তাঁর ছেলে জেবুকে পুলিশেঝর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আটক করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সহযোগীরা ডাকাত ডাকাত বলে তাদের ওপর হামলা চালায়। এরপর পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। নিহত নূরুল ইসলামের স্ত্রী বলেছেন, বিনা দোষে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনা যেভাবেই ঘটুক না কেন, কোনো অবস্থাতেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকে জায়েজ করা যায় না। কোনো আসামিকে ধরতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও লোকবল থাকা প্রয়োজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তাও তারা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের কাছ থেকে পাল্টা হামলার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হয়ে তার বাবাকে গুলি করে হত্যা করা নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। আইনমন্ত্রী এসব অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হলো, তদন্তকাজটি কে করবে? যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরই যদি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে অপরাধী শনাক্ত হবে না, শাস্তিও পাবে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিকল্প পন্থায় তদন্তের ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল, তারা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করবে। কেননা বিরোধী দলে থাকতে এই দলের অনেক কর্মী বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। কেবল রাজনৈতিক কারণেই যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকে, তা নয়। অরাজনৈতিক ঘটনায়ও অহরহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিগৃহীত ও নিহত হয়ে থাকেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ যত গুরুতরই হোক না কেন, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। দ্বিতীয় কথা হলো, বিচারের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নয়। তাদের কাজ অভিযোগ তদন্ত এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা। আইনমন্ত্রী বিচারবহির্ভূত হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যরাও একই কথা বলেছেন। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার নজির তেমন নেই। অতএব, নিষ্ফল তদন্তে কোনো কাজ হবে না। যেকোনো উপায়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এমনকি আত্মরক্ষার নামেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হত্যার অবাধ ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালনে বাধ্য করতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যার দায় থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতেই হবে। | null |
1159722af5 | ২০০৫ সাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১টি স্বর্ণপদক, ৭টি রৌপ্য ও ৩১টি ব্রোঞ্জপদক এবং ৩৩টি সম্মানসূচক স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক কিংবা উচ্চশিক্ষা হোক, আমাদের পড়ালেখার মান যে নিম্নগামী, সে উপলব্ধি দেশের প্রায় সবার। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমাদের শিক্ষার মানের সম্মানজনক স্বীকৃতি নেই। এ ছাড়া স্কুল-কলেজের িশক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ করে গণিত ও ইংরেজির প্রতি যে ভীতি, তা-ও আমাদের অজানা নয়। এসব বিষয়ে দেশের শিক্ষাসহ নানা বিষয় নিয়ে আন্তরিকভাবে ভাবেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তাঁর সঙ্গে নানা সময়ে আলোচনাও হয়েছে। একসময় আমরা ভাবলাম, গণিত অলিম্পিয়াড করা উচিত।
জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিকপ্রথম আলোর সম্পাদক মতি ভাইয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে। সারা দেশের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে আমরা ভাবলাম, প্রতি সপ্তাহে কয়েকটি করে সমস্যা এতে ছাপানো যায়। এভাবে ছাপিয়ে দিলেই সবাই সমাধানের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়বে, এ রকম প্রত্যাশা আমরা করিনি। তাই তাঁকে অনুরোধ করলাম, যারা সমস্যাগুলো শুদ্ধভাবে সমাধান করবে, তাদের নামও যেন প্রথম আলোয় ছাপিয়ে দেওয়া হয়। সমস্যাগুলো ছাপা হতে লাগল নিউরনে অনুরণন নামে। এটা ছাপানো শুরু হয় ১৭ জুন ২০০১ সালে। আমরা অভাবনীয় সাড়া পেলাম। মহা উৎসাহী মুনির হাসান পড়লেন বিপদে! এত সমাধান যাচাই করার উপায় কী? যাচাইয়ের জন্য কিছু স্বেচ্ছাসেবী নেওয়া হলো। আমাদের মধ্যে সে কী উত্তেজনা! পরে জেনেছি, শুধু শিক্ষার্থীরা নয়; অনেক বয়স্ক, অভিভাবকেরাও তাঁদের বুদ্ধি ঝালাই করেছেন। পরে এসব সমস্যা নিয়ে নিউরনে অনুরণন এবং নিউরনে আবারও অনুরণন নামে দুটি বইও লিখেছিলাম আমরা।
একদিন আমাকে একজন ই-মেইল করে জানাল, সে সব কটি সমস্যা সমাধান করেছে। ই-মেইলে সেগুলো পাঠিয়েও দিয়েছে। আমি তো রীতিমতো অভিভূত। আরও অভিভূত হলাম জেনে যে সেই মানুষটি বুয়েটে ভর্তি হয়েছে, পাস করেছে, শিক্ষক হয়েছে, কিন্তু এত বছর ধরে সমস্যা সমাধানে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছে ঠিকই। এ থেকে সম্ভবত তার পার্থিব কোনো উন্নতি হয়নি, তবে মেধার বিকাশ হয়েছে নিশ্চয়ই।
২০০২ সালের ২৬ জানুয়ারি কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনের মিলনায়তনে ছোট করে প্রথম গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনে অর্থায়ন করে। প্রথম আলোয় শুরু করে আয়োজন ও প্রচার। ২০০৪ সালে মুনির হাসান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে; বাংলাদেশ সদস্যপদও লাভ করে। ২০০৫ সাল থেকে আমরা এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে আসছি।
প্রথম জাতীয় গণিত উৎসব আয়োজিত হয় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি। এর সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক গৌরাঙ্গ দেব রায়। সদ্য প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যার ছিলেন গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি। গণিত অলিম্পিয়াডের কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার জন্য এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বই প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের জন্য বয়সের বাধ্যবাধকতা নিচের দিক থেকে নেই, তবু সাধারণত নবম গ্রেড থেকে ছাত্ররা অংশ নেয়। চিন্তাভাবনা করে দেশে গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য চারটি গ্রুপ করা হলো। প্রাইমারি—তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি, জুনিয়র—ষষ্ঠ থেকে অষ্টম, সেকেন্ডারি—নবম-দশম এবং হায়ার সেকেন্ডারি—একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি। বাংলাদেশে গণিত অলিম্পিয়াড এখন আর শুধু শিক্ষার্থীদের প্রিয় অনুষ্ঠান নয়, শিক্ষক এবং অভিভাবকেরাও তাঁদের উপস্থিতি দিয়ে গণিত উৎসবকে প্রাণবন্ত করে রেখেছেন। এই উৎসবের জনপ্রিয়তা দিন দিন আরও বাড়ছে।
২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে গণিত অলিম্পিয়াডে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩১৯টি। এতে অংশ নিয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী। ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক আঞ্চলিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে, ৬৭টি। এতে অংশ নিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী। গত দুবছর কোভিড-১৯–এর জন্য গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইনে। এতে আঞ্চলিক পর্বে অংশ নিয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ জন। সংখ্যাটা যে অনেক বেড়েছে, তা এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের দিকে যদি তাকাই, ২০০৫ সাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১টি স্বর্ণপদক, ৭টি রৌপ্য ও ৩১টি ব্রোঞ্জপদক এবং ৩৩টি সম্মানসূচক স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০০৯ সালে প্রথম ব্রোঞ্জপদক, ২০১২ সালে প্রথম রৌপ্যপদক এবং ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রথম স্বর্ণপদক আসে আমাদের দেশে। আমাদের সবচেয়ে ভালো র্যাঙ্ক ২৬ (২০১৭ সালে), সেবার ভারতের র্যাঙ্ক ছিল ৫২। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ভালো ফলের জন্য আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগও পাচ্ছে। ২০০৭ সালে টোকিও ও ক্যালটেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। ২০০৯ সালে এমআইটি ও কেমব্রিজে এবং ২০১০ সালে ভর্তি হয়েছে হার্ভার্ডে।
গণিত অলিম্পিয়াডের সাড়া জাগানো সাফল্যের নেপথ্যে এবং সামনে রয়েছেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর মতো মহীরুহ। তাঁর জন্যই ভগ্ন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা নিশ্চিন্তে গণিত অলিম্পিয়াডের নানা কর্মকাণ্ড করতে পেরেছি। অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অতুলনীয় জনপ্রিয়তা আকৃষ্ট করেছে শিক্ষার্থী থেকে অভিভাবকদেরও। ড. মাহবুব মজুমদারের মতো দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত মানুষের প্রশিক্ষণের ফলে তুলনামূলকভাবে দুর্বল শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হয়ে এসেও আমাদের ছেলেমেয়েরা এতগুলো পদক পেয়েছে।
গণিত অলিম্পিয়াডের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখন আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াড, ফিজিকস অলিম্পিয়াড, জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডেও অংশগ্রহণ করছে এবং পদক পাচ্ছে। অবশ্য একথা মনে রাখতে হবে, যে অলিম্পিয়াডগুলোতে আমাদের অর্জন দিয়ে স্কুল-কলেজের পড়ালেখার মান অনুমান করা যাবে না। আমাদের শিক্ষার মান বাড়াতে আরও তৎপর হতে হবে। যে দেশে জনঘনত্ব সব দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, দেশের অনেক মানুষ দরিদ্র, এই বিশ্বায়নের পৃথিবীতে তাদের টিকে থাকতে হলে শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বিকল্প নেই বিশ্বমানের শিক্ষার।
আশা করি, অলিম্পিয়াড ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মেধাবীরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে, আমরা আরও আত্মবিশ্বাসী হব, আরও দক্ষ হব, দেশের অর্থ বিশেষজ্ঞদের নামে পাচার করা হবে না, বড় বড় স্থাপনা তৈরি করবেন আমাদের দেশি বিশেষজ্ঞরা। জাতি হিসেবে আমরা আত্মবিশ্বাসী ও আত্মসম্মানবোধে বলীয়ান হব, এটাই আমার প্রত্যাশা।
শুরু:২০০২ সাল
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে
প্রথম অংশগ্রহণ:২০০৫ সাল
প্রথম পদক:২০০৯ সাল
সম্মানসূচক স্বীকৃতি:২০০৬
প্রথম ব্রোঞ্জপদক:২০০৯ সাল
প্রথম রৌপ্যপদক:২০১২ সাল
প্রথম স্বর্ণপদক:২০১৮ সাল
মোট স্বর্ণপদক:১টি
মোট রৌপ্যপদক:৭টি
প্রথম ব্রোঞ্জপদক:৩১টি
●মোহাম্মদ কায়কোবাদ:সদস্য বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি; অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় | null |
0y3zie5dww | বর্তমান সময়ের ফুটবলে সবচেয়ে ভয়ংকর ত্রয়ী কারা, এমন প্রশ্ন এলে সবার আগে আসবে লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের নাম। তবে এই তিন ফুটবলারের মধ্যেও কিন্তু তুলনা চলে। কে এগিয়ে তা নিয়ে বিতর্ক হয়। সে বিতর্কে কেউ থাকেন নেইমার, মেসির পক্ষে, আবার কেউ থাকেন এমবাপ্পের পক্ষে। নেইমার আর মেসির ক্যারিয়ার আছে সায়াহ্নে। অন্যদিকে এমবাপ্পের ক্যারিয়ারের এখনো অনেক বাকি। এরই মধ্যে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপও জিতেছেন এই ফুটবলার।
অন্যদিকে মেসি ও নেইমার বিশ্বকাপ জিততে পারেননি, জিতেছেন ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ শিরোপা চ্যাম্পিয়নস লিগ। এমবাপ্পে আবার এখনো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারেননি। ফুটবলে শিরোপা, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় থাকে। দানি আলভেজ সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই এমবাপ্পের তুলনায় মেসি ও নেইমারকেই এগিয়ে রাখছেন। যদিও দানি আলভেজের চোখে এই তিন স্ট্রাইকারই ফেনোমেনন (বড় তারকা)।
একসময় ‘এল ফেনোমেনন’ তকমাটা নিজের করে নিয়েছিলেন ব্রাজিলের রোনালদো নাজারিও। প্রতিপক্ষের গোল সীমানায় তাঁর ক্ষিপ্রতা আর দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ের কারণে তাঁকে এই নামেই ডাকা হতো। মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের সঙ্গে পরে জুড়ে দেওয়া হয়েছে এই তকমা।
দানি আলভেস মনে করেন এমবাপ্পেও ফেনোমেনন হলেও ঠিক মেসি আর নেইমারের পর্যায়ে তিনি নন, ‘এমবাপ্পে একজন ফোনোমেনন (তারকা), তবে সে ঠিক মেসি আর নেইমারের পর্যায়ের না। এমবাপ্পে যদি নেইমার ও মেসিকে বল দেয়, তাহলে সে ১৫০টা গোল করতে পারবে।’
নেইমার-মেসি-এমবাপ্পে তিনজনের সঙ্গেই খেলেছেন আলভেজ। কাছ থেকেই এই তিন ফুটবলারকে দেখেছেন তিনি।
সেই দেখা থেকেও মেসি-নেইমারকে এগিয়ে রাখছেন আলভেজ, ‘নেইমার ও মেসি অন্য রকম। তারা এমন কিছু করতে পারে, যা অন্য কেউ পারে না। গ্রেট ফুটবলারদের সতীর্থদের সম্পর্কে জানতে হবে, তাদের সামর্থ্য সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে। যখন আমি মেসির সঙ্গে খেলেছি, তখন মেসিকেই বল দিতাম, নেইমারের বেলাতেও ঠিক তা-ই করতাম। | 5,190 |
ID_20560 | সিওরলি ইউ আর জোকিং, মি. ফাইনম্যান!
সিওরলি ইউ আর জোকিং, মি. ফাইনম্যান! নোবেল বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানের স্মৃতিচারণের ওপর ভিত্তি করে সম্পাদিত রচনা সংগ্রহ। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত এই বইটিতে ফাইনম্যানের জীবনের নান দিক উঠে এসেছে। বইটির কিছু অংশ হালকা মেজাজের যেমন সেফক্রাকিং এ তার আগ্রহ, বঙ্গোবাদন ও ছবি আঁকা ইত্যাদি; আবার ম্যানহাটন প্রজেক্ট, পদার্থবিজ্ঞানে তার কাজ নিয়ে নানা বিষয়ও এতে স্থান পেয়েছে। পুরো বইটিতেই ফাইনম্যানের অনবদ্য সেন্স অফ হিউমারের ছাপ রয়েছে।
| null |
Subsets and Splits